আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদককে ২০১৪ ও ২০১৮ সালের জাতীয় নির্বাচন ভুলে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন বিএনপি নেতা আমান উল্লাহ আমান। বলেছেন, দলীয় সরকারের অধীনে আর কোনো নির্বাচন হবে না। এবার ভোট হবে তত্ত্বাবধায়কের অধীনে।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ৫৮তম জন্মদিন পালনে সোমবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক দোয়া দোয়া ও আলোচনায় তিনি এ কথা বলেন। জিয়া প্রজন্ম দল নামে একটি সংগঠন এর আয়োজন করে।
বিএনপি নেতা বলেন, ‘বিএনপি ৬ সিট পাবে, জাতীয় পার্টি ৩০ সিট পাবে, এই ধরনের নির্বাচন বাংলাদেশে আর হতে দেয়া হবে না। জনগণ ভোট দেবে। সেই ভোটে যে নির্বাচিত হবে তারা সরকার গঠন করবে। কিন্তু এভাবে ঘোষণা দিয়ে নির্বাচন করবেন এই পরিস্থিতি বাংলাদেশে আর নেই।’
আদালতের আদেশে নির্বাচনকালীন নির্দলীয় সরকারব্যবস্থা বাতিল হওয়ার পরে ২০১৪ সালের দশম সংসদ নির্বাচনে না গিয়ে বিএনপি ও তার শরিকরা যায় আন্দোলনে। কিন্তু নির্বাচন ঠেকানোর আন্দোলন ব্যর্থ হয়।
২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে আন্দোলনে যাওয়ার ঘোষণা দিলেও পরে ভোটে আসে তারা। বিএনপি ও তার জোটের শরিকরা মিলিয়ে আসন পায় সাতটি।
আগামী জাতীয় নির্বাচনের আগে আগে বিএনপি ২০১৩ সালের দাবিতে ফিরে গেছে। বলছে, তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া কোনো নির্বাচন হবে না, হতে দেয়া হবেও না।
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের উদ্দেশে আমান বলেন, ‘ভুলে যান ওবায়দুল কাদের সাহেব; ২০১৪ ও ২০১৮ এক নয়। বাংলাদেশে শেখ হাসিনার অধীনে কোনো নির্বাচন হবে না। প্রয়োজনে হাজার হাজার মানুষ রক্ত দেবে, প্রাণ দেবে। কিন্তু এদেশে এই জালিম সরকারের অধীনে নির্বাচন হবে না। নির্বাচন হবে নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে। সেখানে জনগণ ভোট দেবে।
‘জনগণ তাদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করবে। সেই নির্বাচনে জনগণ যাদের ভোট দেবে তারাই সরকার গঠন করবে।’
বিএনপির আন্দোলনে বেশ কয়েকজন কর্মীর প্রাণহানি নিয়েও কথা বলেন আমান। বলেন, ‘দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে মানুষের নাভিশ্বাস উঠেছে। এই অবস্থা থেকে পরিত্রাণের জন্য মানুষ রাস্তায় নেমে এসেছে। যখনই আন্দোলন হচ্ছে নেতা কর্মীদের হত্যা করা হচ্ছে। ভোলায় ছাত্র নেতা আবদুর রহিম, নারায়ণগঞ্জে ছাত্র নেতা শাওন প্রধান, মুন্সিগঞ্জে মোহাম্মদ শাওন, নবম শ্রেণির ছাত্র অমিত হাসান অনিককে কীভাবে হত্যা করেছে দেখেছেন। গত পরশুদিন ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় লিফলেট বিতরণের সময় ছাত্রদলের সহ-সভাপতি নয়নকে নির্মমভাবে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। যার নির্দেশে এই হত্যাকাণ্ডগুলো হয়েছে, জনগণ তাদের আর এক মুহূর্তও ক্ষমতায় দেখতে চায় না।
বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিমা রহমান, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল নোমান, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক আবদুস সালামও এ সময় বক্তব্য দেন।