‘জাতীয় পার্টিতে কোনো বিভক্তি নেই। সংগঠনের চেয়ারম্যান জি এম কাদের এখন বিরোধীদলীয় নেতা। পার্টির সংসদ সদস্যরা তার নেতৃত্বেই সংসদে যাবে।’
শনিবার বিকেলে জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সংসদ সদস্যদের যৌথ সভা শেষে দলের মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু গণমাধ্যমকে এসব কথা বলেন।
চুন্নু বলেন, ‘জাতীয় পার্টিতে কোনো বিভক্তি নেই। এখন পার্টির কোনো কাউন্সিল হচ্ছে না। পার্টির কাউন্সিলের সময় এখনও হয়নি। কিছু মানুষ একটি কাউন্সিলকে কেন্দ্র করে জাতীয় পার্টির নাম ব্যবহার করছে। ওই কাউন্সিলের সঙ্গে জাতীয় পার্টির কোনো সম্পর্ক নেই। ওই কাউন্সিলকে আমরা আমলেই নিচ্ছি না।’
তিনি জানান, প্রেসিডিয়ামের ৪১ সদস্যের মধ্যে ৩৮ জন ও ২৬ এমপির মধ্যে ২০ জন শনিবারের বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। যারা আসতে পারেননি, তাদের কেউ বিদেশে অথবা অসুস্থ।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের এখন বিরোধীদলীয় নেতা। দলের সদস্যরা তার নেতৃত্বেই সংসদে যাবেন। প্রেসিডিয়াম সভায় উপস্থিত নেতৃবৃন্দ এ বিষয়ে একমত পোষণ করেছেন।’
জাপা মহাসচিব বলেন, ‘বেগম রওশন এরশাদ জাতীয় পার্টির প্রধান পৃষ্ঠপোষক। এটি একটি আলঙ্কারিক পদ। কাউন্সিল আহ্বান করার এখতিয়ার তার নেই। দলীয় বা প্রশাসনিক কোনো দায়িত্বও নেই রওশন এরশাদের। নৈতিকতার প্রশ্নেই দেশে ফিরে তার বিরোধীদলীয় নেতার পতাকা ব্যবহার করা উচিত হবে না।
‘আর মসিউর রহমান রাঙ্গা নিজেই ঘোষণা দিয়েছেন যে তিনি জিএম কাদেরের নেতৃত্বে জাতীয় পার্টি করবেন না। তাই তার বিরোধীদলীয় হুইপের পদে থাকার প্রশ্নই আসে না।’
মুজিবুল হক চুন্নু আরও বলেন, ‘২০১৮ সালের নির্বাচনের পর থেকে জাতীয় পার্টি আর কোনো জোটে নেই। জাতীয় পার্টি নিজস্ব রাজনীতি নিয়ে গণমানুষের পক্ষে কথা বলছে। এতে কেউ কেউ মনে করে জাতীয় পার্টি বিএনপির সঙ্গে যোগ দিচ্ছে। জাতীয় পার্টি কারও জোটে নেই।’
অপর এক প্রশ্নের জবাবে চুন্নু বলেন, ‘বর্তমান সরকার দেশ পরিচালনায় ব্যর্থতার পরিচয় দিচ্ছে। বিদ্যুৎ একবার গেলে কখন আসে তার কোনো ঠিক নেই। সড়কে মানুষের নিরাপত্তা নেই। মানুষ টাকা দিয়েও পরিবহনের সেবা পায় না। সুষ্ঠু পরিবহন ব্যবস্থা নিশ্চিতে সরকার একেবারেই ব্যর্থ।
সংবাদ ব্রিফিংয়ে জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার বলেন, ‘জি এম কাদের এমপির নেতৃত্বে জাতীয় পার্টি ঐক্যবদ্ধ আছে। কাউন্সিলেই জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যানকে দল পরিচালনার সব ক্ষমতা দেয়া হয়েছে। জাতীয় পার্টিতে কোনো বিভেদ নেই।’
এর আগে জি এম কাদের সভাপতিত্বে দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সংসদ সদস্যদের যৌথ সভায় উপস্থিত ছিলেন- জাতীয় পার্টির সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, মহাসচিব মো. মুজিবুল হক চুন্নু, কো-চেয়ারম্যান এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার, কাজী ফিরোজ রশীদ, সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা ও অ্যাডভোকেট সালমা ইসলাম।
প্রেসিডিয়াম সদস্যদের মধ্যে ছিলেন- মো. আবুল কাশেম, হাফিজ উদ্দিন আহমেদ, গোলাম কিবরিয়া টিপু, অ্যাডভোকেট শেখ মুহাম্মদ সিরাজুল ইসলাম, ফখরুল ইমাম, সৈয়দ মোহাম্মদ আব্দুল মান্নান, মীর আব্দুস সবুর আসুদ, মাহমুদুল ইসলাম চৌধুরী, হাজী সাইফুদ্দিন আহমেদ মিলন, এ টি ইউ তাজ রহমান ও সোলায়মান আলম শেঠ।
আরও উপস্থিত ছিলেন- নাসরিন জাহান রতনা এমপি, ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী এমপি, লে. জে. মাসুদ উদ্দিন চৌধুরী, অ্যাডভোকেট মো. রেজাউল ইসলাম ভূঁইয়া, মো. মিজানুর রহমান, নাজমা আখতার এমপি, আলমগীর সিকদার লোটন, এমরান হোসেন মিয়া, মেজর (অব.) রানা মোহাম্মদ সোহেল এমপি, লিয়াকত হোসেন খোকা এমপি, মো. জহিরুল ইসলাম জহির, মোস্তফা আল মাহমুদ, মোহাম্মদ আতিকুর রহমান আতিক, জরিুল আলম রুবেল, রওশন আরা মান্নান এমপি, শেরীফা কাদের এমপি, শরিফুল ইসলাম জিন্নাহ এমপি, নুরুল ইসলাম তালুকদার এমপি, পনির উদ্দিন আহমেদ এমপি ও ভাইস চেয়ারম্যান আহসান আদেলুর রহমান।