মানিকগঞ্জের আঞ্চলিক অফিসে পাসপোর্ট করতে গিয়ে নারীসহ দুই রোহিঙ্গা নাগরিক আটক হয়েছেন। এ সময় তাদের কাছ থেকে ভুয়া পরিচয়পত্র উদ্ধার করা হয়।
রোববার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে তাদের আটক করা হয়। আটক ব্যক্তিরা হলেন কক্সবাজারের উখিয়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ১৬ বছরের হুমায়রা বেগম ও কক্সবাজারের চকরিয়ার একটি ক্যাম্পের রোহিঙ্গা আবু তাহের।
নিউজবাংলাকে মানিকগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুর রউফ সরকার এসব তথ্য জানিয়েছেন।
আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস সূত্রে জানা গেছে, জেলার সিংগাইর চান্দহর ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের চান্দহর এলাকার মো. খলিলুর রহমান ও মাতা রাশিদা খাতুনের মেয়ে তাসমিন বেগম পরিচয়ে পাসপোর্টের আবেদন করেন রোহিঙ্গা নারী হুমায়রা বেগম। এরপর রোববার সকালে মানিকগঞ্জ পাসপোর্টের আবেদন করতে আসেন হুমায়রা বেগম ও তার ভাতিজা আবু তাহের।
ভাতিজা আবু তাহের নিউজবাংলাকে জানান, ২০০৮ সালে পরিবারের সঙ্গে বাংলাদেশে আসে এবং টেকনাফের উখিয়ায় বসবাস শুরু করে। কাজের জন্য তার কাকা তোফাইল হোসেন সৌদি আবরে চলে যায়। মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা এবং টেকনাফের উখিয়ার রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আশ্রয় নেয়ার পর হুমায়রার পরিবারের সঙ্গে পরিচয় হয়। এরপর দুই বছর আগে সৌদি প্রবাসী তোফাইল হোসেনের সঙ্গে ফোনে পারিবারিকভাবে বিয়ে হয় হুমায়রার।
তিনি জানান, কয়েক মাস আগে হুমায়রাকে তার স্বামী প্রবাসে যেতে বলে পাসপোর্ট করতে বলে। এরপর সে তার এক বন্ধুর সঙ্গে যোগাযোগ করিয়ে দেয় তার স্বামী। মানিকগঞ্জের মোহাম্মদ সাদ নামে একজনের ফোন নম্বর দিয়ে যোগাযোগ করতে বলে। এরপর পাসপোর্টের জন্য ১ লাখ টাকা দাবি করে সাদ। পরে তাকে ৬০ হাজার টাকা দেয়া হয়।
রোববার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে মানিকগঞ্জ আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসে ফিঙ্গার দেয়ার জন্য গেলে রোহিঙ্গা হিসেবে শনাক্ত করেন কর্মকর্তারা। তখন পুলিশ তাদের দুজনকে আটক করে।
স্থানীয় চান্দহর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শওকত হোসেন বাদল নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ইউনিয়নের যে পরিচয়পত্র ও আমার স্বাক্ষর ব্যবহার করা হয়েছে সেটি আসল না, ভুয়া কাগজপত্র। বিষয়টি জানার পর থানা পুলিশকে জানানো হয়েছে। এ বিষয়ে আমি আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করব।’
ওসি আব্দুর রউফ সরকার বলেন, ‘খবর পেয়ে পুলিশ তাদের থানায় নিয়ে এসেছে। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।’
মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে স্থানীয় রোহিঙ্গাদের ওপর দেশটির সেনাবাহিনীর নিপীড়নের পর ২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট থেকে বাংলাদেশে লাখ লাখ রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী পালিয়ে এসে আশ্রয় নেয়।