‘জাতীয় সংসদে বিরোধী দলীয় নেতার পদ থেকে রওশন এরশাদকে অপসারণে স্পিকারকে দেয়া চিঠিতে স্বাক্ষর না করলে বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ পদ থেকে আমাকে সরিয়ে দেয়ার হুমকি দেয়া হয়েছিল। আমি কোনো অন্যায় করিনি।’
জাতীয় পার্টি থেকে অব্যাহতি দেয়ার পর বৃহস্পতিবার সংবাদ সম্মেলন করে এসব কথা বলেছেন মশিউর রহমান রাঙ্গা।
আগের দিন বুধবার রাঙ্গাকে জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য পদসহ সব থেকে অব্যাহতি দেন দলের চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের।
রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে এই সংবাদ সম্মেলনে রাঙ্গা বলেন, ‘আমি কোনো অন্যায় করিনি। আর এটা বলার জন্যই আজ এই সংবাদ সম্মেলনে ডেকেছি। আমি এখানে পার্টির কোনো লোক নিয়ে আসিনি। পরিবহন সেক্টরের কিছু লোক এসেছে।’
দল থেকে অব্যাহতি দেয়ার কারণ সম্পর্কে জানতে চাইলে বিরোধী দলের এই চিফ হুইপ বলেন, ‘রওশন এরশাদকে সরিয়ে জিএম কাদেরকে জাতীয় সংসদে বিরোধীদলীয় নেতা করতে যে চিঠি দেয়া হয়েছে তার প্রক্রিয়া সঠিক ছিল না। এটা আমি একটা টেলিভিশনকে বলেছিলাম, এজন্য আমাকে বহিষ্কার করা হয়েছে বলে মনে করছি।’
চিঠি দেয়ার প্রক্রিয়া সঠিক না থাকলে সেটা এতোদিন পর কেন বলছেন- এমন প্রশ্নের জবাবে রাঙ্গা বলেন, “স্পিকারকে ওই চিঠি দেয়ার পর তিনি (রওশন এরশাদ) আমাকে বলেন- ‘তুমি তো আমার সব সর্বনাশ করেছ। তুমি তো সব চিঠিতে সই করেছে।’
“তখন আমি ওনাকে বলেছি- এটার সঙ্গে আমি নেই। প্রক্রিয়া যে সঠিক ছিল না, এটা আমি কোনো গণমাধ্যমে বলে দেব। এরপর আমি বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছি।”
প্রক্রিয়া সঠিক না থাকলে চিঠিতে স্বাক্ষর করেছিলেন কেন জানতে চাইলে রাঙ্গা বলেন, ‘তখন স্বাক্ষর না করলে আমাকে বিরোধীদলীয় চিফ হুইপের পদ থেকে সরিয়ে দেয়ার হুমকি দেয়া হয়েছিল। একইসঙ্গে আগামী নির্বাচনে মনোনয়ন না দেয়ার হুমকিও দেয়া হয়।’
আগামীতে রওশন এরশাদের সঙ্গে থাকবেন কীনা- এমন প্রশ্নের জবাবে রাঙ্গা বলেন, ‘এখনও ঠিক করিনি। আমি চাই পার্টি ঐক্যবদ্ধ থাকুক, দলটা সুন্দরভাবে চলুক। প্রয়োজনে আমি নিজেই দলে থাকব না। আর জাতীয় পার্টির রাজনীতি করতে না পারলে অন্য কোনো দলেও যাব না।
রাঙ্গা বলেন, ‘আগামীতে দেশে শুধুই দুটি রাজনৈতিক দল থাকবে। কোন দুটি দল থাকবে সেটা আমি বলব না। তবে সেখানে আমরা (জাতীয় পার্টি) থাকব না।’
দলের চেয়ারম্যান জিএম কাদেরকে চ্যালেঞ্জ জানানো প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘বিনা নোটিশে অব্যাহতির কথা শুনে আমি রাগান্বিত হয়েছিলাম, এটা অস্বীকার করব না। আমি চেয়ারম্যানকে যে চ্যালেঞ্জ দিয়েছিলাম সেটা তুলে নিয়েছি। রংপুরেও আর কোনো ঝামেলো হবে না।
‘আমার অব্যাহতির আদেশে আমি অখুশি নই। তবে আমার বহিষ্কার (অব্যাহতি) আদেশ প্রত্যাহার চাই। চেয়ারম্যানের সঙ্গে যুদ্ধ করে দলে থাকা যায় না।’