বাংলার মাটিতে জিন্দেগিতে তত্ত্বাবধায়ক সরকার হবে না বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম।
শেখ রাসেলের জন্মদিন উপলক্ষে জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক আলোচনা সভায় শনিবার তিনি এ কথা বলেন।
বিএনপির উদ্দেশে কামরুল ইসলাম বলেন, ‘ন্যাড়া বেলতলায় একবারই যায়। ওই তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাংলার মাটিতে জিন্দিগিতে প্রতিষ্ঠিত হবে না। প্রশ্নই আসে না। যত আন্দোলন করেন, যতই লাফালাফি করেন ওই অবস্থায় বাংলাদেশ ফিরে যাবে না।’
তার মতে, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কফিনে শেষ পেরেক মেরেছিল বিএনপি। সেটা ২০০৬ সালে। সেবার তিন মাসের ক্ষমতা নিয়ে দুই বছর ছিল তত্ত্বাবধায়ক সরকার।
তাই সে পথ আর আওয়ামী লীগ বা সরকার কেউই চায় না জানিয়ে তিনি বলেন, ‘মাইনাস থিউরিতে আমার নেত্রীকে জেলে নিয়েছিল, তোমার নেত্রীকে জেলে নিয়েছিল। আজকে খালেদা জিয়া যেই মামলায় জেলে, সে মামলা তখনকার তথাকথিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে হয়েছিল। তাদের নেতা-কর্মীদের ওপর নির্যাতন করেছিল, আমাদের নেতা-কর্মীদের ওপর নির্যাতন হয়েছিল, সেই কথা কী আমরা ভুলে গেছি।
‘তারেক রহমানকে যেভাবে পিটিয়েছে, মেরুদণ্ডের হাড় ভেঙে দিয়েছিল তখন আর্মিরা, নাকে খত দিয়ে দেশ ছাড়তে হয়েছিল। হেঁটে যেতে পারে নাই, দেশ ছাড়তে হুইলচেয়ারে করে এয়ারপোর্ট যেতে হয়েছিল। এই স্মৃতি কী তাদের মনে পড়ে না? বেহায়ার মতো আবার নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কথা বলে। আবার সেই তত্ত্বাবধায়ক সরকার চায়।’
কামরুল ইসলাম বলেন, ‘যতই আমরা চিন্তা করি না কেন একটি শান্তিপূর্ণ বাংলাদেশ। শেখ রাসেলের মতো শিশুদের একটা শান্তিপূর্ণ দেশ, আদর্শ বাংলাদেশ গড়তে চাই, এরা যতদিন রাজনীতিতে থাকবে এটা কোনো অবস্থাতেও সম্ভব হবে না। এদেরকে রাজনীতি থেকে বিতাড়িত করতে হবে।’
বাংলাদেশে সরকারে থাকবে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি, বিরোধী দলেও থাকবে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি। আর বিএনপির মতো দলকে বিতাড়িত করতে হবে বলেও বক্তব্য দেন কামরুল ইসলাম।
আওয়ামী লীগের এই নেতা বলেন, ‘তাদের যে কথাবার্তা, লজ্জা লাগে। আমাদেরকে পায়ে পাড়া দিয়ে ঝগড়া করতে চায়। যে ভাষায় আমাদের লোকজনকে হুঙ্কার দিচ্ছে, আমাদের নেতা-কর্মীদের উত্তেজিত করার জন্যে, আমাদের তৃণমূল নেতা-কর্মীরা যাতে উত্তেজিত হয়, তাদের ওপর আক্রমণ করে তেমন বক্তব্য দিচ্ছে। আমাদের নেতা-কর্মীরা ধৈর্য ধরে আছে। এ জন্য তারা অরাজনৈতিক ভাষায়, নোংরা ভাষায় আস্ফালন করছে। তাই পরিষ্কার করে বলতে চাই, এদেরকে আর বরদাস্ত করা হবে না, মাঠে থাকতে দেয়া যাবে না।’
বিএনপি জামায়াতকে ছাড়ার কথা মুখে বললেও আন্দোলনে তাদের সঙ্গে নিয়েই মাঠে নেমেছে বলেও অভিযোগ করেন কামরুল ইসলাম।
অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর আরেক সদস্য মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বলেন, ‘বিএনপি একটা সুযোগের অপেক্ষায় আছে। ছোট-বড় সুযোগকে পুঁজি করেই তারা ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করতে চায়। নির্বাচনের আরও এক বছর আছে। এর আগেই তারা ক্ষমতা দখলের জন্য উল্টো পথে ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য পাঁয়তারা শুরু করেছে।’
১০ ডিসেম্বরের পর খালেদা জিয়ার কথায় দেশ চলবে বলে বিএনপি নেতাদের যে বক্তব্য দিয়েছেন সেটিও সমালোচনা করেন তিনি।
বলেন, ‘ডিসেম্বর রক্তে ভেজা মাস, সে মাসে সন্ত্রাসীদের সাথে নিয়ে স্বাধীনতার পক্ষের শক্তির বিরুদ্ধে দাঁড়াতে চায় বিএনপি। আমান উল্লাহ আমানের মতো নেতা বক্তব্য দেয়, ১০ তারিখের পরে শেখ হাসিনার সরকার ক্ষমতায় থাকবে না। স্বাধীনতার মাসে স্বাধীনতার পক্ষের শক্তির বিরুদ্ধে তারা ঘোষণা দেয়। বিজয়ের মাসে বিএনপিকে সারা দেশের কোথাও নামতে দেয়া হবে না। সারা মাসব্যাপী আমাদের কর্মসূচি থাকবে। সকালে একটা, বিকেলে আরেকটা।’