বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

৯৬-এর আলোকে তত্ত্বাবধায়কের রূপরেখা করছে বিএনপি

  •    
  • ৬ অক্টোবর, ২০২২ ১৬:২৫

২০০৬ সালের শেষে যে জাতীয় নির্বাচনের কথা ছিল তার আগে যে তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠন হয়, সে সময় বিএনপি প্রধান বিচারপতির চাকরির মেয়াদ দুই বছর বাড়ায়। ফলে কে এম হাসানের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান হওয়ার কথা উঠে, যিনি এককালে বিএনপির আন্তর্জাতিকবিষয়ক সম্পাদক ছিলেন। তখন আওয়ামী লীগ আন্দোলনে গেলে নানা ঘটনাপ্রবাহে ২০০৭ সালের ১১ জানুয়ারি জারি হয় জরুরি অবস্থা। ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর যে ভোট দেয়, তাতে ভূমিধস জয় পায় মহাজোট। এরপর উচ্চ আদালত তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থাকে অসাংবিধানিক ঘোষণা করলে নির্বাচিত সরকারের অধীনে ভোটের পদ্ধতি ফিরিয়ে আনে জাতীয় সংসদ।

১৯৯৬ সালের সংবিধানের আলোকেই তত্ত্বাবধায়ক সরকারের রূপরেখা চূড়ান্ত করার কথা জানিয়েছে বিএনপি। তবে এ বিষয়ে বিস্তারিত এখনই প্রকাশ না করার কথা জানিয়েছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

বৃহস্পতিবার বিএনপি চেয়ারপারসনের গুলশান কার্যালয়ে জোটের শরিক বাংলাদেশ লেবার পার্টি ও এনপিপির সঙ্গে বৈঠক শেষে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর একথা বলেন।

নির্বাচনকালীন নির্দলীয় সরকারের দাবিতে যুগপৎ আন্দোলনের পরিকল্পনার অংশ হিসেবে এই বৈঠক হয়।

বিএনপির পক্ষে মির্জা ফখরুল এবং লেবার পার্টির সভাপতি মুস্তাফিজুর রহমান ইরান ও এনপিপির পক্ষে ফরিদুজ্জামান ফরহাদ সংলাপে অংশ দেন। এতে তত্ত্বাবধায়কের নেতৃত্বে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দাবি আদায়ে আন্দোলনের ধরন, নির্বাচন পরবর্তী জাতীয় সরকার, দ্বিকক্ষ বিশিষ্ট সংসদসহ নানা বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হয় সংলাপে।

১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগের আন্দোলনের মুখেই সংবিধানে নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার সংযোজন করে পদত্যাগ করেছিল বিএনপি। ওই বছর মোট দুটি জাতীয় নির্বাচন হয়, যার প্রথমটি ছিল একতরফা এবং ১২ জুনের দ্বিতীয় নির্বাচনে জিতে ২১ বছর পর ক্ষমতায় ফেরে আওয়ামী লীগ।

সে সময় ঠিক হয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান হবেন সবশেষ অবসরপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি। সেভাবেই নির্বাচনকালীন দুটি সরকার গঠন হলেও বিএনপি শাসনামালে তৃতীয়বারের তত্ত্বাবধায়ক প্রধান নিয়ে বাঁধে গোল।

২০০৬ সালের শেষে যে জাতীয় নির্বাচনের কথা ছিল তার আগে যে তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠন হয়, সে সময় বিএনপি প্রধান বিচারপতির চাকরির মেয়াদ দুই বছর বাড়ায়। ফলে কে এম হাসানের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান হওয়ার কথা উঠে।

কে এম হাসান এককালে বিএনপির আন্তর্জাতিকবিষয়ক সম্পাদক ছিল। এ কারণে আওয়ামী লীগ তাকে তত্ত্বাবধায়কের প্রধান হিসেবে মেনে না নিয়ে আন্দোলনে যায়। তারা অভিযোগ করে, বিএনপি তার সাবেক নেতাকে নির্বাচনকালীন সরকারের প্রধান করতেই বিচারপতিদের অবসরের বয়সসীমা দুই বছর বাড়ায়।

এ নিয়ে আন্দোলনের এক পর্যায়ে কে এম হাসান এই সরকারের প্রধান হতে অনীহা প্রকাশ করার পর বিএনপির নির্বাচিত রাষ্ট্রপতি ইয়াজউদ্দীন আহমেদই এই সরকারের প্রধান হন। তার বিরুদ্ধেও আন্দোলনে যায় আওয়ামী লীগ। সে সময় ভোট একবার পিছিয়ে ২০০৭ সালের ২২ জানুয়ারি ঠিক হয়।

আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে মহাজোট ভোটে অংশ না নিয়ে আন্দোলনে যাওয়ার পর রাজনৈতিক অনিশ্চয়তার মধ্যে ১১ দিন আগে হস্তক্ষেপ করে সেনাবাহিনী। জারি হয় জরুরি অবস্থা। সেনা সমর্থিক তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রায় দুই বছর ক্ষমতায় থাকার পর ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর যে ভোট দেয়, তাতে ভূমিধস জয় পায় মহাজোট।

এরপর উচ্চ আদালত তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থাকে অসাংবিধানিক ঘোষণা করলে নির্বাচিত সরকারের অধীনে ভোটের পদ্ধতি ফিরিয়ে আনে জাতীয় সংসদ।

এর প্রতিবাদে ২০১৪ সালের জাতীয় নির্বাচন বর্জন করে আন্দোলনে যায় বিএনপি ও শরিকরা। তবে নির্বাচন ঠেকানো যায়নি। ২০১৮ সালের একাদশ সংসদ নির্বাচনের আগেও আন্দোলনের ঘোষণা দিলেও বিএনপি ও তার জোট শেষ পর্যন্ত ভোটে আসে এবং ইতিহাসের সবচেয়ে বাজে ফল করে।

সেই নির্বাচনে আগের রাতে ভোট হয়ে যাওয়ার অভিযোগ এনে বিএনপি নির্বাচনকালীন নির্দলীয় সরকারের দাবিতে ফিরে গেছে। এর অংশ হিসেবে গত ২২ আগস্ট থেকে ধারাবাহিক নানা কর্মসূচি পালন করছে।

দুই দলের স্ঙ্গে সংলাপ শেষে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘খালেদা জিয়াকে মুক্ত করে নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন আদায়ের বিষয়ে ঐক্যমত্য হয়েছে। সংসদ বিলুপ্ত করে নতুন কমিশনের অধীনে নির্বাচন হতে হবে। দাবিগুলো চূড়ান্ত করে শিগগিরই যুগপৎ আন্দোলন শুরু করা হবে। তখন সব রূপরেখা জানতে পারবেন।’

এ বিভাগের আরো খবর