বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বিএনপির সমালোচনা করে বলেছেন, ‘যদি আইন করে মিথ্যাচার নিষিদ্ধ করা হয়, তাহলে বিএনপির কোনো অস্তিত্ব থাকবে না।’
আরও বলেন, ‘এরা ভোট চুরি করেছে, ভুয়া ভোটার তৈরি করেছে। অর্থ পাচার করে মুচলেকা দিয়ে তাদের নেতা লন্ডনে চলে গেছে। সেখানে বসে বসে মাঝেমাঝে হুংকার দেয়। আওয়ামী লীগ এসব হুংকারে ভয় পায় না। আর বাংলাদেশের মানুষও এমন নেতাকে মানে না।’
মঙ্গলবার বিকেলে নেত্রকোণা জেলা আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন কাদের।
তিনি বলেন, ‘খেলা হবে। আন্দোলনে খেলা হবে। নির্বাচনে খেলা হবে। মোকাবিলায় খেলা হবে। হাওয়া ভবনের বিরুদ্ধে খেলা হবে। সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ ও সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে খেলা হবে।
‘যারা সন্ত্রাস করে আওয়ামী লীগের ২১ হাজার নেতা-কর্মীকে হত্যা করেছে, হাজারো মায়ের কোল খালি করেছে, অগণিত স্ত্রীদের স্বামীহারা করেছে, বোনদের ভাইহারা করেছে, তাদের কোনো ক্ষমা নেই।’
আগামী ১০ ডিসেম্বর রাজধানীতে বিএনপির সম্ভাব্য সমাবেশের বিষয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আক্রমণ না করলে কোনো পাল্টা আক্রমণ করা হবে না। কিন্তু যদি আক্রমণের মতলব থাকে, তবে খবর আছে।’
এ সময় দেশের জনসাধারণকে আতঙ্কিত না হবার পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা জনগণের পাশে আছি। জনগণকে নিয়েই আমরা এদের প্রতিহত করব।’
শেখ হাসিনার সরকারের সাফল্য তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘বর্তমান সময়ে বিশ্বের বহু দেশে দুর্ভিক্ষের পদধ্বনি শোনা যাচ্ছে। কিন্তু সে তুলনায় আমরা বাংলাদেশের জনগণ অনেক ভালো আছি। শেখ হাসিনা ভালো থাকলে বাংলাদেশ ভালো থাকে।’
সম্মেলনের দ্বিতীয় অধিবেশনে নেত্রকোণা জেলা আওয়ামী লীগের আংশিক নতুন কমিটি ঘোষণা করেন ওবায়দুল কাদের। কমিটিতে অ্যাডভোকেট আমীরুল ইসলামকে সভাপতি এবং অ্যাডভোকেট শামছুর রহমান লিটনকে (ভিপি লিটন) সাধারণ সম্পাদক করা হয়।
নেত্রকোণা জেলা আওয়ামী লীগের নতুন সভাপতি অ্যাডভোকেট আমীরুল ইসলাম (বাঁয়ে) ও সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট শামছুর রহমান লিটনকে (ভিপি লিটন)
নেত্রকোণা জেলা আওয়ামী লীগের বিদায়ী সভাপতি মতিয়র রহমান খানের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক সমাজকল্যাণ প্রতিমন্ত্রী বীর মুক্তিযোদ্ধা আশরাফ আলী খান খসরুর পরিচালনায় সম্মেলনের প্রথম অধিবেশনে আরও বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক এমপি, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি এমপি, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল, সাংস্কৃতিক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল এমপি, দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, কেন্দ্রীয় সদস্য মারুফা আক্তার পপি, উপাধ্যক্ষ রেমন্ড আরেং, ওয়ারেসাত হোসেন বেলাল বীর প্রতীক এমপি, হাবিবা রহমান খান শেফালী এমপিসহ অনেকেই।
সম্মেলনে কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘বিএনপি যতই বলুক না কেন, পৃথিবীর কোনো শক্তিই আওয়ামী লীগকে রাজনৈতিকভাবে পরাজিত ও ক্ষমতাচ্যুত করতে পারবে না। বিএনপির শাসনামলে গণতন্ত্র ছিল বিপন্ন। অর্থনীতি ছিল ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে। তারা আওয়ামী লীগের অসংখ্য নেতা-কর্মী ও বহু হিন্দু পরিবারের ধনসম্পদ লুণ্ঠন করেছে, বাড়িতে আগুন দিয়েছে, অত্যাচার করেছে।’
শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি এমপি বলেন, ‘তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থাকে বিএনপি ধ্বংস করে দিয়ে গেছে। সে পদ্ধতিতে আর নির্বাচনের সুযোগ নেই। সারা বিশ্বে যে পদ্ধতিতে নির্বাচন হয়, সে পদ্ধতিতেই দেশের সংবিধান অনুসারে বাংলাদেশের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। '৭১, '৭৫ এবং ২১ আগস্টের খুনিদের আর বাংলার মাটিতে ঠাঁই হবে না।