নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে ছাত্রদলের মশাল মিছিলকে কেন্দ্র করে ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের সঙ্গে যুবলীগ নেতাকর্মীদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। পরে উপজেলার ভুলতা এলাকায় জেলা ছাত্রদলের সহসভাপতির বাড়িঘরে হামলা, ককটেল বিস্ফোরণ ঘটানো হয়।
শনিবার রাতের এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে রোববার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত স্থানীয় আওয়ামী লীগ, যুবলীগ নেতাকর্মীরা ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ মিছিল করেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, শনিবার রাজধানীতে তাবিথ আওয়ালসহ বিএনপি নেতাকর্মীদের ওপর হামলার প্রতিবাদে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের বলাইখা এলাকায় রাত সাড়ে ৯টার দিকে ছাত্রদল নেতা মাসুদুর রহমানের নেতৃত্বে মশাল মিছিল অনুষ্ঠিত হয়।
মিছিলটি মহাসড়কের বলাইখা থেকে ভুলতা বাসস্ট্যান্ডের দিকে গেলে স্থানীয় যুবলীগের নেতাকর্মীরা বাধা দেন। পরে দুই পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। একপর্যায়ে পিছু হটেন ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা।
উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মাসুদুর রহমান জানান, তারা শান্তিপূর্ণভাবে মিছিল করছিলেন। কিন্তু কোনো উসকানি ছাড়াই এতে হামলা চালায় যুবলীগ নেতাকর্মীরা। এরপর রাত ১০টার দিকে স্থানীয় ছাত্রলীগ, যুবলীগের নেতাকর্মীরা তার বসতবাড়িতেও হামলা চালায়।
এ সময় প্রধান ফটকের তালা ভেঙে বাড়ির ভেতরে ঢুকে ককটেল বিস্ফোরণ ছাড়াও বাড়িতে থাকা বৃদ্ধ বাবা-মা, কিশোরী বোন, কিশোর ভাতিজাকেও মারধর করে।
মাসুদুর রহমান বলেন, ‘মারধরে আমার মায়ের হাত ও পায়ের হাড় ভেঙে গেছে। তাদের রাজধানীর একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।’
উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক মাহফুজুর রহমান বলেন, ‘শুধু এখানেই নয়, এর আগে কাঞ্চন পৌরসভা ও কায়েতপাড়া ইউনিয়নের নেতাকর্মীদের বাড়িঘরেও হামলার ঘটনা ঘটেছে। পুলিশ এসব ঘটনায় কোনো ব্যবস্থাই নিচ্ছে না।’
হামলার বিষয়ে উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান শাহিন বলেন, ‘শনিবার রাতে আমরাও মিছিল করছিলাম। ওই সময় তারা মশাল মিছিলের নামে গাড়ি ভাঙচুর করে। মানুষের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে হামলা চালায়। আমরা বাধা দিতে গেলেও তারা হামলা চালায়। তাদের বিরুদ্ধে একটি মামলা করা হচ্ছে। এ ছাড়া তাদের বাড়িতে কে বা কারা হামলা করেছে, তা আমার জানা নেই। আমরা রোববার সকাল থেকে উপজেলার ১০টি ইউনিয়নে শান্তিপূর্ণ মিছিল ও সমাবেশ করেছি।’
হামলা ও ভাঙচুরের বিষয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. শাহজাহান ভূঁইয়া বলেন, ‘আমি এ ধরনের ঘটনার খবর পাইনি। আমাদের আওয়ামী লীগের লোকজন এমনটা করার কথা নয়।’
রূপগঞ্জ থানার ওসি এ এফ এম সায়েদ জানান, হামলার খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়। বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।
সরেজমিন দেখা গেছে, কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে রোববার বিএনপি ও ছাত্রদল নেতাকর্মীরা বিক্ষোভ করবে এমন তথ্য পেয়ে সকাল থেকেই আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ ও মহিলা লীগের নেতাকর্মীরা ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক ও এশিয়ান হাইওয়ে (বাইপাস) সড়কসহ ৩০টি পয়েন্টে অবস্থান নিয়েছেন। এ সময় তারা প্রতিটি স্থানে বিক্ষোভ-মিছিলসহ মোটরসাইকেল নিয়ে মহড়াও দিচ্ছেন।