বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

হাইকোর্টের নির্দেশে হেমা-শ্যামের মিলন

  •    
  • ১৩ নভেম্বর, ২০২২ ২৩:১৮

আবেদনে বলা হয়, শ্যাম সুন্দরের বয়স ২২ বছর, আর হেমার বয়স ১৯ বছর। দুজনের বাড়ি রংপুরের বদরগঞ্জে। হিন্দু বিবাহ নিবন্ধন বিধিমালা ২০১৩ এর বিধি ২২(১)(ক) অনুযায়ী দুজনের বিয়ে নিবন্ধিত হয়। কিন্তু বিয়ের পরদিনই শ্যামের স্ত্রীকে তার কাছ থেকে নিয়ে যাওয়া হয়।

পরিবারের অমতে বিয়ে করায় দাম্পত্য জীবন শুরু করতে পারেননি শ্যাম সুন্দর রায় ও হেমা শর্মা। প্রায় ১০ মাস মামার বাড়িতে ‘বন্দি জীবন’ কাটাতে হয়েছে হেমাকে। আর স্ত্রীকে ফিরে পেতে শ্যাম ছুটেছেন মানবাধিকার কমিশনসহ উচ্চ আদালতে। অবশেষে রোববার হাইকোর্টের নির্দেশে মিলন ঘটেছে শ্যাম-হেমা দম্পতির।

বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি কাজী মো. ইজারুল হক আকন্দের হাইকোর্ট বেঞ্চ রোববার হেমাকে তার স্বামী শ্যামের কাছে তুলে দিতে নির্দেশ দেয়।

পুলিশ আদালতের নির্দেশ পেয়ে হেমাকে তুলে দেয় স্বামী শ্যাম সুন্দরের কাছে। স্ত্রীকে কাছে পেয়ে আদালতের প্রতি সন্তোষ প্রকাশ করেছেন শ্যাম সুন্দর রায়।

তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমি আজকে অনেক খুশি, আদালতের প্রতি কৃতজ্ঞ। আমি সকলের কাছে দোয়া চাই, আমরা যেন সুখ-শান্তিতে থাকতে পারি।’

মামলা থেকে জানা যায়, চলতি বছরের ১৩ জানুয়ারি ধর্মীয় রীতি ও বিধি মেনে বিয়ে করেন শ্যাম সুন্দর রায় ও হেমা শর্মা। এর আগে গত বছরের ২১ নভেম্বর রংপুরের নোটারি পাবলিকে এফিডেভিট সম্পন্ন করেন তারা। বিয়েতে উভয়ের সম্মতি থাকলেও পরিবার সদস্যদের ছিল অমত।

বিয়ের ঘটনা জেনে শ্যাম সুন্দর রায়ের বিরুদ্ধে মামলা দেন হেমার অভিভাবকরা। বিয়ের পরদিন পুলিশের মাধ্যমে হেমাকে নিজেদের হেফাজতে নেন মা ও মামা।

এদিকে মামার হেফাজতে থাকা হেমাকে উদ্ধারের জন্য শ্যাম ছুটতে থাকেন জাতীয় মানবাধিকার কমিশনসহ বিভিন্ন স্থানে। তাতে অগ্রগতি না হলে শ্যাম হাইকোর্টে রিট করেন।

আবেদনে বলা হয়, শ্যাম সুন্দরের বয়স ২২ বছর, আর হেমার বয়স ১৯ বছর। দুজনের বাড়ি রংপুরের বদরগঞ্জে। হিন্দু বিবাহ নিবন্ধন বিধিমালা ২০১৩ এর বিধি ২২(১)(ক) অনুযায়ী দুজনের বিয়ে নিবন্ধিত হয়। কিন্তু বিয়ের পরদিনই শ্যামের স্ত্রীকে তার কাছ থেকে নিয়ে যাওয়া হয়।

স্ত্রীর ফোন পেয়ে শ্যাম জানতে পারেন, হেমাকে তার বয়স ১৫ বছর দেখিয়ে আইন ও সালিশ কেন্দ্রে (আসক) রেখে গেছেন মামা গণেশ শর্মা। পরে সেখান থেকে ২৫ মে মামার বাড়িতে নিয়ে আটকে রাখা হয়। এরপর স্বামী-স্ত্রীর সাক্ষাৎ হয়নি।

আইনজীবি জানান, আইনানুযায়ী তারা এখন স্বামী-স্ত্রী। কেউ তাদের সম্পর্ককে অস্বীকার করতে পারে না। কিন্তু এই বিয়ে মেয়ের মা ও মামারা মেনে নিতে পারছেন না। ইতিমধ্যে হেমাকে বিদেশে পাঠাতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন তারা, ভিসাও যোগাড় করেছেন।

আইনজীবী তাজুল ইসলামের সঙ্গে শ্যাম সুন্দর রায় ও হেমা শর্মা। ছবি: নিউজবাংলা

আদালতে শ্যাম সুন্দর রায়ের পক্ষে আইনজীবী ছিলেন তাজুল ইসলাম। অন্যদিকে হেমার মায়ের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মোহাম্মদ খুররম শাহ মুরাদ।

আদালত শ্যামের রিটের শুনানি নিয়ে গত ৩১ অক্টোবর হেমাকে হাইকোর্টে হাজির করার নির্দেশ দেয়। সে নির্দেশনা অনুযায়ী রোববার বদরগঞ্জ থানা পুলিশ হেমাসহ তার পরিবারকে হাজির করে।

হেমা শর্মা আদালতকে জানান শ্যামকে স্বেচ্ছায় বিয়ে করা, মামাদের অত্যাচার ও জোর করে তাকে আটক রাখার বিষয়ে নানা তথ্য। তাকে দিয়ে স্বামীর বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা করানো হয়েছে বলেও দাবি করেন হেমা। তিনি স্বামীর কাছে ফিরে যাবার ইচ্ছা ব্যক্ত করলে আদালত হেমার মা ও মামার বক্তব্য শোনেন। এ বিষয়ে শ্যাম ও তার বাবার বক্তব্য নেয়া হয়।

সকলের বক্তব্য জেনে আদালত হেমাকে তার স্বামী শ্যামের কাছে তুলে দিতে নির্দেশ দেয়।

শ্যামের আইনজীবী তাজুল ইসলাম বলেন, ‘আদালতের আদেশে হেমার দীর্ঘ ১০ মাসের বন্দি জীবন শেষ হয়েছে। স্ত্রীকে পেতে শ্যামের আইনী লড়াইয়ের জয় হয়েছে। এই দম্পতির মিলনে ভূমিকা রাখতে পেরে স্বস্তি ও তৃপ্তি পেয়েছি।’

অন্যদিকে আইনজীবী মোহাম্মদ খুররম শাহ মুরাদ জানান, হেমার মা হাইকোর্টের এ আদেশের বিরুদ্ধে আপিলের সিদ্ধান্ত এখন পর্যন্ত নেননি। যদি পরে তিনি সিদ্ধান্ত নেন তখন আপিল করা হবে।

এ বিভাগের আরো খবর