বড় বাজার হিসেবে পরিচিত খুলনা বিভাগের বৃহত্তম পাইকারি বাজারে আগুনে পুড়ে গেছে ৭ টি দোকান ও গোডাউনের মালামাল। ফায়ার সার্ভিস বলছে, অগ্নি নিরাপত্তার জন্য ন্যূনতম ব্যবস্থা নেই বাজারটিতে।
বুধবার দুপুর ১টার দিকে খুলনা মহানগরীর বড় বাজারে ভৈরব স্ট্যান্ড রোডের একটি দোকান থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়। ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের সদস্যরা ২ ঘণ্টা চেষ্টা চালিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন।
বড় বাজার ব্যবসায়ী সমন্বয় সমিতির সাধারণ সম্পাদক শেখ আনিচুর রহমান মিঠু বলেন, ‘পূজা উপলক্ষে বড় বাজারের সব দোকানপাট বন্ধ ছিল। দুপুরে কংস বণিক ভাণ্ডার নামে একটি অ্যালুমিনিয়ামের দোকানে আগুন লাগে। সেখান থেকে অন্যান্য দোকানে আগুন ছড়িয়ে পড়ে।
‘একে একে কংস বনিক ভান্ডার, সুরুচি বস্ত্রালয়, নাহিদ আমব্রেলা ও হোসেন হার্ডওয়ার নামক চারটি দোকান পুড়ে যায়। এই দোকানের উপরে থাকা আরও তিনটি গোডাউনেও আগুন ছড়িয়ে পড়ে। আগুনে প্রায় আড়াই কোটি টাকার মালামাল পুড়ে গেছে।’
ফায়ার সার্ভিসের কন্ট্রোল রুম সূত্র জানায়, দুপুর ১টা ৭ মিনিটের দিকে মোবাইল ফোনে আগুনের খবর জানানো হয়। পরে খুলনার বিভিন্ন স্টেশন থেকে ৮টি ইউনিট ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
ইউনিটগুলোর নেতৃত্বে ছিলেন খুলনা ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের উপ-পরিচালক সালেহ উদ্দিন। তিনি বলেন, ‘দোকানগুলোতে প্লাস্টিক জাতীয় পদার্থ থাকায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে একটু বিলম্ব হয়েছে। ধারণা করছি শর্ট সার্কিট থেকে আগুন লেগেছে। ক্ষতির পরিমাণ ও আগুন লাগার কারণ তদন্তে বেরিয়ে আসবে।’
সুরুচি বস্ত্রালয়ের স্বত্বাধিকারী সমর কুমার ব্যানার্জি বলেন, ‘আমার কিছু থাকল না। আগুনে নগদ ১০ লাখ টাকা পুড়ে গেছে। মালামাল পুড়ে এক কোটি টাকার। টাকাটা আজ ব্যাংকে জমা দেয়ার কথা ছিল। আগুন লাগার পর ক্যাশের টাকা চুরিও গেছে।’
বড় বাজারের ব্যবসায়ী শেখ কামরুজ্জামান বলেন, ‘আমরা ফায়ার সার্ভিসকে তাৎক্ষণিক খবর দিলেও তারা অনেক পরে এসেছে। তারপর আগুন নেভানোর জন্য পানি দিতেও দেরি করেছে। এতে আমরা বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি।’
এ ব্যাপারে উপ-পরিচালক সালেহ উদ্দিন বলেন, ‘আগুন নেভাতে দেরি হওয়ায় আমাদের দোষ ঠিক নয়। আমরা খবর পাওয়ামাত্রই চলে এসেছি। তবে এখানের গলিগুলো এতটাই সরু যে আমাদের ছোট গাড়িটিও আগুনের কাছাকাছি নেয়া যায়নি। ফায়ার সেফটির ন্যূনতম ব্যবস্থা নেই। এ জন্য আগুন নেভাতে বেশ কষ্ট হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘অনেক আগে এই বাজার গড়ে উঠেছে। প্রতিটি দোকানে লাখ লাখ টাকার মালামাল রয়েছে। দোকানগুলোতে নিরাপত্তা বলতে কিছু নেই। ভূমিকম্প হলেও এখানে অনেক ক্ষতি হবে। বিদ্যুতের লাইনেও এখানে ঝামেলা আছে। অধিকাংশ দোকানে নিরাপদভাবে বিদ্যুৎ ব্যবহার করা হয় না।’