পোশাকশ্রমিক নেত্রকোণার কমলা খাতুনকে হত্যার রহস্য উদঘাটনের দাবি করেছে র্যাব। এ ঘটনার মূল হোতা হিসেবে নিজাম নামে এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তারও করেছে এ বাহিনী।
গাজীপুরের মীরেরবাজার এলাকা থেকে সোমবার ভোরে র্যাব-১৪-এর সদস্যরা নিজামকে গ্রেপ্তার করে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তিনি কমলা খাতুনকে হত্যার কথা স্বীকার করেছেন।
গ্রেপ্তার হওয়া নিজাম নেত্রকোণার পূর্বধলা উপজেলার আগিয়া ইউনিয়নের চান মিয়ার ছেলে। বয়স আনুমানিক ৩০ বছর। আর নিহত কমলা খাতুন পার্শ্ববর্তী দুর্গাপুর উপজেলার কাকৈরগড়া ইউনিয়নের রাত্রা গ্রামের মাহতাব উদ্দিনের মেয়ে। তার বয়স প্রায় ২৬ বছর।
নিজাম ও কমলা দুজনই গাজীপুরের একটি পোশাক কারখানায় কাজ করতেন।
র্যাব-১৪-এর অধিনায়ক (অতিরিক্ত ডিআইজি) মহিবুল ইসলাম খান সোমবার দুপুরে নেত্রকোণা জেলা প্রেস ক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য নিশ্চিত করেন। এ সময় র্যাবের মিডিয়া অফিসার (সিনিয়র সহকারী পরিচালক) আনোয়ার হোসেনও উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে গত শনিবার সকালে পূর্বধলা উপজেলার খলিশাউড় ইউনিয়নের বালুচরা বাজারসংলগ্ন তালতলা এলাকার একটি কলাবাগান থেকে অজ্ঞাত হিসেবে কমলার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। পরে প্রযুক্তির সহায়তায় তার পরিচয় শনাক্ত করা হয়।
প্রেস ব্রিফিংয়ে র্যাব-১৪-এর অধিনায়ক জানান, একসঙ্গে পোশাক কারখানায় কাজ করতে গিয়ে প্রায় চার মাস আগে নিজাম ও কমলার মধ্যে পরিচয় হয়। পরে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে।
একপর্যায়ে নিজাম কমলাকে বিয়ে করার প্রস্তাব দেন। কিন্তু নিজামের স্ত্রী-সন্তান থাকায় কমলা এতে অস্বীকৃতি জানান। এতে নিজাম ক্ষুব্ধ হন এবং কমলাকে হত্যার পরিকল্পনা করেন।
পরিকল্পনা অনুয়ায়ী, গত শুক্রবার বিকেলে গ্রামের বাড়িতে পৌঁছে দেয়ার কথা বলে কমলাকে নিয়ে গাজীপুর থেকে নেত্রকোণার দুর্গাপুরের উদ্দেশে রওনা হন নিজাম। এ সময় ব্যাগে কাপড়ে মুড়িয়ে একটি দা সঙ্গে রাখেন নিজাম।
পথে পূর্বধলা উপজেলার বালুচরা বাজারসংলগ্ন তালতলা এলাকায় পৌঁছার পর কমলাকে জোর করে গাড়ি থেকে নামান নিজাম। এ সময় কমলা চিৎকার করতে চাইলে তার গলা চেপে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেন তিনি। পরে মৃত্যু নিশ্চিত করতে তার পেটেও দা দিয়ে আঘাত করেন। এতে কমলার পেট থেকে নাড়িভুঁড়ি বেরিয়ে আসে।
কমলার মৃত্যু হয়েছে নিশ্চিত হয়ে নিজাম আবার গাজীপুরে চলে যান এবং গা-ঢাকা দেন।
র্যাব-১৪-এর মিডিয়া অফিসার (সিনিয়র সহকারী পরিচালক) আনোয়ার হোসেন জানান, গ্রেপ্তার হওয়া নিজামকে সোমবার বিকেলে পূর্বধলা থানার পুলিশের কাছে সোপর্দ করা হয়েছে।
পূর্বধলা থানার ওসি সাইফুল ইসলাম বলেন, মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় কমলার বড় ভাই অজ্ঞাত আসামির বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা করেছিলেন। নিজামকে ওই মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে তোলা হবে।