বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

বিমানের ৩,৪৪৯ কোটি টাকার সারচার্জ মওকুফ

  •    
  • ৫ নভেম্বর, ২০২২ ১৭:৪৩

বিমান পরিচালনা পর্ষদের সাবেক পরিচালক কাজী ওয়াহেদুল আলম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘পৃথিবীর কোনো দেশেই মাসে ৬ শতাংশ হারে সারচার্জ নেই। আমরা দীর্ঘদিন ধরেই এটি কমানোর দাবি জানিয়ে আসছি। আমি মনে করি এটি ভালো সিদ্ধান্ত। তবে বেসরকারি এয়ারলাইনসগুলোকেও একই সুবিধা দেয়া উচিত।’

বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) কাছে রাষ্ট্রীয় পতাকাবাহী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের পুঞ্জিভুত বকেয়া ৩ হাজার ৪৪৯ কোটি টাকা মওকুফ করতে নিয়ন্ত্রক সংস্থাকে নির্দেশ দিয়েছে বেসামরিক বিমান পরিবহন মন্ত্রণালয়। বিমান কর্তৃপক্ষের এক আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

বিমানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মো. যাহিদ হোসেন ১৫ সেপ্টেম্বর মন্ত্রণালয়ে পাঠানো এক চিঠিতে লেখেন, ‘বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) দাখিল করা সব ধরনের ল্যান্ডিং, পার্কিং, নেভিগেশন বিল বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস লিমিটেড ২০১৯ সাল থেকে নিয়মিত পরিশোধ করে যাচ্ছে। এ ছাড়া যাত্রী টিকিটের সঙ্গে সংগৃহীত আন্তর্জাতিক ও অভ্যন্তরীণ এম্বারকেশন ফি, বিমানবন্দর উন্নয়ন ফি ও যাত্রী নিরাপত্তা ফি নিয়মিত বেবিচককে পরিশোধ করে আসছে।

‘ইতোপূর্বে ২০০৭ সালে বাংলাদেশ বিমান করপোরেশন ও সিভিল এভিয়েশনের দেনা-পাওনার হিসাবে সিএএবি আরোপিত সারচার্জ ১ হাজার ২১৬ কোটি টাকা ২০১৮ সালের ৩ আগস্ট মওকুফ করা হয় এবং মূল বিল বাবদ পাওনা অর্থ ৫৭৩.৭১ কোটি টাকা সরকারের ইকুইটিতে স্থানান্তর করে বেবিচকের পাওনা সমন্বয় করা হয়।’

চিঠিতে আরও লেখা হয়, ‘কোম্পানি হিসেবে প্রতিষ্ঠা প্রাপ্তির পর জ্বালানি তেলের মূল্যের ঊর্ধ্বগতি, অসম প্রতিযোগিতা, উড়োজাহাজের স্বল্পতা, পুরোনো উড়োজাহাজ বহর থেকে সরানো ইত্যাদি কারণে আগের বকেয়া অর্থ বেবিচককে পরিশোধ করা বিমানের পক্ষে সম্ভব হয়নি। তবে আগের বকেয়া অর্থ ইকুইটি খাতে স্থানান্তরের বিষয়ে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় কর্তৃক অর্থ মন্ত্রণালয়কে অবহিত করা হয়, যা বিবেচনাধীন।

‘বর্তমানে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) কাছে বিমানের দেনার পরিমাণ ৪ হাজার ৭৪৪ কোটি টাকা। এর মধ্যে মূল বিল ৯৫৩.৪৩ কোটি টাকা, ভ্যাট ও ট্যাক্স ৩৪২.১৭ কোটি টাকা এবং সারচার্জ ৩,৪৪৯.১৪ কোটি টাকা।’

বিমানের এমডি লিখেন, ‘বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ এবং বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস লিমিটেড রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান। বিমান দেশের জনগণের স্বার্থ বিবেচনা করে ব্যবসা পরিচালনা করে।

‘এ অবস্থায় বেবিচক কর্তৃক দাবিকৃত পুঞ্জিভূত বকেয়ার ওপর সারচার্জ (প্রতি মাসে ৬ শতাংশ হারে) মওকুফ করে করোনাজনিত ক্ষতি কাটিয়ে জাতীয় পতাকাবাহী বিমানকে আর্থিক কার্যক্রমে আরও গতিশীলতা আনয়নের বিষয়ে সহযোগিতা প্রয়োজন।’

বিমানের এমডির এই চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে ২০ অক্টোবর বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের বিমান অধিশাখার উপসচিব মোহাম্মদ আব্দুল আউয়ালের এক নির্দেশে বেবিচককে সারচার্জ মওকুফের নির্দেশ দেয়া হয়।

নির্দেশনায় বলা হয়েছে, ‘উপযুক্ত বিষয় ও সূত্রস্থ স্মারকের পরিপ্রেক্ষিতে জানানো যাচ্ছে যে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের কাছে বিমানের দেনার পরিমাণ ৪ হাজার ৭৪৪.৭৪ কোটি টাকা। এর মধ্যে মূল বিল ৯৫৩.৪৩ কোটি, ভ্যাট ও ট্যাক্স ৩৪২.১৭ কোটি এবং সারচার্জ ৩ হাজার ৪৪৯.১৪ কোটি টাকা। বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের দাবি করা পুঞ্জিভূত এই বকেয়ার ওপর সারচার্জ (প্রতি মাসে ৬ শতাংশ হারে) মওকুফ করার বিষয়ে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স থেকে অনুরোধ করা হয়েছে।

‘এ অবস্থায় বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ কর্তৃক বিমানের কাছে আরোপিত সারচার্জ ৩,৪৪৯.১৪ কোটি টাকাসহ পুঞ্জিভূত বকেয়ার ওপর প্রতি মাসে ৬ শতাংশ হারে সারচার্জ মওকুফ করার জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হলো।’

বিমানের বকেয়া সারচার্জ মওকুফের এ সিদ্ধান্তকে ইতিবাচক হিসেবেই দেখছেন এভিয়েশন বিশেষজ্ঞরা। তবে তাদের দাবি, শুধু বিমানকেই এ সুবিধা না দিয়ে সামগ্রিকভাবে বেসরকারি এয়ারলাইন্সগুলোকেও এ সু্বিধা দেয়া উচিত।

বিমান পরিচালনা পর্ষদের সাবেক পরিচালক কাজী ওয়াহেদুল আলম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘পৃথিবীর কোনো দেশেই মাসে ৬ শতাংশ হারে সারচার্জ নেই। এটি বছরে ৭২ শতাংশ পর্যন্ত উন্নীত হয়ে যায়, যা এয়ারলাইন্সগুলোর জন্য বোঝা। আমরা দীর্ঘদিন ধরেই এটি কমানোর দাবি জানিয়ে আসছি।

‘আমি মনে করি এটি সরকারের ভালো সিদ্ধান্ত। তবে বেসরকারি এয়ারলাইন্সগুলোকেও একই সুবিধা দেয়া উচিত। কারণ বিমান যে সমস্যার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে অন্য এয়ারলাইন্সগুলোও একই সমস্যায় রয়েছে। সবার জন্য এটি করা হলে দেশের এভিয়েশন শিল্পের জন্য তা ভালো সিদ্ধান্ত হবে।’

এ বিভাগের আরো খবর