বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

১১ ডিসেম্বর তারেকের ফেরার ঘোষণাও ‘কথার কথা’

  •    
  • ২১ অক্টোবর, ২০২২ ১৭:২৮

১০ ডিসেম্বর থেকে দেশ বেগম খালেদা জিয়ার নির্দেশে চলবে বলে বক্তব্য দিয়ে বিএনপি নেতা আমানউল্লাহ আমান যে বক্তব্য রেখেছেন, সেটি কথার কথা ছিল- এটা পরে প্রকাশ পেয়েছে। এবার নারায়ণগঞ্জ বিএনপির এক নেতা সুনির্দিষ্ট তারিখ জানিয়ে বলেছেন, তাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ১১ ডিসেম্বর দেশে ফিরবেন।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান আগামী ১১ ডিসেম্বর দেশে ফিরছেন বলে নারায়ণগঞ্জের এক বিএনপি নেতার বক্তব্যে রাজনীতিতে নতুন আলোচনা তৈরি হলেও এ বিষয়ে কোনো সুনির্দিষ্ট তথ্য নেই তার কাছে।

নিউজবাংলাকে সেই নেতা বলেছেন, তিনি ধারণা থেকে এই কথা বলেছেন। দলের কেউ তাকে বলতে বলেনি।

এর আগে বিএনপির তিন কেন্দ্রীয় নেতা আমানউল্লাহ আমান, শহীদউদ্দিন চৌধুরী এ্যানী ও মীর নাছিরউদ্দিন আহমেদ ১০ ডিসেম্বর থেকে বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের নির্দেশে দেশ চলবে বলে যে বক্তব্য দিয়েছিলেন, সেটি নিয়ে আলোচনা এরই মধ্যে মিইয়ে গেছে এ কারণে যে, বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, এটি তাদের দলের অবস্থান নয়। ১০ ডিসেম্বর নিয়ে বিশেষ কোনো পরিকল্পনা নেই। তবে সেদিন ঢাকায় বিভাগীয় সমাবেশ করতে চায় দলটি।

২০০৭ সালে সেনা সমর্থিত সরকারের আমলে গ্রেপ্তার হওয়ার পরের বছর চিকিৎসার জন্য প্যারোলে মুক্তি পেয়ে যুক্তরাজ্যে যান। তিনি আগামী ১১ ডিসেম্বর দেশে ফিরবেন বলে বিএনপির একটি কর্মসূচিতে নারায়ণগঞ্জের একজন নেতা বক্তব্য দিয়ে আলোড়ন তুলেছেন, যদিও দলটির শীর্ষ নেতারা কিছুই বলছেন না।

সরকার তারেককে দেশে ফেরাতে উদগ্রীব এ কারণে যে, তিনি যেসব মামলায় দণ্ডিত হয়েছেন, তার মধ্যে আছে ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলা। এই মামলায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ছাড়াও বিদেশে অর্থপাচার মামলায় তার সাত বছরের জেল ও ২০ কোটি টাকা জরিমানা, জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় ১০ বছরের জেল ও ২ কোটি ১০ লাখ টাকা জরিমানা, বঙ্গবন্ধুকে কটূক্তির এক মামলায় তার দুই বছরের দণ্ড হয়েছে। কিন্তু দেশের বাইরে অবস্থান করায় কোনো দণ্ড কার্যকর করা যাচ্ছে না।

২০০৭ সালে সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে তারেক রহমান গ্রেপ্তার হন। পরের বছর প্যারোলে মুক্তি পেয়ে চিকিৎসার জন্য তিনি যুক্তরাজ্যে গিয়ে আর ফেরেননি। এরপর মোট চারটি মামলায় তার সাজা হয়েছে

২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় বেগম খালেদা জিয়া কারাগারে যাওয়ার পর সেই রাতেই তারেক রহমানকে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান করে বিএনপি। ২০২০ সালের ২৫ মার্চ দণ্ড স্থগিত হওয়ার পর খালেদা জিয়া বাসায় ফিরলেও এখনও বিএনপি তার ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান পদটি রেখে দিয়েছে। রাজনীতি নিয়ে সাবেক প্রধানমন্ত্রী কোনো মাথাই ঘামাচ্ছেন না।

বিএনপি নেতাকে ফেরাতে সরকার যুক্তরাজ্য সরকারের সঙ্গে দেনদরবারও করছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত দৃশ্যমান কোনো অগ্রগতি নেই। বিএনপি নেতা দেশটিতে রাজনৈতিক আশ্রয়ে আছেন বলে দলের পক্ষ থেকেই নিশ্চিত করা হয়েছে। সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জানিয়েছেন, খালেদা জিয়ার বড় ছেলে সে দেশের নাগরিকত্বও নিয়েছেন।

তারেকের দেশে ফেরা নিয়ে তারিখ ধরে যে ঘোষণা

বৃহস্পতিবার বিকেলে নারায়ণগঞ্জে বিএনপির এক বিক্ষোভে দলটির জেলা শাখার সদস্যসচিব মামুন মাহমুদ বলেন, ‘আগামী ১০ ডিসেম্বর ঢাকার সমাবেশে। এটি হলো শেষ সমাবেশ। ওই সমাবেশে এই সরকারের বিদায় ঘণ্টা বাজবে। সমাবেশের পর এই সরকারের পতন হবে। পরপদিন ১১ ডিসেম্বর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান দেশে ফিরবেন এবং সেদিন থেকেই তার নির্দেশে দেশ চলবে।’

সেই দিনটি ঘিরে বিএনপির কী পরিকল্পনা সেটি উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘সবাই আমরা তারেক রহমানকে বরণ করতে ১১ তারিখে বিমানবন্দরে যাব। যে বিমানবন্দরের নাম তারা পরিবর্তন করেছে সেই বিমানবন্দরের নাম আবারও জিয়া আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর হবে।

‘আমরা তারেক রহমানকে বিমানবন্দর থেকে এগিয়ে নিয়ে বঙ্গভবন ও গণভবনে তাকে বসাব। তাকে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী বানিয়ে তারপর আমরা রাজপথ ছাড়ব। অবৈধ সরকারের নির্দেশ আর চলবে না।’

ঢাকার সমাবেশে নারায়ণগঞ্জের সব নেতাকর্মীরা রজনীগন্ধা নিয়ে সমাবেশে হাজির হবেন জানিয়ে তিনি বলেন, ‘সেই রজনীগন্ধা দিয়ে বেগম খালেদা জিয়াকে মঞ্চে বরণ করে নেব। তিনি মঞ্চে উঠে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেবেন। এই রজনীগন্ধা দিয়ে এই অবৈধ জালেম সরকারকে আমরা পদত্যাগে বাধ্য করব।’

তারেকের ফেরার দিনক্ষণ কীভাবে জানেন মামুন?

তারেক রহমান যে ১১ ডিসেম্বর দেশে আসছেন- এই তথ্যটি কীভাবে জানলেন, জানতে চাইলে বিএনপি নেতা মামুন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমরা মনে করি ১০ ডিসেম্বরের সমাবেশের মধ্যে সরকারের পতন হবে। ১০ ডিসেম্বরের মধ্যে সরকারের শেষ ঘণ্টা বাজবে। এরপরপরই আমাদের নেতা বাংলাদেশে আসবে।’

তারেক রহমান কি আপনাদেরকে ১১ ডিসেম্বরের কথা জানিয়েছেন?- এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘দলের সিনিয়র নেতাদের মধ্যে তো নানা আলোচনা হয়। তাদের মতামতের ভিত্তিতেই আমি বলেছি ওই ওইদিন আসবেন।’

সেই সিনিয়র নেতা কারা- সেই বিষয়টি অবশ্য জানাননি মামুন। পরে আবার বলেন, ‘দলের নেতাকর্মীরা জানেন ওই দিন তারেক রহমান আসবেন। তাছাড়া আমরা এটা বুঝতে পারি। আমাদের ধারণা থেকেই।’

বৃহস্পতিবার নারায়ণগঞ্জে বিএনপির এক সমাবেশে দিনক্ষণ ধরে তারেক রহমানের দেশে ফেরার কথা জানান দলটির জেলা শাখার সদস্যসচিব মামুন মাহমুদ

-আপনি কিভাবে নিশ্চিত হয়েছেন?

মামুন বলেন, ‘আমার ধারণাগত দিক থেকে আমি ওই বক্তব্য দিয়েছি। যদি ওই দিন তিনি আসেন তাহলে কেন্দ্রীয় নেতারা তো কর্মসূচি দেবেনই এবং আমরাও যাব তাকে বরণ করতে। আমরা এটাই ধারণা করছি।’

-কেন এমন ধারণা?

নারায়ণগঞ্জ বিএনপির সদস্যসচিব বলেন, ‘সকল বিভাগের সমাবেশ শেষে ঢাকায় হবে মহাসমাবেশ। ওইদিন সরকারকে পদত্যাগ করতে বাধ্য করা হবে। ওইদিন আওয়ামী সরকারের শেষ দিন। দেশের গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে মহাসমাবেশ হবে এবং সরকারের পদত্যাগ হবে। আর সরকার পদত্যাগ করলে তো পরদিনই তারেক রহমান দেশে ফিরে আসবেন। এটাই আমার ধারণা৷’

পরে তিনি আবার বলেন, ‘তবে এটা নিয়ে এখনও কোনো কেন্দ্রীয় কর্মসূচি প্রণয়ন হয় নাই। যদি তিনি (তারেক রহমান) আসেন তাহলে আমরা তাকে আনতে বিমানবন্দরে যাব।’

মামুনের বক্তব্য নিয়ে প্রশ্নে বিরক্ত গয়েশ্বর

তারেক রহমানের ১১ ডিসেম্বরের ফেবার বিষয়ে দলের নারায়ণগঞ্জ শাখার সদস্যসচিবের বক্তব্যের বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এর ওর বক্তব্য ধরে আমাকে বিরক্ত করবেন না।’

তিনি বলেন, ‘তারেক রহমান যদি এসে থাকেন, সেটার ঘোষণা তো দেবেন মহাসচিব। আবার সেটা যদি না বলার থাকে, সেটাও সিদ্ধান্ত দলের। যারা বক্তব্য দিচ্ছেন, তার কাছেই জানতে চান তথ্যের সূত্রপাত কোথায়?’

এ বিভাগের আরো খবর