উচ্চ আদালতের নির্দেশনা যথাযথভাবে প্রতিপালন না করায় কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক (ডিসি) মামুনুর রশীদকে সতর্ক করেছে হাইকোর্ট।
আদালতের নির্দেশে বুধবার তিনি হাজির হলে বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি রাজিক আল জলিলের হাইকোর্ট বেঞ্চ তাকে সতর্ক করে।
এ সময় আদালত বলে, ‘আদালতের আদেশ পালন না করলে আপনার ক্যারিয়ার শেষ হয়ে যাবে। আমরা পত্রিকা-টিভিতে দেখি কক্সবাজারের সৌন্দর্য রক্ষায় আপনার ভূমিকা শুধু জিরোতে নয়, বরং নেগেটিভ।’
পরে ডিসি ক্ষমা চাইলে আদালত অবমাননার অভিযোগে ব্যক্তিগত হাজিরা থেকে অব্যাহতি দেয় হাইকোর্ট বেঞ্চ।
সকালে আদালতের নির্দেশে কক্সবাজার জেলা প্রশাসক মামুনুর রশীদ হাইকোর্টে হাজির হন। এরপর আদালত এ বিষয়ে শুনানির জন্য দুপুরে সময় নির্ধারণ করে দেয়।
আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মনজিল মোরসেদ। আর জেলা প্রশাসকের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মোমতাজ উদ্দিন ফকির।
পরে আইনজীবী মনজিল মোরসেদ সাংবাদিকদের বলেন, ‘আদালত আজকে শুনানি শেষে বলেছেন, আগামী ৩১ অক্টোবরের পরে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে আগামী ৯ নভেম্বরের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিল করতে নির্দেশ দিয়েছেন।’
এর আগে জেলা প্রশাসক প্রতিবেদন দিয়ে জানায়, ৪১৭টি অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়েছে। ২৩৩টি অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে চেম্বার জজ আদালতের নিষেধাজ্ঞা থাকায় তা উচ্ছেদ করা হয়নি।
আদালত অবমানার বিষয়ে এক আবেদনের শুনানি নিয়ে গত ২৫ আগস্ট হাইকোর্টের এই বেঞ্চ কক্সবাজারের ডিসিকে তলব করেছিল। সে তলব অনুযায়ী বুধবার তিনি হাইকোর্টে হাজির হন।
ডিসি ছাড়া আরও চারজনের বিরুদ্ধে রুল জারি করেছিল হাইকোর্ট। তারা হলেন কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট কর্নেল ফোরকান আহমেদ, টাউন প্ল্যানার তানভীর হাসান, কক্সবাজারের পুলিশ সুপার হাসানুজ্জামান ও পৌরসভার মেয়র মজিবর রহমান।
গত ৭ ফেব্রুয়ারি তাদের আইনি নোটিশ দেয়া হয়েছিল। নোটিশের সন্তোষজনক জবাব না পাওয়ায় আদালত অবমাননার আবেদন করে হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশ (এইচআরপিবি)।
কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত এলাকার অবৈধ দখল ও স্থাপনা উচ্ছেদের জন্য নির্দেশ দিয়ে ২০১১ সালের ৭ জুন রায় দেয় হাইকোর্ট। ওই রায়ের আলোকে কয়েক দফা নির্দেশনা দিলেও তা সম্পূর্ণ বাস্তবায়ন করা হয়নি। এ কারণে ফের আদালত অবমনানার অভিযোগ করা হয় বলে জানান আবেদনকারীর আইনজীবী মনজিল মোরসেদ।