বরিশাল নগরীর বঙ্গবন্ধু উদ্যানে যেন পিকনিক চলছে। বড় বড় হাঁড়িতে বসানো রান্না। প্যান্ডেল টানিয়ে চলছে আড্ডা, হই-হুল্লোড়।
এটা বিএনপির বিভাগীয় গণসমাবেশস্থলের বৃহস্পতিবার রাতের চিত্র। সমাবেশ শনিবার হলেও নেতা-কর্মীরা এখানে জড়ো হতে শুরু করেছেন বৃহস্পতিবার থেকেই।
তারা বলছেন, সমাবেশ যেন সফল না হয় সেজন্য শুক্রবার থেকে গণপরিবহন বন্ধ করে দেয়া হচ্ছে। এ কারণে আগেভাগেই তারা সমাবেশস্থলে চলে এসেছেন। সমাবেশের আগের দুই রাত এখানেই কাটাবেন।
বরিশাল বিভাগের বিভিন্ন জেলা ও উপজেলা থেকে বিএনপি নেতা-কর্মীরা বৃহস্পতিবার দুপুরের পর থেকে বরিশাল নগরীতে আসতে শুরু করেছেন। মিছিল নিয়ে তারা সন্ধ্যার পর থেকে বঙ্গবন্ধু উদ্যানে জড়ো হয়েছেন।
কেন্দ্রীয় বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক বিলকিস জাহান শিরিন বলেন, ‘আমাদের নেতা-কর্মীদের পরিবহন বন্ধ করে আটকে রাখা যাবে না। সমাবেশস্থলে এখনই এত নেতাকর্মী, তাহলে ভাবুন বরিশাল নগরীতে কত নেতাকর্মী অবস্থান করছে। সমাবেশে লক্ষাধিক মানুষের সমাগম ঘটবে।’
উদ্যানে সমাবেশ মঞ্চের পাশেই নেতা-কর্মীদের জন্য রান্নার আয়োজন হয়েছে। ৮টি হাঁড়িতে রান্না হচ্ছে খিচুড়ি ও মুরগির মাংস। আয়োজন হাজারের মতো নেতা-কর্মীদের জন্য।
এসব জানিয়ে মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব মীর জাহিদুল কবির জাহিদ বলেন, উদ্যানেই রাতে ঘুমাবেন দূর থেকে আসা নেতা-কর্মীরা। কারণ আবাসিক হোটেলগুলোতে পুলিশ অভিযানের নামে তাদের হয়রানি করতে পারে।
তিনি বলেন, ‘সব ধরণের পরিবহন বন্ধ করে দিয়েছে সরকার আমাদের সমাবেশ ঠেকাতে। তবে তাদের কোনো উদ্যেগই সফল হবে না। জনগণের জন্য আন্দোলনে সব বাধা অতিক্রম করে দুই দিন আগেই সমাবেশস্থলে হাজির হচ্ছেন নেতা-কর্মীরা। এখানেই থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছে ত্রিপল টানিয়ে।
‘সমাবেশস্থলেই রান্নার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এতেই বোঝা যায় সরকার কোনো বাধা দিয়েই আমাদের সমাবেশে নেতা-কর্মীদের আসা আটকাতে পারবে না।’
সমাবেশে যোগ দিতে এসেছেন বিএনপি কর্মী শহিদুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘ইতোমধ্যে বরিশালের সঙ্গে অন্যান্য স্থানের যোগাযোগ বন্ধ হওয়া শুরু হয়ে গেছে। লঞ্চ, বাস, অটো, ট্রাকসহ সব যানবাহন বন্ধ রাখছে। তাই আমরা দুই দিন আগে থেকেই সমাবেশে যোগ দিয়েছি। এই জায়গায় নামাজ আদায় করতে পেরে এখন একটু শান্তি লাগছে।’
নেতা-কর্মীদের কয়েকজনকে দেখা গেছে মাঠের গাছতলায় তাঁবুর নিচে আশ্রয় নিতে। কয়েকজন পাটি বিছিয়ে খোলা আকাশের নিচেই শুয়ে পড়েছেন।
পিরোজপুরের কাউখালী থেকে আসা কৃষকদল কর্মী মোনাব্বর রব বলেন, ‘সকালে আসছি এখানে। কম্বল ও কাঁথা নিয়েই আসছি। লুঙ্গি-গেঞ্জিও এনেছি।
‘খালেদা জিয়ার মুক্তির আন্দোলনে থাকতে দুইদিন এই জায়গায় থাকব। খাব-দাব সব এইখানেই। পুলিশ নিয়ে গেলেও আমি আন্দোলন করব।’