বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

৩৩ বছরেও হয়নি তিন পার্বত্য জেলা পরিষদ নির্বাচন

  •    
  • ২২ সেপ্টেম্বর, ২০২২ ১৭:৪২

ইন্টুমনি তালুকদার বলেন, ‘যদি নির্বাচন হতো তখন কোনো নিয়োগ প্রক্রিয়া হলেও জনগণের কাছে তা জবাবদিহিতা থাকত। তিন পার্বত্য জেলা পরিষদে নির্বাচন না হওয়াতেই এখন তাদের কোনো জবাবদিহিতা নেই।’

দেশের ৬৪ জেলার মধ্যে ৬১টি জেলা পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে আগামী ১৭ অক্টোবর। ভোটগ্রহণের জন্য এরই মধ্যে তফসিল ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন- ইসি। তবে এবারও পার্বত্য চট্টগ্রামের তিন জেলা রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবানে হচ্ছে না জেলা পরিষদের নির্বাচন।

এই তিন জেলায় নির্বাচনের দাবি জানালেও নির্বাচন না দিয়ে নিজেদের লোককে সরকার ওই পদে বসিয়ে আসছে বলে অভিযোগ করেন স্থানীয়রা। তাই অন্য জেলার মতো তারাও চান, পার্বত্য তিন জেলায় নির্বাচন হোক।

নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা গেছে, পার্বত্য জেলা পরিষদের নির্বাচন প্রথম ও শেষবার অনুষ্ঠিত হয় ১৯৮৯ সালের ২৫ জুন। সে নির্বাচনে রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন গৌতম দেওয়ান।

নির্বাচন না হওয়ায় ১৯৯৭ সালের ২ ডিসেম্বর স্বাক্ষরিত পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি যথাযথ বাস্তবায়ন ও ভূমি কমিশন আইন নিষ্পত্তি বাধাগ্রস্ত হচ্ছে বলে দাবি বিশ্লেষকদের।

১৯৯৬ সালের ৫ আগস্ট নির্বাচিত তিনটি পরিষদ ভেঙে দেয় তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার। পরে প্রত্যেক পরিষদে একজন চেয়ারম্যান ও চারজন সদস্য মনোনয়ন দিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন ‘পার্বত্য জেলা স্থানীয় সরকার পরিষদ’ গঠন করে। পরে পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির আলোকে ১৯৯৮ সালে আইন সংশোধন করে ‘পার্বত্য জেলা স্থানীয় সরকার পরিষদ’ থেকে ‘পার্বত্য জেলা পরিষদ’ নামে সংশোধিত হয়। তবে তারপর ৩৩ বছরেও আর সেখানে নির্বাচন দেয়া হয়নি।

জেলা পরিষদ আইনে বলা আছে, জেলা পরিষদের মেয়াদ হবে পাঁচ বছর। পর্ষদে জেলার স্থায়ী বাসিন্দার প্রত্যক্ষ ভোটে একজন চেয়ারম্যান এবং ৩৩ জন সদস্য নির্বাচিত হবেন। এতে আদিবাসী একজন চেয়ারম্যান ও আদিবাসী ২০ জন সদস্য নির্বাচিত হবেন। বাকি ১০ জন অ-আদিবাসী এবং সংরক্ষিত তিনটি নারী আসনে দুজন আদিবাসী ও একজন অ-আদিবাসী সদস্য নির্বাচিত হবেন।

স্থানীয়রা বলছেন, জেলা পরিষদ নির্বাচন না হওয়া মানেই পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির আলোকে জেলা পরিষদ আইন অমান্য করা। চুক্তির আইন না মেনে নির্বাচন না দিয়ে নিজেদের দলীয় লোককে মনোনয়ন দিয়ে পার্বত্য জেলা পরিষদ পুনর্গঠন করছে সরকার। এতে অবশ্য সরকারদলীয় লোকজনই উপকৃত হচ্ছেন বলে জানান তারা।

জেলা পরিষদ নির্বাচন না হওয়ায় ক্ষোভ ও হতাশা জানান বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরাম পার্বত্য অঞ্চলের সাধারণ সম্পাদক ইন্টুমনি তালুকদার। তিনি বলেন, ‘জেলা পরিষদ নির্বাচন না হওয়ায় পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। স্থানীয়রা সবদিক থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। সরকারদলীয় মানুষকে তারা মনোনীত করে যাচ্ছে। অনিয়ম, দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি এসবের ৬১ জেলা পরিষদের জবাবদিহিতা থাকলেও পার্বত্য তিন জেলা পরিষদের কোনো জবাবদিহিতা নেই।

‘যদি নির্বাচন হতো তখন কোনো নিয়োগ প্রক্রিয়া হলেও জনগণের কাছে তা জবাবদিহিতা থাকত। তিন পার্বত্য জেলা পরিষদে নির্বাচন না হওয়াতেই এখন তাদের কোনো জবাবদিহিতা নেই।’

তিনি আরও বলেন, ‘পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির আলোকে তিন পার্বত্য জেলায় স্থায়ী বাসিন্দাদের নিয়ে আলাদাভাবে ভোটার তালিকা প্রবিধান করে নির্বাচন করতে হবে। চুক্তিতে লেখা আছে, যারা স্থানীয় ভোটার আছেন তাদের মাধ্যমে জেলা পরিষদ নির্বাচন হবে। কিন্তু এ চুক্তির আইন মানছে না সরকার।’

বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে রাঙ্গামাটি জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের সদস্য হাজি মো. মুসা মাতব্বর নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এগুলো সরকারের বিষয়, আমাদের কোনো বিষয় না। সরকারের পক্ষ থেকে জেলা পরিষদ নির্বাচনের কোনো নোটিশ দেয়া হয়নি। তবে নির্বাচন হওয়ার দরকার।’

এ বিভাগের আরো খবর