ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে নারীকে প্রাইভেট কারের নিচে ফেলে টিএসসি থেকে নীলক্ষেত পর্যন্ত টেনে-হিঁচড়ে নিয়ে যাওয়ার ঘটনাকে হত্যাকাণ্ড বলে উল্লেখ করেছে পুলিশ।
এ ঘটনায় মামলা হবে জানিয়ে রমনা বিভাগের ডিসি শহীদুল্লাহ বলেন, ‘এটি অবশ্যই একটি হত্যাকাণ্ড।’
শুক্রবার রাতে শাহবাগ থানায় সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
ডিসি শহীদুল্লাহ্ বলেন, ‘আমরা জানতে পেরেছি, ওই নারী দেবরের সঙ্গে মোটরসাইকেলে করে শ্বশুরবাড়ি থেকে বাবার বাড়ি হাজারীবাগে যাচ্ছিলেন। তারা যখন শাহবাগ থেকে টিএসসির আগে কাজী নজরুলের মাজারের উল্টো দিকের রাস্তায় পৌঁছান, তখন প্রাইভেট কারটি মোটরসাইকেলে ধাক্কা দেয়। এতে ওই নারী সড়কে পড়ে যান ও প্রাইভেট কারের সঙ্গে আটকে যান।
‘তবে চালক গাড়িটি না থামিয়ে টেনে-হিঁচড়ে তাকে নিয়ে যান। অনেক চেষ্টা করেও তাকে থামানো যায়নি। উনি টিএসসি পৌঁছালে আমাদের মোবাইল টিমও তাকে থামানোর চেষ্টা করে। তারপরও উনি গাড়ি না থামিয়ে নীলক্ষেত মোড়ের দিকে চলে যান। পরে উত্তেজিত জনতা তাকে থামায়।’
তিনি বলেন, ‘গাড়ির চালক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষক। উত্তেজিত জনতার পিটুনিতে তার অবস্থাও সঙ্কটাপন্ন।’
ডিসি আরও বলেন, ‘যেহেতু এটা মর্মান্তিক মৃত্যুর ঘটনা, তাই আমরা একটা মামলা নেব। গাড়িটি জব্দ করা হয়েছে। আমরা আইনগত ব্যবস্থা নিচ্ছি।’
মামলার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘সড়ক আইন অনুযায়ী রেকলেস ড্রাইভিংয়ে মৃত্যু ঘটনার শাস্তির বিধান আছে। এই আইনে তার যাতে সর্বোচ্চ শাস্তি হয়, সেটি আমরা চেষ্টা করব।’
তিনি আরও বলেন, ‘ঘটনার পর আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ওই শিক্ষকের স্বজনদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেছি। একটা নম্বর পেয়েছি। তবে ঘটনা জানাতে যোগাযোগের পর থেকে মোবাইল ফোন নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যাচ্ছে। তাদের কারও সঙ্গে যোগাযোগের সুযোগ পেলে সাবেক ওই শিক্ষক সুস্থ নাকি অসুস্থ ছিলেন সে বিষয়ে জানা যেত।’
নিহতদের পক্ষে এখন পর্যন্ত কেউ মামলা করতে আসেননি জানিয়ে ডিসি শহীদুল্লাহ্ বলেন, ‘উনারা হয়তো ব্যস্ত আছেন। কিছুক্ষণ পর আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করবেন।’
এ বিষয়ে দুর্ঘটনার শিকার নারীর পরিবারকে সর্বোচ্চ আইনগত সহযোগিতা দেয়া হবে বলে জানান তিনি।
দুর্ঘটনায় প্রাণ হারানো নারী রুবিনা আক্তার তিনি গৃহবধূ ছিলেন। থাকতেন তেজগাঁওয়ে। তার ১২ বছরের একটি ছেলে আছে। দুই বছর আগে তার স্বামী মারা গেছেন।
অন্যদিকে গাড়িচালক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের সাবেক সহযোগী অধ্যাপক আজাহার জাফর শাহ।