রাজধানীর পল্লবীতে স্কুলছাত্র মেহেদী হাসান হত্যা মামলায় আটজনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ দিয়েছে আদালত। একই সঙ্গে তাদের ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড দেয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার ঢাকার সপ্তম অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক তেহসিন ইফতেখার এই রায় দেন।
বিচারক রায়ে বলেন, ‘আট আসামির বিরুদ্ধে হত্যা মামলার অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে। তাদের প্রথম অপরাধ ও বয়স বিবেচনায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দেয়া হলো।’
অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় আসামি শাহিনুর বেগম ও নান্নু মিয়াকে খালাস দেয়া হয়েছে।
যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন ফয়সাল, আশিক, রাসেল, ওলি, সাদ্দাম, রাব্বি ওরফে ছটু, ইমরান ও রাশিদ। রায় ঘোষণার সময় আট আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন। তাদের সাজা পরোয়ানা দিয়ে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন বিচারক।
গত ১১ অক্টোবর রাষ্ট্রপক্ষ ও আসামিপক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষ হয়।
এরপর ৩০ অক্টোবর মামলার রায় ঘোষণার জন্য দিন ঠিক ছিল। তবে সেদিন রায় প্রস্তুত না হওয়ায় ঢাকার সপ্তম অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক তেহসিন ইফতেখার রায়ের নতুন তারিখ ১ নভেম্বর ঠিক করেন।
মামলা থেকে জানা যায়, ২০১৪ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় মোশারফ হোসেনের ছেলে ১৫ বছর বয়সী মেহেদীকে ডেকে পাশের একটি ভবনে নিয়ে যান ওলি। মেহেদীর ভাগনে অনিক ঘটনাটি দেখতে পেয়ে সবাইকে জানান। সংবাদ পেয়ে পরিবারের সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখতে পান, মেহেদী অজ্ঞান অবস্থায় ফ্লোরে পড়ে আছে। চিকিৎসার জন্য তাকে মিরপুর ইসলামী ব্যাংক হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখান থেকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে চিকিৎসক তাকে মৃত বলে জানান।
এ ঘটনার পরদিন পল্লবী থানায় মামলা করেন মোশারফ। মামলাটি তদন্ত করে ২০১৭ সালের ১২ জুন ১০ জনকে অভিযুক্ত করে অভিযোগপত্র জমা দেন সিআইডির পরিদর্শক মোকছেদুর রহমান। ২০১৯ সালের ১ এপ্রিল আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে মামলার বিচার শুরু হয়।
বিচার চলাকালে আদালত ২৫ সাক্ষীর মধ্যে ১২ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করে। মামলায় মোশারফ অভিযোগ করেন, মাদক কারবারের প্রতিবাদ করায় আসামিরা পরিকল্পিতভাবে তার ছেলেকে মারধরে হত্যা করেছে।