ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং-এর প্রভাবে রাজধানীতে সোমবার ভোর থেকে শুরু হয়েছে বৃষ্টি। ভোরে একটু কম হলেও পরে তা শুরু হয়েছে মুষলধারে বৃষ্টি। বৃষ্টির কারণে রাজধানীর প্রায় প্রতিটি এলাকায় জলজট সৃষ্টি হয়। সে জলজটের কারণে দুপুরের পর থেকে নগরীর প্রায় প্রতিটি এলাকায় সৃষ্টি হয়েছে যানজট।
দুপুরের পরের সেই যানজট বিকেলের পর থেকে ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করেও অফিস শেষ করে বাসায় ফিরতে পারছেন না কর্মজীবীরা।
অতিবৃষ্টির কারণে জলজট, রাস্তায় গাছ ভেঙে পড়া, পানিতে গাড়ি বিকল হওয়ার পাশাপাশি নগরীর সিগন্যালগুলোতে পর্যাপ্ত সংখ্যক ট্রাফিক পুলিশ না থাকায় অনিয়ন্ত্রিতভাবে যান চলাচল করছে বলে অভিযোগ নাগরিকদের।
রাজধানীর মতিঝিল, পল্টন, শাহবাগ, ধানমন্ডি, মহাখালী, বনানী, গুলশান, বাড্ডা, বিমানবন্দর সড়ক ঘুরে দেখা গেছে, অধিকাংশ জায়গায় বৃষ্টি পানি জমে আছে। পানি জমার কারণে যান চলাচলের গতি অনেক কমে গেছে। ফলে যানজট শহরজুড়ে ছড়িয়েছে।
মতিঝিল থেকে বিকেল ৫টায় রওনা হয়ে সাড়ে ৭টায় কারওয়ান বাজার পৌঁছেছেন ব্যাংকার মো. শাহিন। আদাবরের বাসায় কয়টায় পৌঁছাতে পারবেন তা নিয়ে শঙ্কায় তিনি।
বলেন, ‘জায়গায় জায়গায় পানি জমে আছে। গাড়ি যেন সামনে যাচ্ছিলই না। আড়াই ঘণ্টায় কারওয়ান বাজার এসেছি। বাকিপথ যেতে কত সময় লাগবে বুঝতে পারছি না।’
শাহবাগ থেকে তেজগাঁও পৌঁছাতে আড়াই ঘণ্টার বেশি সময় লেগেছে বলে জানান মোহাম্মদ হক। তিনি বলেন, ‘রাস্তায় পানি জমে আছে। সড়কে পানির কারণে সিএনজিঅটোরিকশাসহ কিছু গাড়ি নষ্ট হয়ে পড়ে আছে। কারওয়ান বাজারের সড়ক পানিতে ডুবে আছে।’
একই লোকেশনে কলাবাগান থেকে এসেছেন মো. মাহবুব। তিনি বলেন, ‘আমার তিন ঘণ্টা সময় লেগেছে। গ্রিনরোডের প্রায় সব সড়ক পানিতে ডুবে আছে। গাড়িতে বসে থাকতে থাকতে কাহিল অবস্থা।’
সন্ধ্যার পর রমনা এলাকার যানজট তুলনামূলক কম ছিল বলে জানিয়েছে রমনা ট্রাফিক জোনের সিনিয়র সহকারী কমিশনার রেফাতুল ইসলাম।
তিনি বলেন, ‘অফিস শেষ হওয়ার পর আমার এলাকার গাড়িগুলো বের হতে পেরেছে। কিন্তু বের হওয়ার পর আর এগুতে পারছে না। বনানী উত্তরা সড়কে ভয়াবহ যানজট তৈরি হয়েছে।’
রাত সাড়ে ৮টায় এই ট্রাফিক কর্মকর্তা বলেন, ‘আমি এখন আছি তেজগাঁও বিজি প্রেসের সামনে। এখানে একটি গাছ ভেঙে রাস্তায় পড়ে আছে। ফলে গাড়ি চলাচল সীমিত হয়ে আছে।’
গাজীপুর মিলগেইট এলাকা, এয়ারপোর্ট সড়কেও পানি জমেছে। তাই দীর্ঘ যানজট তৈরি হয়েছে বনানী, বিমানবন্দর, আব্দুল্লাহপুর এলাকায়।
ট্রাফিক উত্তরা পূর্ব জোনের সহকারী কমিশনার রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘গাজীপুর ও এয়ারপোর্টে পানি জমেছে। পানি জমাটাই মূল সমস্যা। পানির কারণে আব্দুল্লাহপুর বিমানবন্দর সড়কে সন্ধ্যায় তীব্র যানজট ছিল।’
রাত ৯টার দিকে তিনি জানান, ‘এখন গাজীপুরের যানজট আব্দুল্লাহপুর পর্যন্ত আছে। আগে যেটা বিমানবন্দর পর্যন্ত ছিল।’