বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

এবারও আগের রাতে সমাবেশস্থলে বিএনপি নেতা-কর্মীরা

  •    
  • ২৮ অক্টোবর, ২০২২ ২২:৩৯

রাত ১০টার দিকে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সমাবেশস্থল পরিদর্শনে যান। সে সময় তিনি মঞ্চ থেকে হাত নেড়ে নেতা-কর্মীদের শুভেচ্ছা জানান তিনি। মাঠে তার আগমনে যেন প্রাণ ফিরে পান নেতা-কর্মীরা। 

বিএনপির ময়মনসিংহ ও খুলনার বিভাগীয় সমাবেশের সময় গণপরিবহন বন্ধ করে দিয়েছিল পরিবহন মালিক-শ্রমিকরা। তাদের হাঠৎ ডাকা ধর্মঘটে সমাবেশে যোগ দিতে যাওয়া বিএনপি নেতা-কর্মীরা অনেকটাই বেকায়দায় পড়ে। তারপরও সমাবেশের আগের রাতেই হাজার হাজার নেতা-কর্মী সমাবেশস্থলে জড়ো হন।

একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটল রংপুরেও। রাত পোহালেই রংপুরে বিএনপির চতুর্থ বিভাগীয় গণসমাবেশ। শনিবার দুপুর থেকে শুরু হবে সমাবেশের মূল কার্যক্রম। তবে তার আগে রাতেই দলে দলে সমাবেশে হাজির হয়েছেন নেতা-কর্মীরা।

রংপুর শহরের কালেক্টরেট ঈদগাহ মাঠে অনুষ্ঠিত হবে বিএনপির ওই মহাসমাবেশ। বিএনপির মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে রংপুরে বন্ধ আছে বাস চলাচল। সম্মেলনকে ঘিরে বৃহস্পতিবার সবধরণের পরিবহনের ধর্মঘট আসে। শুক্রবার সকাল ৬টা থেকে শনিবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ধর্মঘটের কথা বলা হলেও কার্যত বৃহস্পতিবার দুপুর থেকে অনেক রুটে বাস চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।

এরই মধ্যে প্রস্তুত হয়েছে মাঠে মঞ্চের কাজ। নানা ধরনের বাধা উপেক্ষা করে যেসব নেতা-কর্মীরা যাচ্ছেন তারা অবস্থান নিচ্ছেন সমাবেশস্থলের মাঠেই।

সন্ধ্যার আগে থেকেই মাঠে বিভিন্ন জেলা থেকে আসা নেতা-কর্মীরা অবস্থান নিতে শুরু করেন।

রাত ১০টার দিকে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সমাবেশস্থল পরিদর্শনে যান। সে সময় তিনি মঞ্চ থেকে হাত নেড়ে নেতা-কর্মীদের শুভেচ্ছা জানান তিনি। মাঠে তার আগমনে যেন প্রাণ ফিরে পান নেতা-কর্মীরা।

সমাবেশকে ঘিরে আইনশৃঙ্খলা নিয়ে কঠোর অবস্থানের কথা জানিয়েছে নগর পুলিশ। বাড়ানো হয়েছে গোয়েন্দা তৎপরতা। যে কোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় তারা সর্বোচ্চ সতর্ক রয়েছে বলে জানান।

সরেজমিনে দেখা গেছে, যত রাত বাড়ছে, নেতা-কর্মীর ভিড় তত বাড়ছে। মাঠে নেতা-কর্মীদের ‘অ্যাকশন অ্যাকশন, ডাইরেক্ট অ্যাকশন’, ‘খালেদা জিয়ার মুক্তি চাই’, ‘ভয় করি না বুলেট-বোমা, আমরা সবাই জিয়ার সেনা’ এমন নানা ধরনের স্লোগান দিচ্ছেন।

পুরো সমাবেশস্থল ছোট ছোট দলে ভাগ হয়ে বিএনপি নেতা-কর্মীরা স্লোগান দিয়ে মাতিয়ে রাখছেন।

রাতের বেলায় রংপুরের পাশের জেলা-উপজেলা থেকে মোটরসাইকেলে বিচ্ছিন্নভাবে আসছেন কর্মীরা। এসব মোটরসাইকেল সমাবেশস্থলের অদূরে রেখে ছোটে ছোট মিছিল নিয়ে মাঠে প্রবেশ করছেন তারা।

অনেকে আবার নিজ নেতাকে জানান দিতে নেতার নাম জানিয়ে স্লোগানও দিচ্ছেন।

রাত সাড়ে ৯টার দিকেই কালেক্টরেট মাঠের একাংশ ভরে গেছে। রাত যত গভীর হচ্ছে, তত উপস্থিতি বাড়ছে।

মাঠের এক পাশে দেখা যায়, সমাবেশে যাওয়া কিছু নেতা-কর্মী মাঠে তাবু তৈরি করে শুয়ে পড়েছেন।

আলম বাবু নামে দিনাজপুরের বিরল উপজেলা থেকে আসা এক বিএনপি কর্মী বলেন, ‘আমরা দুপুরের ট্রেনে এসেছি। রংপুর স্টেশনে নামার পর আওয়ামী লীগের কিছু লোকজন ভয় দেখাচ্ছিল। বলছিল, খেলা হবে আসো, নানান ধরনের কথাবার্তা বলছিল। পরে রংপুরের নেতা গেলে তারা চলে যায়।’

তিনি বলেন, ‘হোটেলে জায়গা নাই, আত্মীয় স্বজনও নাই। তাই আমরা এক সঙ্গে দশ-বারো জন করে মাঠে শুয়ে আছি।’

বিকেলে সমাবেশস্থলে সংবাদ সম্মেলন করে অবশ্য বিএনপি নেতা-কর্মীদের সমাবেশে যোগ দিতে যেতে বাধা দেয়ার অভিযোগ করেন দলটির নেতারা। জানান, আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা বিএনপির নেতা-কর্মীদের পদে পদে বাধা দিচ্ছেন, হুমকি-ধামকি দিচ্ছেন যেন সমাবেশে যোগ দিতে না পারে সে জন্য।

হুমায়ুন কবির নামের আরেক জন জানান, তারা চিড়া মুড়ি আর গুড় নিয়ে এসেছেন সঙ্গে। রাতে সেগুলো খেয়েছেন। মাঠে অনেক লোক থাকায় কোনো সমস্যা নাই।

আনিছুর রহমান নামে এক বিএনপি কর্মী বলেন, ‘আমরা সম্মেলন সফল করার জন্য আসছি, গরীব-ধনী মানুষকে বাঁচানোর জন্য আসছি, হাসিনার পদত্যাগের জন্য আসছি। আমার নামে সাতটা মিথ্যা মামলা আছে। আমি জানিও না এসব কী জন্য দিছে।’

রুবেল ইসলাম বলেন, ‘আমার নামে তিনটা মামলা। এই মামলা কেন দিছে? এগুলা মিথ্যা মামলা। মামলা হামলা করে আমাদের দমানো যাবে না।’

তিনি বলেন, তারা ২৫০ জন গেছেন একসঙ্গে, তাদের নামে দুই একটা করে মামলা আছে।

রংপুর মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক সামছুজ্জামান সামু নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমাদের জাতীয় অনেক নেতৃবৃন্দ এসেছেন। আগামীকাল সকালে অনেকে আসছেন। প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখবেন আমাদের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। বক্তব্য রাখবেন আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, বেগম সেলিমা রহমান, ইকবাল হাসান মাহমুদ, ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন, সংসদ সদস্য হারুন অর রশীদ, আসাদুল হাবীব দুলুসহ অনেকে।’

শুক্রবার দুপুরে রংপুর নগর আওয়ামী লীগের নেতাদের বিলবোর্ডের উপর বিএনপি নেতাদের বিলবোর্ড লাগানোর অভিযোগ তুলে তা সরিয়ে নেয়ার আল্টিমেটাম দেয় নগর আওয়ামী লীগ। যদিও বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়, সিটি করপোরেশনের কাছ থেকে তিন দিনের ভাড়া নিয়ে সেগুলো লাগিয়েছেন তারা। বিলবোর্ড সরানোর দায়িত্ব বিএনপির নয়।

রংপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি সাফিয়র রহমান সফি বলেন, ‘তাদের সমাবেশে আমরা বাধা দিচ্ছি না। তারা শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রেখে করলে আমাদের বাধা নেই। তবে, অপ্রীতিকর কিছু ঘটালে তার দায়িত্ব বিএনপিকে নিতে হবে।’

রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার মো. আবু মারুফ হোসেন জানান, সমাবেশ হবে। যে কোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় তারা প্রস্তুত আছে।

এ বিভাগের আরো খবর