রাজধানীর শুক্রাবাদে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ তোলা নারী নিজেকে পাঁচ মাসের ‘অন্তঃসত্ত্বা’ দাবি করলেও মেডিক্যাল পরীক্ষায় এর প্রমাণ পাওয়া যায়নি।
ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে শনিবার দুপুরে ওই নারীর আল্ট্রাসনোগ্রাম শেষে বিষয়টি নিশ্চিত হয়েছেন চিকিৎসক।
ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ওসিসির একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র নিউজবাংলাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে। ওই নারীর আল্ট্রাসনোগ্রামের প্রতিবেদনের একটি অনুলিপিও পেয়েছে নিউজবাংলা।
এতে চিকিৎসক মন্তব্যের ঘরে লিখেছেন, ‘নরমাল স্টাডি অফ লোয়ার অ্যাবডোমেন।’
পরীক্ষায় ওই নারীর সব অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ স্বাভাবিক অবস্থায় দেখা গেছে বলেও উল্লেখ করা হয় প্রতিবেদনে।
এই প্রতিবেদনের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন শেরে বাংলা নগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা উৎপল বড়ুয়া।
তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমাদের কাছে ভুক্তভোগী নারী ও তার স্বামী জানিয়েছিলেন, তিনি (ওই নারী) পাঁচ মাসের অন্তঃসত্ত্বা। তবে রিপোর্ট বলছে তিনি গর্ভবতী নন। মামলার তদন্ত চলছে। তদন্তের পর জানা যাবে, তারা এমনটা কেন বললেন।’
রাজধানীর শুক্রাবাদের একটি বাসায় গত মঙ্গলবার বিউটিশিয়ান ওই নারীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ ওঠে।
পরদিন বুধবার রাতে তার স্বামী শেরে বাংলা নগর থানায় মামলা করেন।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, ধর্ষণের শিকার ওই নারী সাভারে থাকেন। সেখান থেকে একটি অনলাইন পেজের মাধ্যমে অর্ডার নিয়ে তিনি বাসায় গিয়ে নারীদের পার্লার সেবা দেন।
অনলাইন পেজের নম্বরের সূত্র ধরে গত ১১ অক্টোবর এক নারী কণ্ঠে ফোন পান ওই বিউটিশিয়ান। তাকে জানানো হয় শুক্রাবাদ এলাকার একটি বাসায় ফেসিয়াল সেবা দিতে হবে।
তবে মঙ্গলবার সন্ধ্যার পর তিনি শুক্রাবাদের বাসাটিতে গেলে তিন তরুণ তাকে ধর্ষণ করেন। এরপর একটি অটোরিকশায় তাকে তুলে দেয়া হয়।
পুলিশের কাছে জবানবন্দিতে নিজেকে পাঁচ মাসের অন্তঃসত্ত্বা দাবি করেছিলেন ওই নারী। তার স্বামীও সাংবাদিকদের কাছে একই দাবি করেন।
মামলা হওয়ার রাতেই অভিযুক্ত তিন তরুণের মধ্যে দুজনকে গ্রেপ্তার করে শেরে-বাংলা নগর থানা পুলিশ।
এরপর বৃহস্পতিবার তেজগাঁও বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার এইচএম আজিমুল হক সংবাদ সম্মেলনে জানান, ধর্ষণের অভিযোগ ওঠা তিন তরুণই বেসরকারি একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। তাদের মধ্যে মো. রিয়াদ ও ইয়াছিন হোসেন ওরফে সিয়াম গ্রেপ্তার হয়েছেন। জিতু নামে আরেক তরুণ পলাতক।
গ্রেপ্তার দুই তরুণকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ। ওই নারীর দাবি একজন নারী তাকে ফোন করেছিলেন। তবে ফোন করা নারীর কোনো অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি বলে নিশ্চিত করেছেন পুলিশের কয়েকজন কর্মকর্তা।