বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

‘চিটার সর্দারের’ অভিযোগের প্রমাণ, বহিষ্কার চায় ছাত্রলীগের তদন্ত কমিটি

  •    
  • ১৯ অক্টোবর, ২০২২ ১৯:৫২

শিবির কর্মী থেকে রাজশাহী জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি বনে যাওয়া সাকিবুল ইসলাম রানার যে মোবাইল ফোনালাপ ফেসবুকে ফাঁস হয়েছিল, তাতে তিনি বলেন, ‘বহুত চিটারি-বাটপারি কইরি ছাত্রলীগের প্রেসিডেন্ট হইসি, আমি সব চিটারের সর্দার।’এরপর রানা ও তাদের অনুসারীদের বিরুদ্ধে তদন্ত কমিটি গঠন করে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। তাদের চার জনকে সংগঠন থেকে বের করে দেয়ার সুপারিশ এসেছে।

শিবির কর্মী থেকে ছাত্রদল হয়ে রাজশাহী জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি বনে যাওয়া সাকিবুল ইসলাম রানার বিরুদ্ধে উঠা নানা অভিযোগের প্রমাণ পাওয়ার কথা জানিয়ে তাকেসহ চার জনকে সংগঠন থেকে বহিষ্কারের সুপারিশ করা হয়েছে।

অন্য তিন নেতা হলেন, জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন অমি, ১ নং সহসভাপতি রাসেল আহমেদ ও ১নং যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাসিবুল হাসান শান্ত।

তাদের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ উঠার পর কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ যে কমিটি করে দিয়েছিল, তারা তদন্ত শেষে প্রতিবেদন দিয়ে বলেছে, এই চার নেতার কর্মকাণ্ড চাত্রলীগের গঠনতন্ত্র ও আদর্শের সঙ্গে চরম মাত্রায় সাংঘর্ষিক।

রানার বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ সামনে আসে, যখন এক নারী কর্মীর সঙ্গে অসদাচরণের একটি অডিও ফেসবুকে ভাইরাল হয়। তার বিরুদ্ধে চাকরি দেয়ার নামে টাকা আদায়ের অভিযোগে মামলাও হয়েছে।

ফাঁস হওয়া কথোপকথনে শোনা যায়, রানা বলছেন, ‘বহুত চিটারি-বাটপারি কইরি ছাত্রলীগের প্রেসিডেন্ট হইসি, আমি সব চিটারের সর্দার।’

জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন অমির বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে ফেনসিডিল সেবনের অভিযোগ আছে।

রানা ও অমির এই অভিযোগ প্রকাশ্যে আসার পর তুমুল আলোচনা তৈরি হয়। পরে এসব অভিযোগ তদন্তে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে তিন সদস্যের একটি গঠন করা হয়।

ছাত্রলীগের গণযোগাযোগ ও উন্নয়ন বিষয়ক সম্পাদক শেখ শামীম তুর্য, উপ আইন বিষয়ক সম্পাদক আপন দাস, সহ-সম্পাদক তানভীর আব্দুল্লাহ সেপ্টেম্বরের শেষে রাজশাহী গিয়ে তদন্ত করেন।

সে সময় তাদের যাতায়াত ও রাজশাহীতে থাকা খাওয়ার খরচ অভিযুক্তরা বহন করেছেন- এমন একটি কথা ছড়িয়ে পড়ে। যদিও পরে তুর্য নিউজবাংলার কাছে এই অভিযোগ অস্বীকার করেন।

তবে তদন্ত প্রতিবেদনে কমিটি রানাদের বিরুদ্ধেই সুপারিশ করেছে। গত মাসেই এই প্রতিবেদন জমা পড়েছে। তবে এখনও কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি কেন্দ্রীয় কমিটি।

তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়ার বিষয়টি বুধবার নিউজবাংলাকে নিশ্চিত করেছেন কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সাদ বিন কাদের। তবে প্রতিবেদনে কী সুপারিশ করা হয়েছে সে সম্পর্কে কিছু বলতে চাননি তিনি।

ছাত্রলীগের অন্য একজন নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, তদন্ত প্রতিবেদন জমা হলেও কেন্দ্রীয় কমিটির একটি অংশ তা প্রকাশ না করার পক্ষে। এমনকি তদন্ত কমিটি যে সুপারিশ করেছে তার বাস্তবায়ন না করার পক্ষে। একারণে শেষ পর্যন্ত রাজশাহী জেলা ছাত্রলীগের অভিযুক্ত নেতাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়া হবে কি না এ নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন তিনি।

তদন্ত প্রতিবেদনের একটি কপি এসেছে নিউজবাংলার হাতে। এতে দেখা যায়, প্রতিবেদনের মন্তব্যের জায়গায় লেখা রয়েছে, ‘বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কর্তৃক গঠিত তদন্ত সমস্ত তথ্য-প্রমাণ পর্যালোচনা করে এই সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছে যে রাজশাহী জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক, ১ নং সহ সভাপতি (রাসেল আহমেদ) ও ১নং যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক (হাসিবুল হাসান শান্ত) যে সকল কর্মকাণ্ডে জড়িত তা বাংলাদেশ ছাত্রলীগের গঠনতন্ত্র ও আদর্শের সাথে চরম মাত্রায় সাংঘর্ষিক।

‘এমতাবস্থায় রাজশাহী জেলা ছাত্রলীগের মতো একটি গুরুত্বপূর্ণ ইউনিট এদের দ্বারা পরিচালিত হলে সংঘটনের ভাবমূর্তি চরম ভাবে বিনষ্ট হবে যা আমাদের তদন্তে উঠে এসেছে। সুতরাং তাদের স্থায়ী বহিষ্কারের জোর সুপারিশ করছি।’

কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের উপআইন বিষয়ক সম্পাদক আপন দাসের সঙ্গে মুঠোফনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘আমরা কেন্দ্রীয় কমিটির কাছে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেছি। এটি নিয়ে তারা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।’

তদন্ত প্রতিবেদন গত মাসেই জমা দেয়ার তথ্য নিশ্চিত করেছেন সহ-সম্পাদক তানভীর আব্দুল্লাহ। তিনি বলেন, ‘আমরা আমাদের দায়িত্ব পালন করেছি। এখন যে সুপারিশ করেছি সেটি কার্যকর করার দায়িত্ব কমিটির।’

কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ কী সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছে বা তারা সিদ্ধান্ত নিতে দেরি করছে কেন-জানতে সংগঠনের সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় ও সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্যকে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি।

এ বিভাগের আরো খবর