বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

পর্যটনের নামে উচ্ছেদ ও ইসলামীকরণের প্রতিবাদ পাহাড়ে

  •    
  • ১১ অক্টোবর, ২০২২ ২০:০৭

ইউপিডিএফ নেতা-কর্মীদের অভিযোগ, সরকার পার্বত্য চট্টগ্রামে আদিবাসীদের বিতাড়িত করতে ভূমি বেদখলকে অন্যতম হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে। ফলে প্রতিনিয়ত কোথাও না কোথাও ভূমি বেদখল হচ্ছে।

রাঙামাটির মেঘের রাজ্য সাজেকে পর্যটন এবং সীমান্ত সড়ক নির্মাণের নামে স্থানীয়দের উচ্ছেদের অভিযোগ তুলে প্রতিবাদ জানিয়েছে পাহাড়ি জনগোষ্ঠী।

এ ছাড়াও সাজেকের মানুষের জন্য যেখানে শিক্ষা ও চিকিৎসাসেবা বাড়ানো প্রয়োজন সেখানে মসজিদ নির্মাণ করে ইসলামীকরণ নীতি বাস্তবায়ন করা হচ্ছে বলে অভিযোগ ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্টের (ইউপিডিএফ) সংগঠক আসেন্টু চাকমার।

গত সোমবার সাজেকে অনুষ্ঠিত বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশে এমন অভিযোগ করেন আসেন্টু চাকমা।

মঙ্গলবার সকালে ইউপিডিএফ এর প্রচার ও প্রকাশনা বিভাগ থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তি থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।

বিবৃতিতে জানানো হয়, পার্বত্য চট্টগ্রামে বেদখল ভূমি ফেরত, পাহাড়ে অবস্থান করা বাঙালিদের সমতলে পুনর্বাসন, ভারত প্রত্যাগত শরণার্থী ও অভ্যন্তরীণ উদ্বাস্তুদের অন্যত্র পুনর্বাসন ও ক্ষতিপূরণ প্রদান এবং ভূমি বেদখল বন্ধের দাবিতে ইউপিডিএফের বাঘাইছড়ি ইউনিটের উদ্যোগে সাজেকে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

সাজেক ইউনিয়নের ৪ নং ওয়ার্ডের দ্বপদা নামক স্থানে সাজেকের মূল সড়কে এই বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এতে বিভিন্ন দাবির ব্যানার নিয়ে স্থানীয় ২ হাজারের বেশি নারী-পুরুষ ও তরুণ-তরুণী যোগ দেন।

সমাবেশে সংহতি জানিয়ে উপস্থিত ছিলেন সাজেক ইউনিয়নের চেয়ারম্যান অতুলাল চাকমাসহ মেম্বার, কারবারি ও এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিরা।

এদিকে, ১৯৯৭ সালে পার্বত্য চুক্তির পর পার্বত্য চট্টগ্রামে ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তির জন্য ‘পার্বত্য চট্টগ্রাম ভূমি নিষ্পতি কমিশন’ গঠিত হয়। এ কমিশনকে কার্যকরী করার দাবিতে তিন পার্বত্য জেলা (রাঙামাটি-খাগাড়ছড়ি-বান্দরবান) ছাড়াও রাজধানী ঢাকা ও চট্টগামে অসংখ্য বিক্ষোভ সমাবেশ করলেও এখনও ওই কমিশন নিষ্কৃয় বলে অভিযোগ পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর।

এ কমিশন ভূমি বিরোধের নিষ্পত্তি করতে না পারায় পার্বত্য চট্টগ্রামের বিভিন্ন এলাকায় সমতল থেকে বাঙালিরা বেদখল করে বসতি ও বাসিন্দা হচ্ছেন বলে জানান পাহাড়ি নেতারা।

ইউপিডিএফ নেতাকর্মীদের অভিযোগ, সরকার পার্বত্য চট্টগ্রামে আদিবাসীদের বিতাড়িত করতে ভূমি বেদখলকে অন্যতম হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে। ফলে প্রতিনিয়ত কোথাও না কোথাও ভূমি বেদখল হচ্ছে।

বান্দরবানের লামায় ভূমিদস্যু রাবার কোম্পানিকে ব্যবহার করে সেখানকার ম্রো ও ত্রিপুরাদের ৪০০ একর জুমভূমি জবরদখলের চেষ্টা চলছে।

এ ছাড়া কথিত উন্নয়ন, পর্যটন, রাষ্ট্রীয় ক্যাম্প স্থাপনসহ নানা উপায়ে সরকার বিভিন্ন জায়গায় ভূমি বেদখলের প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে।

ইউপিডিএফ সাজেক ইউনিটের অন্যতম সংগঠক আসেন্টু চাকমার সভাপতিত্বে ও সদস্য সুমন চাকমার সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন- গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের সাজেক থানা শাখার সভাপতি কালো বরণ চাকমা, পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের বাঘাইছড়ি উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক নিউটন চাকমা ও পার্বত্য চট্টগ্রাম নারী সংঘের বাঘাইছড়ি উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক রূপসী চাকমা।

বক্তারা বলেন, শাসকগোষ্ঠী পার্বত্য চট্টগ্রামে শুধু ভূমি বেদখল নয়, সমানতালে অন্যায় দমন-পীড়ন, নারী নির্যাতন, খুন-গুমসহ নানা মানবাধিকার লঙ্ঘন অব্যাহত রেখেছে। কল্পনা চাকমা অপহরণ থেকে শুরু করে এ যাবৎ অসংখ্য পাহাড়ি নারী ধর্ষণ, খুন, নির্যাতনের শিকার হলেও এসব ঘটনার কোনো বিচার হয়নি।

এ ছাড়া পার্বত্য চট্টগামে ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তির জন্য পার্বত্য চট্টগ্রাম ভূমি নিষ্পত্তি কমিশন গঠিত হওয়ার পর ২০১৬ সালে এ আইন পরিবর্তন করা হয়।

সবশেষ প্রায় আড়াই বছর পর গত ৭ সেপ্টেম্বর রাঙামাটিতে পার্বত্য চট্টগ্রাম ভূমি কমিশনের বৈঠক হওয়ার কথা। কিন্তু পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদের ডাকা ৩২ ঘণ্টা হরতালের কারণে বৈঠকটি স্থগিত হয়। ফলে ভূমি নিষ্পত্তিতে কমিশনের ব্যর্থতায় পাহাড়ে প্রতিনিয়ত সংঘাত বেড়েই চলেছে।

এ বিভাগের আরো খবর