বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

পরিবহনসহ অত্যাবশ্যকীয় সেবায় ধর্মঘট ডাকলে সাজা

  •    
  • ৩১ অক্টোবর, ২০২২ ১৮:৫৮

মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘কোনো কারণে বাস বা ট্রাক চলাচলে কেউ হরতাল করল, তখন সরকার এখানে ইয়ে.. করতে পারবে। এটি অমান্য করলে শাস্তির বিধানও রাখা হয়েছে।’

বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশের সময় পরিবহন ধর্মঘট আহ্বানের মধ্যে সরকার এই ধরনের পদক্ষেপ নিষিদ্ধ করে আইন পাসের উদ্যোগ নিয়েছে।

প্রস্তাবিত আইনে পরিবহন, জ্বালানি, ডাক ও টেলিযোগাযোগসহ অত্যাবশ্যকীয় বেশ কিছু খাতের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। পাশাপাশি এ-ও বলা হয়েছে, সরকার মনে করলে অন্য কোনো খাতকেও অত্যাবশকীয় ঘোষণা দিতে পারবে।

অত্যাবশ্যকীয় এসব সেবা খাতে ধর্মঘটে ডাকলে বা সমর্থন দিলে সর্বোচ্চ এক বছরের কারাদণ্ডের বিধান রেখে আনা অত্যাবশ্যকীয় পরিষেবা আইন ২০২২-এর চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। এরপর বিল তোলা হবে জাতীয় সংসদে। সেখানে পাস হলে সেটি আইনে পরিণত হবে।

খসড়াটি আইনে পরিণত হলে জনজীবন ব্যাহত হয় এমন কোনো ক্ষেত্রে ইচ্ছা করলেই আর ধর্মঘট বা হরতাল ডাকা যাবে না।

সোমবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে সরকারপ্রধান শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে মন্ত্রিসভার বৈঠকে এই খসড়ায় চূড়ান্ত অনুমোদন দেয়া হয়। ২০২১ সালের ৪ অক্টোবর মন্ত্রিসভা এর খসড়ার নীতিগত অনুমোদন দিয়েছিল।

বৈঠক শেষে সচিবালয়ে সাংবাদিকদের মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, ‘আইনটিতে ১৪টি ধারা আছে। ৪ নম্বর ধারায় বলা হয়েছে সরকার কোন বিষয়গুলোতে অত্যাবশ্যকীয় পরিষেবা হিসেবে ঘোষণা করবে।

‘৫ ধারায় বলা হয়েছে, কতিপয় চাকরিতে কর্মরতদের নির্দিষ্ট এলাকা ত্যাগ না করার ক্ষমতা, আর ৫ ধারায় বলা হয়েছে ধর্মঘট, লকডাউন বা লে-অফ নিষিদ্ধ করার কথা।’

সচিব বলেন, ‘অনেক সময় শিল্পপ্রতিষ্ঠানে লে-অফ বা নক আউট করা হয়। সরকার যদি মনে করে এগুলো জাস্টিফায়েড না তাহলে এগুলো নিষিদ্ধ করতে পারবে।’

তিনি বলেন, ‘যে সেবাগুলোকে সরকার মনে করবে অত্যাবশ্যকীয় পরিষেবা সেগুলোর নাম ঘোষণা করা যাবে। কয়েকটি সেবার নাম এখানে উল্লেখ করা আছে।’

উদাহরণ হিসেবে তিনি গণপরিবহন ডাক ও টেলিযোগাযোগ, তথ্যপ্রযুক্তি, ই-কমার্স, ইলেক্ট্রনিক ও ডিজিটাল সেবার কথা উল্লেখ করেন। বলেন, ‘সরকার মনে করে এই সেবাগুলো সরকার যখন খুশি তখন বন্ধ করে দিতে পারবে না।’

সচিব বলেন, ‘দ্বিতীয়ত, ডিজিটাল আর্থিক সেবা যেমন মোবাইল আর্থিক সেবা; বিদ্যুৎ উৎপাদন, সরবরাহ, বিপণন এবং এর সঙ্গে যোগ করা হয়েছে গ্যাস ও কয়লা। এগুলো অত্যাবশ্যক সেবা। এগুলোর বিষয়ে যদি কোনো অচলাবস্থা তৈরি হয় সে ক্ষেত্রে সরকার ইন্টারফেয়ার করতে পারবে এবং যেখাবে নির্দেশ দেবে রাষ্ট্রীয় কল্যাণে, সেভাবে পরিচালিত হতে হবে।’

সোমবার মন্ত্রিসভার বৈঠকে অত্যাবশ্যকীয় পরিষেবা আইন ২০২২-এর চূড়ান্ত অনুমোদন দেয়া হয়

অন্য এক প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘স্থল, জল, রেল ও আকাশপথের যাত্রী বা পণ্য সেবাও অত্যাবশ্যকীয় পরিষেবা বলে পরিচিত হবে। স্থল, সমুদ্র, নদী বা বিমানবন্দরের পণ্য খালাস, সশস্ত্র বাহিনীর পরিচালনায় কোনো প্রতিষ্ঠান বা এ-সংক্রান্ত পরিষেবা। এর বাইরেও সরকার মনে করলে যেকোনো সেবাকে অত্যবশ্যকীয় সেবা ঘোষণা করতে পারবে।’

সচিব বলেন, ‘কোনো কারণে বাস বা ট্রাক চলাচলে কেউ হরতাল করল, তখন সরকার এখানে ইয়ে.. করতে পারবে। এটি অমান্য করলে শাস্তির বিধানও রাখা হয়েছে।’

আইনটির খসড়া অনুযায়ী, দেশের প্রতিরক্ষার উদ্দেশে প্রয়োজনীয় পণ্য বা মালামাল উৎপাদনের কাজে নিয়োজিত প্রতিষ্ঠান বা সংস্থার সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত পরিষেবা; খাদ্যদ্রব্য ক্রয়, বিক্রয়, সংগ্রহ, সংরক্ষণ, মুজত বা বিতরণ কাজে নিযুক্ত সরকারি মালিকানাধীন বা সরকার কর্তৃক নিয়ন্ত্রিত কোনো প্রতিষ্ঠান বা সংস্থার সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত পরিষেবা; হাসপাতাল, ক্লিনিক, স্বাস্থ্যসেবা বা অনুরূপ প্রতিষ্ঠান এবং ডিসপেনসারি-সম্পর্কিত কোনো পরিষেবা; ওষুধ উৎপাদন, সরবরাহ, বিপণন, ক্রয়-বিক্রয়সহ এসব কাজে নিয়োজিত প্রতিষ্ঠান, সংস্থা বা কারখানার সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত পরিষেবা; রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান পরিষেবা; তেলক্ষেত্র, তেল শোধনাগার, তেল সংরক্ষণ এবং পেট্রোলিয়াম বা পেট্রোলিয়াম জাতীয় পদার্থ উৎপাদন, পরিবহন, সরবরাহ ও বিতরণের কাজে নিয়োজিত প্রতিষ্ঠান বা সংস্থার সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত পরিষেবা এবং টাঁকশাল ও নিরাপত্তামূলক মুদ্রণ কাজের সঙ্গে সম্পর্কিত পরিষেবাকে সরকার গেজেট দিয়ে অত্যাবশ্যক পরিষেবা হিসেবে ঘোষণা করতে পারবে।

এর বাইরেও জনকল্যাণমূলক সেবা চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হলে বা হওয়ার সম্ভাবনা থাকে এমন সেবা; জননিরাপত্তা বা জনগণের জীবনযাপনের জন্য প্রয়োজনীয় সরবরাহ ও রক্ষণাবেক্ষণ সেবা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয় বা হওয়ার আশঙ্কা থাকে, এমন সেবাকেও অত্যাবশ্যকীয় পরিষেবা ঘোষণা করতে পারবে।

জনগণের অসহনীয় কষ্টের কারণ হলে বা হওয়ার শঙ্কা থাকলে এবং দেশের প্রতিরক্ষা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে সারা দেশে বা দেশের কোনো অংশের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ছয় মাসের জন্য কোনো চাকরি বা কোনো শ্রেণির চাকরি সঙ্গে সংশ্লিষ্ট পরিষেবাকেও সরকার ছয় মাসের জন্য অত্যাবশ্যক পরিষেবা হিসেবে ঘোষণা করতে পারবে। প্রয়োজনে এর মেয়াদ আরও ছয় মাস বাড়ানো যাবে।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল বলেন, ‘যদি কেউ এ জাতীয় অপরাধ করে তাহলে সাধারণ ভাবে ৬ মাসের কারাদণ্ড ও ২৫ হাজার টাকা জরিমানা হবে। আবার বেআইনি ধর্মঘট চলমান রাখার জন্য যদি সমর্থন দেয় তাহলে এক বছরের কারাদণ্ড ও অনুর্ধ ৫০ হাজার টাকা জরিমানা।’

অনেকগুলো অপরাধের কথা এখানে বলা হয়েছে।

যেমন: প্রতিষ্ঠানের মালিক যদি বেআইনি লেআউট চালু করে সেক্ষেত্রে অনুর্ধ ৬ মাস জেল ও অনুর্ধ ১ লাখ টাকা অর্থদণ্ড বা দুটোই করা যাবে। কেউ যদি প্ররোচণা দেয় তাহলে মুল অপরাধে যে শাস্তি সেই শাস্তিই পাবে। বিভাগীয় ব্যবস্থাও নেয়া যাবে যদি সরকারি কোনো অফিস হয়। যেমন কোনো স্বায়ত্বশাসিত প্রতিষ্ঠানের এমডি যদি লেঅফ ঘোষণা করে তাহলে এর বাহিরেও ডিপার্টমেন্টাল প্রসিডিং হবে।

‘কিছু কিছু চাকরিতে কর্মরতদের সরকার নির্দেশ দিতে পারবে যে, সরকারের নির্দেশ ছাড়া তারা দেশত্যাগ করতে পারবে না। এগুলো রুলে ডিটেইল বলা হবে।’

এ বিভাগের আরো খবর