কোনো ঘোষণা ছাড়াই ভোলা-বরিশার নৌপথে স্পিডবোট চলাচল বন্ধ করে দিয়েছেন মালিকরা।
বরিশাল স্পিডবোট ঘাটের লাইন ইনচার্জ তারেক শাহ জানান, বুধবার সন্ধ্যা থেকে আগামি শনিবার পর্যন্ত স্পিডবোট এই রুটে বন্ধ থাকবে বলে তাকে জানানো হয়েছে।
কী কারণে হঠাৎ এই পদক্ষেপ তা জানানো হয়নি বলে তিনি দাবি করেছেন।
তিনি জানিয়েছেন, ভোলার ভেদুরিয়া ঘাটে যাত্রীদের সঙ্গে স্পিডবোট মালিক-চালকদের গণ্ডগোল হয়েছে বলে শুনেছেন। তবে এই কারণেই স্পিডবোট ধর্মঘট ডাকা হয়েছে কি না তা তিনি নিশ্চিত নন।
ঘাটে থাকা স্পিডবোট সংশ্লিষ্ট এক ব্যক্তি নাম-পরিচয় প্রকাশ না করার শর্তে জানিয়েছেন, শনিবার বিএনপির বিভাগীয় গণসমাবেশের জেরেই স্পিডবোট বন্ধ করা হয়েছে।
এই গণসমাবেশকে কেন্দ্র করে আগামি শুক্র ও শনিবার ধর্মঘট ডেকেছে জেলার পরিবহন মালিক সমিতি।
বরিশালে বাস মালিকদের দুটি সংগঠনের পাশাপাশি তিন চাকার গাড়ির মালিক ও শ্রমিক সমিতিও দিয়েছে ধর্মঘটের ডাক। লঞ্চ মালিক সমিতির নেতারাও বলছেন, যেকোনো সময় তারাও যেতে পারেন ধর্মঘটে।
যদিও পরিবহন সমিতি বিএনপির সমাবেশের কারণে ধর্মঘট ডাকার বিষয়টি স্বীকার করেনি।
বরিশাল-পটুয়াখালী বাস মিনিবাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক কাওসার হোসেন শিপন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বিএনপির সমাবেশের সঙ্গে আমাদের ডাকা ধর্মঘটের কোনো সম্পর্ক নেই। বাস মালিকদের মধ্যে তো বিএনপি নেতারাও আছেন। রাজনীতির সঙ্গে পেশাজীবী সংগঠনকে জড়ানোর কোনো সুযোগ নেই।
‘মহাসড়কে থ্রি-হুইলার চলাচলের কারণে দুর্ঘটনা বাড়ছে, আমাদের লোকসান হচ্ছে। এই কারণে থ্রি-হুইলার বন্ধের দাবিতে ধর্মঘট ডেকেছি।’
বরিশাল মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি একেএম জাহাঙ্গীর হোসাইন জানান, এই ধর্মঘটের সঙ্গে আওয়ামী লীগের কোনো সম্পর্ক নেই। বাস মালিক সমিতিতে বিএনপি-আওয়ামী লীগ-জাতীয় পার্টি সব দলের নেতারা রয়েছেন। তারা তাদের দাবি আদায়ে ধর্মঘট ডেকেছে।
বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম মহাসচিব মজিবর রহমান সরোয়ার বলেন, ‘আমরা তো নিশ্চিত করে বলছি বাস বা থ্রি-হুইলার ধর্মঘটের পেছনে সরকারের ইনডাইরেক্টলি হাত রয়েছে। সরকারদলীয় লোকজন পরিবহন সংগঠনগুলোর নেতৃত্বে বসা। তারা তো আমাদের সমাবেশ বানচাল করার চেষ্টা করবেই।’
তিনি বলেন, ‘পরিবহন সংগঠনগুলো আওয়ামী লীগের ইচ্ছা-অনিচ্ছায় চলে। তাদের নিয়ন্ত্রণে সবকিছু। তবে এসব করে কোনো লাভ নেই, মানুষ সাঁতরে হলেও সমাবেশে যোগ দেবে।’
বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব হাবিব-উন-নবী খান সোহেল বলেন, ‘চট্টগ্রাম, ময়মনসিংহ, খুলনা ও রংপুরের গণসমাবেশগুলো বাধাগ্রস্ত করার জন্য সর্বাত্মক অপচেষ্টা চালিয়েছে আওয়ামী লীগ। বাস মালিক পক্ষকে ব্যাপকভাবে চাপ দিয়ে তাদেরও নাম ব্যবহার করছে সরকারি দল।
‘বিএনপি বাস মালিক পক্ষকে লিখিতভাবে আশ্বস্ত করেছে তাদের দাবিতে বিএনপি নীতিগতভাবে সমর্থন করে। তবে ৪ ও ৫ নভেম্বর ধর্মঘটের ডাক দেয়া থেকে বিরত থাকতে তাদের অনুরোধ জানানো হয়েছে। কিন্তু তারা কথা শোনেনি।’