ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে প্রাইভেট কারের নিচে ফেলে টেনেহিঁচড়ে নেয়া নারী নিহত হওয়ার ঘটনায় মামলা করা হয়েছে।
রুবিনা আক্তারের ভাই জাকির হোসেন বাদী হয়ে শুক্রবার রাতে শাহবাগ থানায় মামলাটি করেন।
সড়ক পরিবহন আইনের ৯৮ ও ১০৫ ধারায় মামলা হয়েছে জানিয়ে শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নূর মোহাম্মদ বলেন, প্রাইভেট কারের চালক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষক আজহার জাফর শাহকে মামলায় আসামি করা হয়েছে, যিনি ঢাকা মেডিক্যালে চিকিৎসাধীন। সুস্থ হলে তাকে আদালতে হাজির করা হবে।
কী ঘটেছিল
প্রতি সপ্তাহে রাজধানীর তেজকুনিপাড়ার বাসা থেকে হাজারীবাগে যেতেন গৃহবধূ রুবিনা আক্তার। অন্যান্য সপ্তাহের মতো শুক্রবার ননদের স্বামীর মোটরসাইকেলে চড়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় হয়ে হাজারীবাগ যাচ্ছিলেন তিনি।
বিকেল সোয়া ৩টার দিকে চারুকলা অনুষদের বিপরীতে পাশের রাস্তা ধরে যাওয়ার সময় একটি প্রাইভেট কারের ধাক্কায় পড়ে যান রুবিনা। চালক গাড়ি না থামিয়ে দ্রুতগতিতে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন বলে অভিযোগ পাওয়া যায়।
এ অবস্থায় টিএসসি, ভিসি চত্বর হয়ে মুক্তি ও গণতন্ত্র তোরণের কাছাকাছি পর্যন্ত রুবিনাকে টেনেহিঁচড়ে নিয়ে যায় গাড়িটি।
এরপর লোকজন গাড়িটি আটকে নিচ থেকে রুবিনাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। কিছুক্ষণের মধ্যে চিকিৎসক তাকে মৃত বলে জানান।
গাড়িচালক আজহার জাফর শাহকে মারধর করেন পথচারীরা। শাহবাগ থানার পুলিশ পরে জানতে পারে, আজহার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের সাবেক সহযোগী অধ্যাপক। আহত অবস্থায় তাকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
‘এটা হত্যাকাণ্ড’
রুবিনার মৃত্যুকে ‘হত্যাকাণ্ড’ উল্লেখ করে পুলিশের রমনা বিভাগের উপকমিশনার মো. শহিদুল্লাহ বলেন, ‘এটা অবশ্যই একটি হত্যাকাণ্ড।’
তিনি বলেন, ‘আমরা জানতে পেরেছি, নিহত মহিলা দেবরের সঙ্গে বাইকে করে শ্বশুরবাড়ি থেকে তার বাপের বাড়ি হাজারীবাগে যাচ্ছিলেন। পথিমধ্যে তারা যখন শাহবাগ থেকে টিএসসির আগে কাজী নজরুলের মাজারের উল্টো দিকের রাস্তায় পৌঁছান, তখন প্রাইভেট কারটি মোটরসাইকেলে ধাক্কা দিলে তিনি পড়ে প্রাইভেট কারের সঙ্গে আটকে যান।
‘এরপরও উনি গাড়িটি না থামিয়ে টেনেহিঁচড়ে চলে যান। তাকে থামানোর অনেক চেষ্টা করা হয়। উনি টিএসসি পৌঁছালে আমাদের মোবাইল টিমও তাকে থামানোর চেষ্টা করে। তার পরও উনি না থামিয়ে আরও জোরে গাড়ি চালিয়ে নীলক্ষেত মোড়ে গেলে উত্তেজিত জনতা তাকে থামতে বাধ্য করে। এই সম্পূর্ণ সময় সেই নারীটি গাড়ির সঙ্গে ছেঁচড়ে গেছেন।’