পাবনা সদর উপজেলার চরতারাপুরে কৃষক আবদুস সালাম হত্যা মামলায় ২১ আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত।
প্রত্যেক আসামিকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও তিন মাসের কারাদণ্ডও দেয়া হয়েছে।
পাবনার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালত-২-এর বিচারক ইশরাত জাহান মুন্নী সোমবার দুপুরে এসব আদেশ দেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করেন অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর ইউসুফ আলী।
দণ্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা হলেন সদর উপজেলার ভাদুরীডাঙ্গী গ্রামের শাহজাহান মোল্লা, মিনহাজ শেখ, নবী শেখ, সুলতান মাহমুদ পক্ষী, মোক্তার, বাছেদ শেখ, আইয়ুব খাঁ, আসলাম, লতিফ মোল্লা, ছোবাই মোল্লা, কালাম, মহির মোল্লা, মোহাম্মদ আলী মোল্লা ও রেজাউল মোল্লা, বাবু মোল্লা, সুজানগর উপজেলার চর ভবানীপুর গ্রামের দুই ছেলে মোকছেদ মোল্লা ও বারেক মোল্লা, করিম মোল্লা, ভবানীপুর কাঁচারি মাঠসংলগ্ন এলাকার খোকন, মানিকদিয়ার গ্রামের রফিক এবং সদর উপজেলার কোলচুরি গ্রামের বাবলু।
সাজা পাওয়া ২১ জনের মধ্যে বারেক, মিনহাজ, বাবলু, বাছেদ শেখ, লতিফ মোল্লা ও ছোবাই পলাতক। তাদের নামে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। বাকি ১৫ আসামিকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, ১৯৯৮ সালের ৭ নভেম্বর চরতারাপুর গ্রামের আবদুস সালাম কৃষিজমিতে কাজ করছিলেন। ওই সময় পূর্বশত্রুতার জেরে আসামিরা হত্যার উদ্দেশ্যে তাকে ঘিরে ধরে। সালাম দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করলে পেছন থেকে তাকে গুলি করা হয়। ওই সময় সালাম মাটিতে পড়ে গেলে তাকে গুলি ও কুপিয়ে হত্যা করা হয়।
এ ঘটনায় ২৪ জনকে আসামি করে হত্যা মামলা করেন আবদুস সালামের ভাই আবদুল জব্বার। এক বছর পর ১৯৯৯ সালের ১ আগস্ট ২৪ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ।
মামলা চলাকালীন তিন আসামির মৃত্যু হয়। দীর্ঘ সাক্ষী ও শুনানি শেষে সোমবার মামলার রায় ঘোষণা করেন বিচারক।
আদালতে আসামিদের পক্ষে শুনানি করেন সনৎ কুমার সরকার। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অতিরিক্ত পিপি ইউসুফ আলী।
ইউসুফ বলেন, ‘পূর্বপরিকল্পিতভাবে হত্যাকাণ্ডটি ঘটেছে। সাক্ষ্য ও তদন্তে অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হয়েছে। আদালত তাদের উপযুক্ত শাস্তি দিয়েছেন। আমরা এই রায়ে সন্তুষ্ট।’
মামলায় ন্যায়বিচার হয়নি অভিযোগ করে আসামিপক্ষের আইনজীবী সনৎ কুমার সরকার বলেন, ‘রাষ্ট্রপক্ষ অভিযোগ প্রমাণ করতে সম্পূর্ণরূপে ব্যর্থ হয়েছে। তার পরেও এই রায় দেয়া হয়েছে। আমরা উচ্চ আদালতে আপিল করব।’