নোয়াখালীতে ভূমি রেকর্ড অফিসে খতিয়ান জালিয়াতি ও মিথ্যা তথ্য দিয়ে ব্যাংক থেকে মোটা অঙ্কের ঋণ ও বাড়ি দখলচেষ্টার অভিযোগ উঠেছে।
রোববার বেলা সাড়ে ১১টায় নোয়াখালী প্রেস ক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী লন্ডন প্রবাসী মো. জোবায়েরের ভাই মোহাম্মদ নুরুল্লাহ ও তার পরিবারের সদস্যরা।
নুরুল্লাহ বলেন, ‘আমার ভাই মোহাম্মদ জোবায়ের ১৯৯৮ সালে নোয়াখালী পৌরসভার লক্ষ্মীনারায়ণপুর এলাকায় সাড়ে ৬ শতাংশ জমি ক্রয় করেন। এক বছর পর পৌরসভার নকশা অনুযায়ী সেখানে চারতলা ভবনও নির্মাণ করেন। তিনি প্রবাসে থাকায় বাড়িটির ক্ষমতা আমাকে হস্তান্তর করেন। কিন্তু ২০১৮ সালে পত্রিকার মাধ্যমে জানতে পারি বাড়িটি নিলামে বিক্রি হবে!’
এ অবস্থায় বিষয়টি নিয়ে ইসলামী ব্যাংক মাইজদী শাখায় যোগাযোগ করলে নুরুল্লাহ জানতে পারেন, একটি জালিয়াত চক্র রেকর্ড অফিসে খতিয়ান টেম্পারিং করে জাল দলিল দিয়ে ব্যাংক থেকে ২ কোটি টাকা ঋণ নিয়েছে।
এ বিষয়ে ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বরাবর অভিযোগ দিলে তিনি জালিয়াত চক্রের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ও ফৌজদারি ব্যবস্থা নিতে নোয়াখালী জোনাল সেটেলমেন্ট কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেন।
বাড়ি দখলচেষ্টার বিষয়ে নুরুল্লাহ জানান, গত ৪ সেপ্টেম্বর জালিয়াত চক্রের সদস্য আনোয়ার খান ইসলামী ব্যাংক দত্তেরহাট শাখার ম্যানেজারের উপস্থিতিতে দারোয়ানকে মারধর করে ওই বাড়িতে প্রবেশ করেন। পরে এ বিষয়ে সুধারাম থানায় লিখিত অভিযোগ দেন নুরুল্লাহ। কিন্তু আনোয়ার খান উল্টো তাদের বিরুদ্ধে ডাকাতির মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করছেন।
নুরুল্লাহ দাবি করেন, জালিয়াত চক্রের সুরাইয়া আফরিন ও আনোয়ার খান বাড়ির মিথ্যা পাওয়ার অফ অ্যাটর্নি দেখিয়ে এ কাজ করছেন। তারা বলছেন, টাকার অভাবে আমার ভাই জমি বিক্রি করেছেন।
রেকর্ড বইয়ে টেম্পারিং করে তাদের এই কাজে সহযোগিতা করেছেন রেকর্ডকিপার হুমায়ুন কবির গাজী।
এই চক্রের সঙ্গে জড়িত সবার বিচার দাবি করেন নুরুল্লাহ।
অভিযোগের বিষয়ে রেকর্ডকিপার হুমায়ুন কবির গাজী বলেন, ‘বিষয়টি দেড় বছর আগে নিষ্পত্তি হয়েছে। বর্তমানে আমি নোয়াখালী অফিসে নাই। তিন মাস আগে আমি দিনাজপুরে বদলি হয়েছি।’
ইসলামী ব্যাংক দত্তেরহাট শাখার প্রিন্সিপাল অফিসার মোহাম্মদ জাহিদ হোসাইন বলেন, ‘ওভার ডিউ হয়ে যাওয়ায় আমি টাকা সংগ্রহের জন্য ওই বাড়িতে গিয়েছিলাম। মারধরের বিষয়টি আমার জানা নেই।’
অভিযোগের বিষয়ে আনোয়ার খান সাংবাদিকদের জানান, ‘আমার কাছে সব কাগজপত্র আছে, তাদের অভিযোগ সত্য নয়।’