ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং-এ চট্টগ্রামে বঙ্গোপসাগরে ট্রলার ডুবে ৮ শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে কিনা- তা নিশ্চিত নয় ফায়ার সার্ভিস। পুলিশও বলছে, ধারণা করা হচ্ছে ওই ট্রলারে ভেতর মরদেহ আছে। তবে ফায়ার সার্ভিস মঙ্গলবার সন্ধ্যা পর্যন্ত কোনো মরদেহ পায়নি। উদ্ধারকারীরা ট্রলারের ভেতর তল্লাশি চালাবেন বলে জানিয়েছেন।
মীরসরাই ইকোনমিক জোন এলাকায় সোমবার রাত ১০টার দিকে এই দুর্ঘটনা ঘটে। তখন থেকেই নিখোঁজ ওই ট্রলারে থাকা ৮ শ্রমিক।
ফায়ার সার্ভিস জানিয়েছে, মঙ্গলবার সন্ধ্যা পৌনে ৬টা পর্যন্ত উল্টানো ট্রলারটি ওঠানো সম্ভব হয়নি।
মীরসরাই ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা ইমাম হোসেন পাটোয়ারী নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ট্রলারটির উপরের অংশ এখনও পানিতে। আমাদের সবার ধারণা, নিখোঁজ শ্রমিকদের মরদেহ ভেতরে আছে। তবে ভেতরে বা ট্রলারের নিচে আদৌ তাদের মরদেহ আছে কিনা সে বিষয়ে নিশ্চিত নই আমরা। থাকতেও পারে নাও থাকতে পারে।
‘আমাদের উদ্ধার অভিযান চলতেছে, ট্রলারটি ওঠানোর পর বুঝা যাবে।’
বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে ৮ মরদেহ উদ্ধারে খবর এসেছে বিকেল থেকে। মীরসরাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মিনহাজুর রহমানের বরাত দিয়ে অনেকে এ খবর জানিয়েছে।
এ বিষয়ে ইউএনও মিনহাজুর বলেন, ‘সকালে কয়েক প্রত্যক্ষদর্শী ওই নৌযানের ভেতর মরদেহের হাত-পা, মাথাসহ শরীরের বিভিন্ন অংশ দেখেছে। এই প্রত্যক্ষদর্শীদের মধ্যে দুজনের নাম রনি ও রাকিব। তারা বলেছে যে নৌযানটির ভেতর তারা মরদেহ দেখেছে। তাই ধারণা করা হচ্ছে ভেতরে কিছু মরদেহ আছে। তবে নিখোঁজ সবার মরদেহ ভেতরে রয়েছে কিনা নিশ্চিত না।’
বালু তোলার এই বিশেষ নৌযানগুলো স্থানীয়ভাবে ড্রেজার নামে পরিচিত। উল্টে যাওয়া ড্রেজারটি সৈকত এন্টারপ্রাইজ নামের একটি প্রতিষ্ঠানের।
ড্রেজারটি মীরসরাইয়ের অর্থনৈতিক জোনের হয়ে বালু তোলায় নিয়োজিত ছিল বলে জানান সাহেরখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কামরুল হায়দার চৌধুরী।
ড্রেজারে মরদেহ থাকার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘মরদেহ উদ্ধার হয়নি। তবে আশেপাশে অন্যান্য ট্রলারের লোকজন নিশ্চয়তা দিয়ে বলতেছে উল্টে যাওয়া ট্রলারের ভেতর নিখোঁজ শ্রমিকদের মরদেহ আছে। তাই ট্রলারটি উদ্ধার হলে ভেতরে সার্চ করলে বুঝা যাবে মরদেহ আছে কি নাই।’
ট্রলারটি উল্টে কাদায় আটকে যাওয়ায় উদ্ধারে দেরি হচ্ছে বলে জানান মীরসরাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কবির হোসেন।
তিনি বলেন, ‘ওখানে অনেক কাদা, ট্রলারটি উল্টে কাদায় আটকে গেছে। ধারণা করা হচ্ছে ভেতরে নিখোঁজ শ্রমিকদের মরদেহ আছে। তবে ডুবুরিরা নিচে গিয়ে ট্রলারের সামনে অংশে একটা কেবিনের মতো জায়গা আছে, ফাঁক দিয়ে সেখানে ঢুকে সার্চ করছে, কিছুই পায়নি। তবে পেছনের দিকে মরদেহগুলো থাকতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।’