সিলেটে তুষার আহমদ নামে এক ব্যক্তিকে হত্যার অভিযোগে ৬ ট্রান্সজেন্ডারকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
সোমবার পৃথক অভিযানে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
এর আগে গত রোববার তুষারের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। নিহত তুষার নারীর ছদ্মবেশে ট্রান্সজেন্ডার লোকদের সঙ্গে চলাফেরা করতেন বলে জানিয়েছে পুলিশ।
সোমবার রাতে কোতোয়ালি থানার ওসি মোহাম্মদ আলী মাহমুদ জানান, হত্যার ঘটনায় সোমবার ভোরের দিকে থানায় মামলা দায়ের করেন তুষারের ভাই হিমেল আহমদ রাফি। পরে সোমবার দিনভর অভিযান চালিয়ে ট্রান্সজেন্ডার ৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার ৬ জন হলেন- সিলেটের বিয়ানীবাজার উপজেলার ছোটদেশ গ্রামের হৃদয়, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া থানার তানহা, সুনামগঞ্জের দিরাই থানার সুমি উজ্জল, হবিগঞ্জের চুনারুঘাট থানার চাঁদনী সজল, পাপ্পু পাপিয়া ও হৃদয় রুপা। এর মধ্যে পাপ্পু পাপিয়া ও হৃদয় রুপা ঘটনার মূল পরিকল্পনাকারী বলে জানিয়েছেন ওসি।
ওসি মোহাম্মদ আলী মাহমুদ বলেন, ‘আমরা বিশেষ অভিযানে প্রথমে চারজনকে গ্রেপ্তার করি। তাদের দেয়া তথ্যে পরে দুই পরিকল্পনাকারীকে গ্রেপ্তার করি।’
ওসি আরও বলেন, ‘প্রথমে গ্রেপ্তার ৪ জন ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ত বলে আমাদের কাছে স্বীকারোক্তি দেয় এবং জানায়, তারা একসঙ্গে খারাপ কাজ করতো। এই কাজ নিয়ে দ্বন্দ্ব থেকেই তুষারকে খুন করা হয়। ওই চারজনকে সোমবার বিকেলে আদালতে পাঠানো হয়েছে। আর বাকি দুজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। মঙ্গলবার তাদেরও আদালতে পাঠানো হবে।’
এর আগে রোববার সকালে নগরের সোবহানীঘাট থেকে তুষারের মরদেহ উদ্ধার করে কোতোয়ালি থানা পুলিশ।
খবর পেয়ে তুষারের মা নাছিমা বেগম ঘটনাস্থলে গিয়ে ছেলের মরদেহ শনাক্ত করেন। পরে ময়নাতদন্ত শেষে রোববার বিকালে নগরীর মানিকপীর টিলায় মরদেহটি দাফন করা হয়।
মরদেহ উদ্ধারের পর মৃতের পরিবারের সদস্যদের বরাতে পুলিশ জানায়, তুষার নিজেকে তৃতীয় লিঙ্গের মানুষ পরিচয় দিতেন এবং সেরকমই থাকতে পছন্দ করতেন। তার গলায় আঘাতের চিহ্ন ছিল।
তুষারের ভাই হিমেল আহমদ রাফি বলেন, ‘আমার ভাই ট্রান্সজেন্ডার নয়। ছোটবেলায় একসঙ্গে আমাদের খতনা দেয়া হয়েছে। কিন্তু খাসদবির প্রাইমারি স্কুলে পড়ার সময় সে অস্বাভাবিক আচরণ করতে থাকে এবং একসময় ট্রান্সজেন্ডারদের সঙ্গে চলাফেরা শুরু করে।’
রাফি জানান, প্রায় প্রতি রাতেই ট্রান্সজেন্ডার বন্ধুদের সঙ্গে ঘর থেকে বের হয়ে যেতেন তুষার। ফিরতেন পরদিন সকালে। এ বিষয়ে পরিবারের পক্ষ থেকে বারবার মানা করা হলেও তিনি শুনেননি।
রাফি বলেন, ‘শনিবার রাত সাড়ে ৯টার দিকেও তৃতীয় লিঙ্গের এক বন্ধু তাকে বাসা থেকে ডেকে নিয়ে যায়। তবে তাকে এর আগে আমি কখনও তার সঙ্গে দেখিনি। রাতে সেই যে বেরুলো, আর ঘরে ফেরেনি তুষার। সকালেই জানতে পারি তার লাশ সোবহানীঘাট থেকে উদ্ধার করেছে পুলিশ।’