রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শিক্ষার্থী শাহরিয়ারের মৃত্যুকে কেন্দ্র করে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে শিক্ষার্থীদের হামলার ঘটনায় দুটি দাবি পূরণ না হওয়ায় আলটিমেটাম শেষে ফের তিন দিনের কর্মবিরতির ঘোষণা দিয়েছেন ইন্টার্ন চিকিৎসকরা।
শনিবার দুপুর দেড়টার দিকে এক মানববন্ধনে এ ঘোষণা দেন রামেক হাসপাতাল ইন্টার্ন চিকিৎসক পরিষদের সভাপতি ইমরান হোসেন।
এর আগে ৭২ ঘণ্টার আলটিমেটাম দিয়ে শুক্রবার সকাল থেকে কাজে ফেরার ঘোষণা দিয়েছিলেন ইন্টার্ন চিকিৎসকরা। এর মধ্যে আসামিরা গ্রেপ্তার না হলে শনিবার থেকে কঠোর আন্দোলনে যাবেন বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন তারা।
তাদের দুই দফা দাবি ছিল, হামলার ঘটনায় মামলা রেকর্ড করা ও জড়িতদের গ্রেপ্তার করা। এ দাবি পূরণ না হওয়ায় শনিবার মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেন ইন্টার্নরা। কর্মসূচি থেকে আবারও তিন দিনের কর্মবিরতির ঘোষণা দেন তারা।
ইন্টার্ন চিকিৎসক পরিষদের সভাপতি ইমরান হোসেন বলেন, ‘আমরা দুই দফা দাবি দিয়ে হাসপাতালে কাজে ফিরেছিলাম। কিন্তু ৭২ ঘণ্টা পার হলেও এখন পর্যন্ত মামলা রেকর্ড হয়নি, এমনকি কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়নি। তাই পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী আজ এই মানববন্ধন থেকেই আমরা আগামী ৩ দিনের জন্য কর্মবিরতিতে যাচ্ছি।’
এই তিন দিন হাসপাতালের প্রধান ফটকে অবস্থান কর্মসূচি পালন করবেন তারা। শনিবারের কর্মসূচির পর আর কাজে যোগ দেননি ইন্টার্ন চিকিৎসকরা।
বুধবার রাত ৮টার দিকে শহীদ হবিবুর রহমান হলের তৃতীয় তলার বারান্দা থেকে পড়ে যান মার্কেটিং বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী মো. শাহরিয়ার। উদ্ধার করে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়। জরুরি বিভাগ থেকে তাকে ৮ নম্বর ওয়ার্ডে নেয়া হয়। কিছুক্ষণ পরই সেখানে শাহরিয়ারকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক।
চিকিৎসকের অবহেলায় তার মৃত্যু হয়েছে- এমন অভিযোগ তুলে হাসপাতালে ব্যাপক ভাঙচুর চালান শিক্ষার্থীরা। এ ঘটনায় লাঞ্ছিত হন কয়েকজন ইন্টার্ন চিকিৎসক।
এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার রাজপাড়া থানায় অজ্ঞাতপরিচয় ৩০০ জনকে আসামি করে অভিযোগ করেন রামেক হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত প্রশাসনিক কর্মকর্তা আনোয়ার হোসেন। কিন্তু শনিবারও মামলা রেকর্ড হয়নি।
এ বিষয়ে রাজশাহী মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার রফিকুল আলম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এ ঘটনার পর মতিহার থানায় একটি ইউডি মামলা হয়েছে। তাছাড়া পুলিশ বিষয়টি তদন্ত করেছে।’
মামলার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘এ ঘটনায় যেহেতু তদন্ত কমিটি গঠিত হয়েছে। তাদের তদন্ত প্রতিবেদনের জন্যও পুলিশ অপেক্ষা করছে। তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন দেয়ার পর সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।’