সোয়া লাখ টাকায় রোহিঙ্গাদের জাতীয় পরিচয়পত্র দিচ্ছেন নির্বাচন কমিশনের কিছু অস্থায়ী কর্মচারী। এ কাজে জড়িত থাকার অভিযোগে নির্বাচন কমিশনের ৫ ডাটা অ্যান্ট্রি অপারেটরসহ ২ রোহিঙ্গা ও স্থানীয় ৩ জনকে আটক করেছে চট্টগ্রাম মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ।
বুধবার সংবাদ সম্মেলন করে নগরের হালিশহর হাউজিং এস্টেট উচ্চ বিদ্যালয় থেকে তাদের আটকের কথা জানায় নগর গোয়েন্দা পুলিশের উপ-কমিশনার (পশ্চিম) মোহাম্মদ আলী হোসেন।
আটকদের মধ্যে কামাল হোসেন ও পারভীন আক্তার নামে দুই রোহিঙ্গা ছাড়াও নির্বাচন কমিশনের অস্থায়ী কর্মচারীরা হলেন- ডেটা অ্যান্ট্রি অপারেটর ইয়াসিন আরাফাত, নূরনবী, মিজানুর রহমান, ফরহাদুল ইসলাম ও ইমন দাস।
এ ছাড়া এ কাজে জড়িত থাকার অভিযোগে চাকরিচ্যুত স্থানীয় স্কুলশিক্ষক শামসুর রহমান, কক্সবাজারের বাসিন্দা নুরুল আবছার ও মো. কামাল নামে আরও তিনজনকে আটক করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে নগর গোয়েন্দা পুলিশের উপকমিশনার মোহাম্মদ আলী হোসেন জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জালিয়াতি করে এনআইডি কার্ড তৈরির চেষ্টাকালে হালিশহর হাউজিং এস্টেট উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ওই ১০ জনকে আটক করা হয়।
পুলিশের এ উর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, ‘আটক ব্যক্তিদের জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে, শামসুর রহমান রোহিঙ্গাদের কাছ থেকে ১ লাখ ৩০ হাজার করে টাকা নিয়ে আবছারকে দেন। আবছার বিভিন্ন মাধ্যমে রোহিঙ্গাদের জন্ম নিবন্ধন তৈরি করে নির্বাচন কমিশনের চুক্তিবদ্ধ ডেটা অ্যান্ট্রি অপারেটরদের মাধ্যমে জাতীয় পরিচয়পত্র তৈরি করতেন। এভাবে তারা জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে রোহিঙ্গাদের এনআইডিসহ বিভিন্ন ডকুমেন্ট তৈরি করে বিপুল অঙ্কের অর্থ হাতিয়ে নিতেন।’
মোহাম্মদ আলী হোসেন জানান, আটকদের মধ্যে শামসুর রহামন ওরফে শামসু মাস্টার কক্সবাজার পোকখালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ছিলেন। কিন্তু রোহিঙ্গাদের এনআইডি কার্ড তৈরিতে সম্পৃক্ততা পাওয়ায় তিনি চাকরিচ্যুত হন। এ ধরনের কাজের জন্য তার বিরুদ্ধে কক্সবাজার সদর থানায় এবং দুর্নীতি দমন কমিশন সমন্বিত জেলা কার্যালয়-২ এ একটি মামলাও রয়েছে।
আটক ১০ জনের বিরুদ্ধে ইতোমধ্যে মামলা করে তাদের গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে বলেও জানান পুলিশের এই কর্মকর্তা।