চট্টগ্রামের উন্নয়নে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অনেক বড় অবদান রয়েছে জানিয়ে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, এ অঞ্চলের প্রতি মায়াবী টান আছে সরকারপ্রধানের।
শনিবার কর্ণফুলী নদীর তলদেশে নির্মিত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেলের দক্ষিণ টিউবের পূর্তকাজ সমাপ্তি উদযাপন অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
কাদের বলেন, ‘এখানে অনেক কিছুর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছি। নেত্রী উদ্বোধন করেছেন। চট্টগ্রামের প্রতি প্রধানমন্ত্রীর একটা মায়াবী টান আছে। ওদিকে উনার একটা খুব বেশি মায়াবী টান আছে চট্টগ্রামের ব্যাপারে। এম এ আজিজ, মহিউদ্দিন আহমেদ (সাবেক মেয়র); তারা ছিলেন। তাদের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর একটা ভালো সম্পর্ক ছিল।’
তিনি বলেন, ‘মহিউদ্দিন ভাই আমাদের মাঝে নাই। উনাকে দেখতে পেলে ভালো লাগত।’
বক্তব্যে বিশ্বব্যাংক বাংলাদেশের প্রশংসা করছে জানিয়ে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘বিশ্বব্যাংক পদ্মা সেতু থেকে সরে গেছে। এখন তারাই বলে বাংলাদেশ দারিদ্র্য দূরীকরণে একটা আশ্চর্যজনক উদাহরণ। তারা বিশ্বকে উন্নয়নে চমকে দিয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘এটি একটি ঐতিহাসিক মুহূর্ত। আজকে দক্ষিণ এশিয়ার নদীর তলদেশে এটাই প্রথম সেতু। সেই টানেল হচ্ছ। এটা হবে সাংহাইয়ের মতো; ওয়ান সিটু টু টাউনের আদলে।
‘এপারেও থাকবে একটা টাউন, ওপারেও থাকবে আর একটা টাউন। দুই পারেই দুই টাউন। এটা একটা আমি সাংহাইতে দেখি এসেছি। কী অপূর্ব সুন্দর!’
বঙ্গবন্ধু টানেল নিয়ে কাদের বলেন, ‘এটার দুটি টিউব। আনোয়ারা থেকে চট্টগ্রাম শহরের এই প্রান্তেরটার কাজ শেষ হয়েছে। যেটা চট্টগ্রাম শহর থেকে ওই প্রান্তে আনোয়ারাতে যাবে সেটাও শেষের পথে। আনুষঙ্গিক কিছু কাজ, নিরাপত্তাজনিত ব্যবস্থাপনা বাকি রয়েছে।
‘সব মিলিয়ে আশা করি পদ্মা সেতুর পর ঐতিহাসিক এই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কর্ণফুলী টানেলের উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।’
তিনি বলেন, ‘চট্টগ্রামবাসীর সৌভাগ্য। চট্টগ্রামেও মেট্রোরেল হবে। ফিজিবিলিটি টেস্ট হচ্ছে। ঢাকা-চট্টগ্রাম যে ফোর লেন রয়েছে, এই ফোর লেনে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে অচিরেই দুটি সার্ভিস পাস করেছি। এটা ছিল না। এখন আমরা কাজ শুরু করছি।
‘এরপর হচ্ছে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার ও মাতারবাড়ী। আমি জাপানিজ অ্যাম্বাসেডরকে বলেছি। আমাদের প্রিন্সিপাল সেক্রেটারি সেখানে গিয়েছিলেন। আমি আশা করছি জাইকা অচিরেই চট্টগ্রাম-কক্সবাজার সেতু নির্মাণকাজ শুরু করতে প্রয়োজনীয় ফান্ডিং নেবে, এটা আমরা আশা করে আছি। চট্টগ্রামে কিছু বাকি নাই। কক্সবাজার ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্টে হয়ে গেছে। প্রধানমন্ত্রী সেই অনুযায়ী কাজ করে যাচ্ছেন।’
কাদের বলেন, ‘আপনারা অনেক কিছু পেয়েছেন। মেট্রোরেল হলে তো হয়েই যাবে। পাহাড়ে আজকে আমাদের সীমান্তসেনা রয়েছে; তারা লড়ছে। ১৪ বছর আগের পাহাড় আর এখন ২০২২ সালের পাহাড়; তার মধ্যে চট্টগ্রাম, বান্দরবান, খাগড়াছড়ি, রাঙ্গামাটি কোনোকিছুই চেনা যায় না।’
সারা দেশে উন্নয়ন হচ্ছে জানিয়ে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘আজকে সারা দেশ সত্যিকার অর্থে উন্নয়নের জোয়ারে ভাসছে। সজীব ওয়াজেদ জয়ের সহযোগিতায় আমরা ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়েছি। আমাদের আগামী দিনের লক্ষ্য স্মার্ট বাংলাদেশ।
‘নেক্সট টার্গেট, নেক্সট ডেস্টিনেশন স্মার্ট বাংলাদেশ। আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে অনুরোধ করব আমরা এবার ইলেকশন মেনিফেস্টোতে (ইশতেহার) স্মার্ট বাংলাদেশ রাখার কথা বলব।’
বক্তব্যের সময় সম্প্রতি ১০০ সেতু উদ্বোধনের কথা জানান কাদের। ওই সময় পাশ থেকে প্রধানমন্ত্রী জানান, এসব সেতুর মধ্যে চট্টগ্রামেই রয়েছে ৪৫টি। এ ছাড়া খাগড়াছড়ির ৪২টি সেতু রয়েছে।