খুলনার সোনাডাঙ্গায় বাসা থেকে গলাকাটা অবস্থায় উদ্ধার নারীর পরিচয় মিলেছে, উন্মোচন করা হয়েছে ওই হত্যার রহস্যও।
সোমবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে নগরীর গোবরচাকা ক্রস রোড তেঁতুলতলায় এ নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে আসেন র্যাব-৬-এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোস্তাক আহমেদ।
র্যাব জানিয়েছে, রোববার রাতে গাজীপুরের চৌরাস্তা এলাকায় অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করা হয় অভিযুক্ত আবু বক্কর মোল্লাকে। স্ত্রী বাসায় না থাকার সুযোগে ওই নারীকে বাসায় এনে শারীরিক সম্পর্কের পর তাকে হত্যা করেন তিনি।
আবু বক্করের বাড়ি বাগেরহাটের রামপাল উপজেলায়। সোনাডাঙ্গার গোবরচাকা এলাকার একটি ভাড়া বাসায় স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে স্বপ্না খাতুন নামের একজনের সঙ্গে বাস করছিলেন তিনি। ২৭ বছর বয়সী ওই নারীকে হত্যার পর তিনি ও তার স্ত্রী পালিয়ে যান।
নিহত ওই নারীর বাসা নগরীর সোনাডাঙ্গা থানায় কয়েকদিন আগে আবু বক্করের সঙ্গে তার পরিচয়।
র্যাব অধিনায়ক মোস্তাক আহমেদ বলেন, আবু বক্করের কথিত স্ত্রী স্বপ্না বেগম স্থানীয় একটি বেসরকারি হাসপাতালে সেবিকা হিসেবে কর্মরত। তিনি প্রতিদিনের মতো ৫ নভেম্বর রাতে তার কর্মস্থলে যান। ওই রাতে খুলনার বাংলাদেশ ব্যাংক মোড় থেকে ওই নারীকে প্রলোভন দেখিয়ে নিজ ঘরে নিয়ে আসেন আবু বক্কর।
সেখানে তাদের মধ্যে শারীরিক সম্পর্ক হয়। একপর্যায়ে তাদের মধ্যে বাগবিতণ্ডা শুরু হয় এবং ওই নারী উচ্চৈঃস্বরে কথা বলতে থাকেন। তখন আবু বক্কর তাকে নিচুস্বরে কথা বলতে বললেও তিনি বিরত হননি। পরে আবু বক্কর তাকে খাটের ওপর থেকে ফেলে দিয়ে পাঁচ থেকে সাত মিনিট মুখ চেপে ধরেন।
তিনি বলেন, এরপর তার মৃত্যু নিশ্চিত করতে বঁটি দিয়ে দেহ থেকে মাথা ও দুই হাতের কবজি বিচ্ছিন্ন করেন আবু বক্কর। পরে মরদেহ গুম করার জন্য মাথাটি একটি পলিথিনে, হাতের কবজি দুটি একটি শপিং ব্যাগে ও দেহটি বাক্সে বন্দি করেন। বিভিন্নভাবে চেষ্টা করে লাশ গুম করতে না পেরে রোববার সকালে তিনি তার কথিত স্ত্রী স্বপ্না খাতুনকে নিয়ে গাজীপুরে পালিয়ে যান।
র্যাব কর্মকর্তা আরও বলেন, আবু বক্কর নগরীর কদমতলা স্টেশন রোডের নিউ আল আকসা নামে একটি ট্রান্সপোর্টে কাজ করতেন। রোববার সকালে কর্মস্থলে না যাওয়ায় এবং তার ফোন বন্ধ থাকায় ট্রান্সপোর্ট থেকে কয়েকজন তাকে খুঁজতে আসেন। ঘর তালাবদ্ধ থাকায় তারা বাড়ির মালিক রাজুকে বিষয়টি জানান তারা। পরে তিনি পুলিশকে খবর দেন।
র্যাব জানিয়েছে, এ ঘটনায় নগরীর সোনাডাঙ্গা থানায় পুলিশ একটি হত্যা মামলা করেছে। ঘটনাটি নিয়ে ছায়াতদন্ত করে রহস্য উন্মোচন করে র্যাব। আসামিকে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হচ্ছে।