অনেক বাধা মোকাবিলা করে সফল গণসমাবেশ শেষ হলেও পুলিশ ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা এখনও খুলনাজুড়ে ত্রাসের রাজত্ব করছে বলে অভিযোগ করেছেন মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক শফিকুল আলম মনা।
রোববার বিকেলে নগরীর কে ডি ঘোষ রোডে দলীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে এমন অভিযোগ করেন মনা।
তিনি বলেন, ‘শাসক দলীয় ক্যাডার ও পুলিশের হামলায় বিএনপির খুলনা বিভাগীয় গণসমাবেশে অংশ নিতে গিয়ে পাঁচ শতাধিক নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। গ্রেপ্তার হয়েছেন মহানগর বিএনপির সদস্য খন্দকার হাসিনুল ইসলাম নিকসহ ১৩৭ জন।’
তিনি আরও বলেন, ‘বিএনপি নেতাকর্মীদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে হুমকি এবং ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ভাংচুর করা হচ্ছে। তছনছ করা হয়েছে মৎস্য রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান আছিয়া সি ফুড। দুটি বিএনপি অফিস পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে। রেল স্টেশনে ভাংচুর চালানোর অভিযোগ এনে জিআরপি থানায় এবং সংঘর্ষের অভিযোগে দৌলতপুর থানায় দুটি মামলা হয়েছে।’
মনা বলেন, ‘কর্মসূচি সফল করতে আমরা সমাবেশের আগেই একাধিক দফায় পুলিশ প্রশাসনের সাথে সাক্ষাৎ করে তাদের সহায়তা চেয়েছিলাম। পুলিশ কমিশনার আশ্বাসও দিয়েছিলেন। কিন্ত তারা প্রতিশ্রুতি রাখতে পারেননি। পরিবহন বন্ধ করা হয়েছে। লঞ্চ চলাচল, ট্রলার চলাচল বন্ধ করা হয়েছে। খুলনা আসার পথে নেতাকর্মীদের ওপর সশস্ত্র হামলা হয়েছে। অনেক স্থানে পুলিশও বিএনপি কর্মীদের সাথে সংঘাতে জড়িয়েছে।’
সকালে সংবাদ সম্মেলন করে বিএনপির কর্মসূচি নিয়ে আওয়ামী লীগ মিথ্যাচার করেছে বলে অভিযোগ করেন লিখিত বক্তব্যে মনা বলেন, ‘খুলনা মহানগরীর সকল থানায় আওয়ামী তাণ্ডবলীলা চলেছে। দিনভর সশস্ত্র অবস্থায় মোটরসাইকেল মহড়া ও অশালীন, কুরুচিপূর্ণ গালিগালাজ দিয়ে শ্লোগান দিয়েছে তারা। আগে থেকেই গণপরিবহন বন্ধ ছিল। প্রায় অচল নগরীতে জরুরি প্রয়োজনে যারা ঘর থেকে বেরিয়েছিলেন আওয়ামী সন্ত্রাসীদের মহড়ায় তারাও ভীত-সন্ত্রস্ত হয়েছেন।’
তিনি জানান, আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা মহানগর বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক মো. তাকিুল ইসলাম জহিরের মালিকানাধীন আছিয়া সি ফুডে হামলা চালিয়েছে। এ ছাড়া সাবেক কাউন্সিলর ও নগর বিএনপির সদস্য কে এম হুমায়ুন কবিরের বাসভবনেও হামলার ঘটনা ঘটেছে। হামলা হয়েছে কাউন্সিলর হাফিজুর রহমান মনির বাসভবনেও।
এ সময় খানজাহান আলী থানা বিএনপির নেতাকর্মীদের ওপর হামলার ঘটনায় আহত ৫৩ জনের নাম উল্লেখ করেন তিনি।
এ ছাড়াও মহানগরীর বিভিন্ন ওয়ার্ড বিএনপির নেতাকর্মীদের ওপর হামলা ও অনেকের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ভাংচুরেরও অভিযোগও করেন।
পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক বলেন, ‘পুলিশ বিএনপি নেতাদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভয়-ভীতি প্রদর্শন ও মামলায় আসামি করার হুমকি দিচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘আওয়ামী সন্ত্রাসীরা গুলি করে জনপ্রিয় ইউপি চেয়ারম্যান আবুল বাশারকে গুরুতর আহত করেছে। পাইকগাছা বিএনপির সভাপতি ডা. আব্দুল মজিদ, সাধারন সম্পাদক এনামুল হক, ডুমুরিয়া সভাপতি মোল্লা মোশারফ হোসেন মফিজ, দিঘলিয়া সভাপতি সাইফুর রহমান মিন্টুর বাড়িতে বাড়িতে হামলা ও মহড়া হয়েছে। ব্যাপক তাণ্ডব চলেছে ফুলতলা উপজেলায়। তেরখাদা, দিঘলিয়া, বটিয়াঘাটা, পাইকগাছা, রূপসা সর্বত্র হামলা ও মহড়া চলছে।’
সংবাদ সম্মেলনে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আমীর এজাজ খান, জেলা বিএনপির সদস্য সচিব মনিরুল হাসান বাপ্পী, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক মো. তারিকুল ইসলাম জহির, আবু হোসেন বাবুসহ বিএনপির আরও অনেক নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।