বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

বিচারের বাণী আজ নিভৃতে কাঁদে না, সুবিচার প্রতিষ্ঠিত: প্রধান বিচারপতি

  •    
  • ৯ নভেম্বর, ২০২২ ২১:২৯

প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী বলেন, ‘মাহবুবে আলমের মতো জ্ঞানীগুণি ব্যক্তি, তার নিষ্ঠা ও কর্মপ্রয়াস আমাদের বিচারাঙ্গণকে উপকৃত করেছে। বিচার বিভাগ হয়েছে সমৃদ্ধ। তাই তো বিচারের বাণী আজ আর নিভৃতে কাঁদে না। বিচারাঙ্গণে আজ সুবিচার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। জাতির এই শ্রেষ্ঠ সন্তানকে আমরা স্মরণ করব।’

প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী বলেছেন, বিচারের বাণী আজ আর নিভৃতে কাঁদে না। সুবিচার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।

বুধবার সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি অডিটরিয়ামে প্রয়াত সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলমের স্মরণসভায় তিনি এ কথা বলেন।

প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘বিচার বিভাগের ইতিহাসে এবং আইনজীবীদের একজন হয়ে মাহবুবে আলম আমাদের মাঝে বেঁচে থাকবেন চিরকাল। তিনি যে আলোর দীপ শিখা আমাদের দান করে গেছেন, তা যুগ যুগ পর্যন্ত বয়ে নিয়ে যাবে, এটাই আমার বিশ্বাস।’

তিনি বলেন, ‘মাহবুবে আলমের মতো জ্ঞানীগুণি ব্যক্তি, তার নিষ্ঠা ও কর্মপ্রয়াস আমাদের বিচারাঙ্গণকে উপকৃত করেছে। বিচার বিভাগ হয়েছে সমৃদ্ধ। তাই তো বিচারের বাণী আজ আর নিভৃতে কাঁদে না। বিচারাঙ্গণে আজ সুবিচার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। জাতির এই শ্রেষ্ঠ সন্তানকে আমরা স্মরণ করব।’

বহু আলোচিত মামলায় ন্যায়সংগত বিচার নিশ্চিতে তার অসমান্য অবদান কখনো মুছে ফেলা যাবে না বলেও উল্লেখ করেন প্রধান বিচারপতি।

মাহবুবে আলমের দানশীলতার কথা স্মরণ করে তিনি বলেন, ‘আমার সময়ে একজন জেলা জজের চিকিৎসার জন্য তিনি দান করেছেন। এমনকি যখনই তাকে দানের বিষয়ে বলা হতো তখনই তিনি কিছু জিজ্ঞেস না করেই দান করে দিতেন।’

প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী বলেন, ‘তিনি আমাদের জীবনে অত্যন্ত আপন এবং চ্যালেঞ্জের মুহূর্তে দিয়ে গেছেন ভালোবাসা ও নির্দেশনা। তিনি যেমন আমাদের আপন ভাবতেন, আমরাও তাকে তেমনটা আপন ভাবতাম। মনে হতো তার সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক আত্মার।

‘আমরা এখনও যখন সমস্যায় ভুগি তখন মাহবুবে আলমের কথা স্মরণ করি। আসুন আমরা তার স্মৃতি আজীবন ধরে রাখি। তাকে সব সময় কৃতজ্ঞচিত্তে স্মরণ করি। তার আত্মার মাগফেরাত কামনা করি।’

সাবেক প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন প্রয়াত অ্যাটর্নি জেনারেলকে স্মরণ কর বলেন, মাহবুবে আলম সরকারের প্রত্যেকটা কাজ শতভাগ মনোযোগ দিয়ে করেছেন।

সাবেক এই প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘আমার সময়ে কোর্ট উত্তাল ছিল। সব গুরুত্বপূর্ণ মামলা আমার সময়ে হয়েছে। তখন কোর্টে যে কী একটা অবস্থা ছিল। সেই সময় মাহবুবে আলম ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল। সেই সময়ে আমরা কাজ করেছি। এখন আমি রিটায়ার্ডে (অবসর) গিয়ে ঝামেলামুক্ত হয়েছি।’

সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলমের নামে ফাউন্ডেশন করার দাবি করে আপিল বিভাগের বিচারপতি মো. নূরুজ্জামান বলেন, ‘আপনারা তাকে স্মরণে রাখতে একটা ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠা করেন। আপনারা না করলে আমি নিজেই উদ্যোগ নিয়ে করব।’

মাহবুবে আলমের সঙ্গে তার পরিচয় প্রসঙ্গ তুলে ধরে আপিল বিভাগের এ বিচারপতি বলেন, ‘১৯৭৪ সালে হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজে ছাত্র থাকাকালে মাহবুবে আলমের সঙ্গে পরিচয় হয়। তখন তিনি সেই কলেজের শিক্ষক ছিলেন।’

মাহবুবে আলম অ্যাটর্নি জেনারেল হিসেবে সরকারের জন্য যা করে গেছেন তা অতুলনীয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, এখন তার পরিবারের নিরাপত্তাসহ যাবতীয় দেখভালের জন্য সরকারের দায়িত্ব নেয়া উচিত।

তিনি বলেন, স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি দাবি, অনেকে আঁতুরঘর থেকে রাজপ্রাসাদ গড়েছেন। অথচ যারা নিবেদিতপ্রাণ হয়ে কাজ করেছেন তাদের জন্য কী কোনো চিন্তাভাবনা আছে, এমন প্রশ্ন করেন তিনি।

বিচারপতি নূরুজ্জামান বলেন, ‘স্বাধীনতার বিপক্ষের শক্তি কেউটে সাপ, কাউকে মুক্তি দেবে না, কাউকে রেহায় দেবে না। এক সময় আসবে তারা আঘাত করবে। তারা প্রস্তুতি নিচ্ছে আঘাত করার জন্য। আমাদের উচিত হবে মাহবুবে আলমের পরিবারকে নিরাপত্তা দেয়া। শুধু তাই নয়, যারা যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করেছেন তাদের পরিবার, তাদের বংশ, তাদের সকলের নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা। তা না হলে একদিন আসবে, যারা বিচার করেছে তাদের পরিবার হাহাকার করবে। আমি আজকের এই মিটিং এ উচ্চারণ করতে চাই। যারা এই যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করেছেন, তাদের সকলের নিরাপত্তার দায়িত্ব রাষ্ট্রকে নিতে হবে।’

অনুষ্ঠানে বক্তারা প্রয়াত অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলমের দানশীলতা, তার প্রজ্ঞা, নম্রতা সর্বোপরি একজন সাংস্কৃতিক ব্যক্তি ছিলেন বলে উল্লেখ করেন।

অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিনের সভাপতিত্বে স্মরণসভায় আরও বক্তব্য দেন- আপিল বিভাগের বিচাপতি ওবায়দুল হাসান, বোরহান উদ্দিন, এম ইনায়েতুর রহিম, জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এম আমীর-উল ইসলাম, জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন, জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এ এফ হাসান আরিফ, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি মোমতাজ উদ্দিন ফকির, সমিতির সম্পাদক আবদুন নুর দুলাল, প্রয়াত মাহবুবে আলমের সহধর্মিণী বিনতা মাহবুব, জ্যেষ্ঠ আইনজীবী কে এম সাইফুদ্দিন, জ্যেষ্ঠ আইনজীবী প্রবীর নিয়োগী, সাবেক অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মুরাদ রেজা, অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ আলী, ল’ রিপোর্টার্স ফোরামের (এলআরএফ) সভাপতি আশুতোষ সরকার প্রমুখ।

এ বিভাগের আরো খবর