বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

ঢাবির হল প্রাধ্যক্ষকে ‘মৃত’ ঘোষণা

  •    
  • ১৮ অক্টোবর, ২০২২ ১৫:৪০

ঢাবির মাস্টারদা সূর্যসেন হলের এক শিক্ষার্থী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে আমাদের হলের ক্যানটিন বন্ধ। এক দোকানি খারাপ (মানহীন) খাবার দেয় এ জন্য শিক্ষার্থীরা সেই দোকান বন্ধ করে দিয়েছিল। পরে কোনো শাস্তি না দিয়ে সেই দোকান খুলে দিয়েছেন হল প্রাধ্যক্ষ। আমাদের যে ওয়াশরুমগুলো সেগুলো খুবই অপরিচ্ছন্ন। এসব সমস্যা সমাধানে প্রাধ্যক্ষ উদ্যোগী নন। আর তিনি নিয়মিত হল অফিসে আসেন না। এসব কারণে শিক্ষার্থীরা ক্ষুব্ধ। তাই হয়তো কেউ এ কাজ করে থাকতে পারে।’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মাস্টারদা সূর্যসেন হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক মোহাম্মদ মকবুল হোসেন ভুঁইয়া মারা গেছেন উল্লেখ করে হলের বিভিন্ন স্থানে কয়েকটি বিজ্ঞপ্তি সাঁটিয়েছেন একদল শিক্ষার্থী। তবে কারা এটি করেছে, সেটি জানা যায়নি।

মঙ্গলবার হলের উত্তর-পশ্চিম পাশের সিঁড়িসহ আরও কয়েকটি জায়গায় এই সাঁটানো ব্যানার দেখা যায়। তবে বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে হল অফিসের কর্মচারীরা সেগুলো তুলে ফেলে দেন।

একাধিক শিক্ষার্থী জানান, হলে দীর্ঘদিন ধরে খাবারের ক্যানটিন বন্ধ, অপরিচ্ছন্ন পয়োনিষ্কাশন ব্যবস্থা, লিফট না থাকাসহ নানাবিধ সমস্যা রয়েছে। আর প্রাধ্যক্ষও নিয়মিত হল অফিসে আসেন না। এসব নিয়ে শিক্ষার্থীরা ক্ষুব্ধ। তাই হয়তো কেউ এই কাজ করতে পারেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মাস্টারদা সূর্যসেন হলের প্রবেশপথ। ফাইল ছবি

হল প্রাধ্যক্ষ মোহাম্মদ মকবুল হোসেন ভুঁইয়া বলেছেন, কারা করেছে এটি বের করতে পারলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

‘এ ছাড়া আমাদের যে ওয়াশরুমগুলো সেগুলো খুবই অপরিচ্ছন্ন। এসব সমস্যা সমাধানে প্রাধ্যক্ষ উদ্যোগী নন। আর তিনি নিয়মিত হল অফিসে আসেন না। এসব কারণে শিক্ষার্থীরা ক্ষুব্ধ। তাই হয়তো কেউ এ কাজ করে থাকতে পারে।’

সাঁটানো এই বিজ্ঞপ্তির মাঝে অধ্যাপক মকবুল হোসেন ভুঁইয়ার ছবি দিয়ে ওপরে লেখা হয়, শোক সংবাদ। এর নিচে লেখা হয়, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মাস্টারদা সূর্য সেন হলের সম্মানিত প্রভোস্ট মকবুল হোসেন ভূঁইয়া ইন্তেকাল করেছেন। (ইন্না লিল্লাহ...)’

‘তাঁর অকাল প্রয়াণে মাস্টারদা সূর্য সেন হল পরিবার অত্যন্ত শোকাহত। মৃত্যুকালে তিনি ১ ছেলে, ১ মেয়ে, স্ত্রী এবং অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।’

বিজ্ঞপ্তির নিচে লিখা হয়, শোকান্তে: মাস্টারদা সূর্য সেন হল পরিবার।

এ বিষয়ে হলের এক শিক্ষার্থী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে আমাদের হলের ক্যানটিন বন্ধ। এক দোকানি খারাপ (মানহীন) খাবার দেয় এ জন্য শিক্ষার্থীরা সেই দোকান বন্ধ করে দিয়েছিল। পরে কোনো শাস্তি না দিয়ে সেই দোকান খুলে দিয়েছেন হল প্রাধ্যক্ষ।

‘এ ছাড়া আমাদের যে ওয়াশরুমগুলো সেগুলো খুবই অপরিচ্ছন্ন। এসব সমস্যা সমাধানে প্রাধ্যক্ষ উদ্যোগী নন। আর তিনি নিয়মিত হল অফিসে আসেন না। এসব কারণে শিক্ষার্থীরা ক্ষুব্ধ। তাই হয়তো কেউ এ কাজ করে থাকতে পারে।’

এ বিষয়ে হল ছাত্রলীগের সভাপতি মারিয়াম জামান সোহান বলেন, ‘হলে সমস্যা আছে। সেগুলোর জন্য প্রতিবাদলিপি বা স্মারকলিপি দিতে পারত। কিন্তু এটার জন্য ভুল মৃত্যু সংবাদ প্রচার করা, এটা হতে পারে না। এটি অগ্রহণযোগ্য।’

তিনি বলেন, ‘আমরা শুনেছি, ক্যানটিনের জন্য নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেয়া হয়েছে। যারা কাজ করেছে তারা না এলে ক্যানটিন চালু হবে কীভাবে? এখানে তো স্যারের কোনো দোষ নেই। আর লিফটও আনার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। তবে পয়োনিষ্কাশন ব্যবস্থা অপরিচ্ছন্ন। এটা খুবই সমস্যা। আর খাবারের সমস্যা তো আছেই। তবে এসব সমাধানের জন্য সুন্দর পদ্ধতি অবলম্বন করা যেত।’

হল প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক মোহাম্মদ মকবুল হোসেন ভুঁইয়া বলেন, ‘হলে বিভিন্ন সমস্যা থাকতে পারে। কিন্তু তাই বলে মৃত্যু সংবাদ প্রচার করা, এটা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের কাজ হতে পারে না। আমারও ত পরিবার আত্মীয়স্বজন আছে।’

তিনি বলেন, ‘যারা এটি করেছে তাদের খুঁজে বের করে আমরা ব্যবস্থা নেব।’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মাস্টারদা সূর্যসেন হলের গণরুমগুলোতে মেঝেতেই থাকছেন শিক্ষার্থীরা। ছবি: নিউজবাংলা

এর আগেও গত বছরের নভেম্বরে এই হল প্রাধ্যক্ষের বিরুদ্ধে নিখোঁজ বিজ্ঞপ্তি সাঁটিয়েছিলেন একদল শিক্ষার্থী। সেই বিজ্ঞপ্তিটি হল ছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ের শ্যাডো, মধুর ক্যানটিন ও টিএসসি এলাকায় সাঁটানো হয়।

সেই বিজ্ঞপ্তিতে মোহাম্মদ মকবুল হোসেন ভুঁইয়ার ছবি দিয়ে লেখা হয় ‘মিসিং’ (নিখোঁজ)। এর নিচেই লেখা হয় ‘প্রভোস্ট মাস্টারদা সূর্য সেন হল’। হলটির কর্মচারীরা পরে বিজ্ঞপ্তিগুলো ছিঁড়ে ফেলেন।

এ বিভাগের আরো খবর