রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে দলীয় কর্মীদের সঙ্গে পুলিশের ব্যাপক সংঘর্ষ হয়েছে। এ সময় গুলিতে নিহত হয়েছেন মকবুল হোসেন নামে এক ব্যক্তি। আহত হয়েছেন অন্তত ১৮ জন। বিএনপি কার্যালয় থেকে ২০ নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
বুধবার বিকেলে এ সংঘর্ষের পর পুরো এলাকায় তৈরি হয় থমথমে পরিবেশ।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, দুই পাশের রাস্তা ধরে পুলিশ হঠাৎ বাঁশি বাজিয়ে টিয়ার শেল ছুড়ে বিএনপির কার্যালয়ের সামনে অবস্থান করা নেতা-কর্মীদের দিকে এগিয়ে আসে। এ পর্যায়ে দলটির নেতা-কর্মীরা পিছু হটেন। মূল সড়কের পাশের অলি-গলিতেও লাঠিপেটা করে পুলিশ।
এর আগে দুপুর ১২টার দিকে নয়াপল্টন এলাকায় একাধিক সাঁজোয়া যান, প্রিজন ভ্যান ও পুলিশের অতিরিক্ত স্ট্রাইকিং ফোর্স মোতায়েন করা হয়।
ঘটনাস্থল থেকে নিউজবাংলার জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক আশিক হোসেন জানান, পুরো এলাকায় পুলিশকে টিয়ার শেল ছুড়তে দেখা গেছে। টিয়ার শেলের তীব্র ঝাঁঝে নিঃশ্বাস নেয়া কঠিন হয়ে যায়।
বিএনপির কার্যালয়ে কিছু নেতা-কর্মী আটকা পড়েন বলে জানান সাইফুল ইসলাম নামের দলটির এক কর্মী।
তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমিও ভেতরে আটকা আছি; রিজভী সাহেবও। পুলিশের ছোড়া টিয়ার শেল ও সাউন্ড গ্রেনেডের ধোঁয়া ভেতরে প্রবেশ করায় শ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছে।’
কার্যালয়ে আছেন জানিয়ে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘তিতুমীর কলেজের ছাত্রদলের কিছু নেতা গুলিবিদ্ধ হয়েছেন।তাদের শরীর থেকে ব্যাপক রক্তক্ষরণ হচ্ছে।
‘তারা নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অবরুদ্ধ, হাসপাতালে নেয়ার জন্য অ্যাম্বুলেন্সে খবর দেয়া হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘যত হামলা করা হোক, আগামী ১০ ডিসেম্বর নয়াপল্টনে বিএনপির শান্তিপূর্ণ সমাবেশ হবে। সরকারের উচ্চপর্যায়ের নির্দেশে বিএনপির নিরীহ নেতা-কর্মীদের ওপর পুলিশের এই গুলি সম্পূর্ণ পরিকল্পিতভাবে।’
১০ ডিসেম্বর বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশ সামনে রেখে বুধবার স্বাভাবিক দিনের তুলনায় দলটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের নেতা-কর্মীদের জটলা বেশি ছিল।
এর আগে মির্জা আব্বাস সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন। তার সঙ্গে অনেক নেতা-কর্মী নয়াপল্টনে সমবেত হন।
পুলিশের অ্যাকশনের পর নয়াপল্টন এলাকায় সোয়াট সদস্যদেরও দেখা গেছে।
ডিএমপির মতিঝিল বিভাগের উপকমিশনার হায়াতুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, ‘১০ তারিখের সমাবেশের এখনও চার-পাঁচ দিন বাকি আছে, কিন্তু বিএনপির নেতা-কর্মীরা আজকে নয়াপল্টনে রাস্তা বন্ধ করে মিছিল-মিটিং শুরু করেছিল।
‘আমরা তাদের এসব বন্ধ করতে বলায় তারা পুলিশের ওপর হামলা করে। এরপর আমরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ব্যবস্থা নিয়েছি। বিএনপি কর্মীদের চারপাশ থেকে হামলার কারণে বাড়তি ফোর্স আনিয়েছি। বাড়তি সতর্কতার জন্য সোয়াট সদস্যরাও ঘটনাস্থলে এসেছেন।’