বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

ভক্তদের শ্রদ্ধায় শেষ হলো চীবর দানোৎসব

  •    
  • ৪ নভেম্বর, ২০২২ ২২:৫২

ত্রি-চীবর হলো চার খণ্ডের পরিধেয় বস্ত্র; যাতে রয়েছে দোয়াজিক, অন্তর্বাস, চীবর ও কটিবন্ধনী। এ পোশাক পরেন বৌদ্ধ ভিক্ষুরা। প্রতি বছর নির্দিষ্ট সময়ে অনুষ্ঠানের মাধ্যমে এই পোশাক বৌদ্ধ ভিক্ষুদেরকে দেয়া হয়। এই পোশাক তৈরির প্রস্তুতি হিসেবে প্রথমে তুলার বীজ বোনা হয়। পরে তুলা সংগ্রহ করে তা থেকে সুতা কেটে রং করা হয় গাছের ছাল বা ফল থেকে তৈরি রং দিয়ে। পরে নানা আচার-অনুষ্ঠান ও ধর্মীয় নিয়ম-কানুন মেনে মাত্র ২৪ ঘণ্টায় তৈরি করা হয় এই ত্রি-চীবর। সেসব পবিত্র চীবর, বৌদ্ধ ভিক্ষুদের হাতে তুলে দেয়া হয় কঠোর ধর্মীয় আনুষ্ঠানিকতার মাধ্যমে।

লাখো ভক্তের ভক্তি ও শ্রদ্ধায় রাঙামাটি রাজবন বিহারে শেষ হয়েছে দুই দিনব্যাপী দানোত্তম কঠিন চীবর দানোৎসব।

বৃহস্পতিবার বিকেলে ধর্মীয় নানা আনুষ্ঠানিকতা দিয়ে শুরু হয়ে শুক্রবার বিকেলে শেষ হয় এ উৎসব।

এবারের ৪৯তম উৎসবে দূর-দূরান্ত থেকে লাখো পূণ্যার্থী অংশ নেন। তাদের পদচারণায় মুখর হয়ে ওঠে পুরো রাজবন বিহার এলাকা।

দুপুরে কল্পতরু ও কঠিন চীবরকে পুরো বিহার এলাকা প্রদক্ষিণ করিয়ে বের করা হয় আনন্দ শোভাযাত্রা। পরে ধর্মীয় সংগীত পরিবেশনার মধ্য দিয়ে শুরু হয় কঠিন চীবর দানোৎসব।

এ উপলক্ষে বুদ্ধপূজা, বুদ্ধ মূর্তি দান, সংঘদান, অষ্টপরিষ্কার দান, কঠিন চীবর দান, ধর্মীয় আলোচনা, পঞ্চশীল প্রার্থনা, ধর্মীয় সূত্রপাঠ, ধর্মীয় দেশনা, কল্পতরু প্রদক্ষিণ ও ফানুস বাতি উৎসর্গসহ নানা ধর্মীয় আচার পালন করা হয়।

বিহার পরিচালনা কমিটির সূত্রে জানা গেছে, গৌতম বুদ্ধের সময়ে তার প্রধান সেবিকা বিশাখা ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তুলা থেকে সুতা কেটে রং করে কাপড় বুনে সেলাই করে বুদ্ধকে দান করেছিলেন।

বিশাখার এই কঠিন চীবর দানের স্মৃতি রক্ষায় ১৯৭৩ সালের ৫ ও ৬ নভেম্বর লংগদুর তিনটিলায় সর্বপ্রথম কঠিন চীবর দানের রীতি প্রবর্তন করেন মহাপরির্নিবাণপ্রাপ্ত সাধনানন্দ মহাস্থবির বনভান্তে।

এরপর থেকে প্রতিবছরই বৌদ্ধধর্মালম্বীরা কঠিন চীবর দানোৎসব উদযাপন হয়ে আসছে।

ধর্মীয় সভায় তিন পার্বত্য জেলার বিভিন্ন বিহার থেকে প্রায় অর্ধশতাধিক ভিক্ষুও অংশ নেন

মুন চাকমা ও তুহিন চাকমার পরিচালনায় এবারের চীবর দানোৎসবে পঞ্চশীল প্রার্থনা পাঠ ও বক্তব্য রাখেন রাঙামাটি রাজবন বিহারের প্রধান পৃষ্ঠপোষক ও চাকমা সার্কেল চিফ ব্যারিস্টার দেবাশীষ রায়।

এ ছাড়াও আরও বক্তব্য রাখেন খাদ্য সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ও পাবর্ত্য আসনের সংসদ সদস্য দীপংকর তালুকদার এমপি, পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান নিখিল কুমার চাকমা, রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অংসুইপ্রু চৌধুরী।

কোভিড-১৯ উপদ্রব থেকে মুক্তিলাভ ও সারা বিশ্বে মঙ্গল প্রার্থনায় ধর্মীয় সভায় বিশেষ প্রার্থনা পাঠ করেন রাজবন বিহার পরিচালনা কমিটির সহ-সভাপতি ও সাবেক মানবাধিকার কমিশনের সদস্য নিরূপা দেওয়ান।

এ সময় অন্যান্যদের মধ্য উপস্থিত ছিলেন- রাঙামাটি জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মিজানুর রহমান, জেলা বিএনপির সভাপতি দীপন দেওয়ান দীপু, পৌর মেয়র আকবর হোসেন চৌধুরী ও বিহার পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক অমীয় খাসীসহ অনেকেই।

চীবর দানোৎসবে পার্বত্য চট্টগ্রামের বিভিন্ন জায়গা থেকে প্রায় লক্ষাধিক পূণ্যার্থী অংশ নেন

ধর্মীয় সভায় বনভান্তের অমৃতসম বাণীর উদ্বৃতি দিয়ে পুণ্যার্থীদের উদ্দেশে ধর্মদেশনা দেন রাঙামাটি রাজবন বিহারের আবাসিক প্রধান ও বিহার অধ্যক্ষ ভদন্ত শ্রীমৎ প্রজ্ঞালঙ্কার মহাস্থবির ও কাটাছড়ি রাজবন ভাবনা কেন্দ্রের অধ্যক্ষ ভদন্ত শ্রীমৎ ইন্দ্রগুপ্ত মহাস্থবির।

ধর্মীয় সভায় তিন পার্বত্য জেলার বিভিন্ন বিহার থেকে প্রায় অর্ধশতাধিক ভিক্ষুও অংশ নেন।

এ বিভাগের আরো খবর