বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

রাস্তার স্থায়িত্ব বাড়াবে, খরচ কমাবে প্লাস্টিক-পলিথিন: চুয়েট গবেষণা

  •    
  • ১১ সেপ্টেম্বর, ২০২২ ১৭:৫০

প্রফেসর ড. স্বপন কুমার পালিতের তত্ত্বাবধানে চুয়েট ছাত্র প্রকৌশলী পিয়াল বড়ুয়া ও প্রকৌশলী আল আমিন এই গবেষণা পরিচালনা করেন। নগরীর বাকলিয়া, চান্দগাঁও, মুরাদপুর, চকবাজার, খাতুনগঞ্জ, আগ্রাবাদ, সিইপিজেডসহ ১৫টি ওয়ার্ড এই গবেষণার আওতায় ছিল।

সড়ক কার্পেটিংয়ে ব্যবহৃত বিটুমিনের সঙ্গে ৫ থেকে ১০ শতাংশ প্লাস্টিক পলিথিন মেশালে প্রতি কিলোমিটারে বেঁচে যাবে পৌনে ৩ লাখ টাকা। সড়ক হবে টেকসই, বাড়বে স্থায়িত্ব। বর্জ্য পলিথিন ব্যবহার করায় কমে আসবে পরিবেশ দূষণও।

চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (চুয়েট) দুই শিক্ষার্থীর গবেষণায় উঠে এসেছ এই তথ্য।

শনিবার চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবে চুয়েট ও বাংলাদেশ পরিবেশ ফোরাম আয়োজিত গবেষণা প্রবন্ধ উপস্থাপনের সময় এসব তথ্য জানানো হয়।

গবেষণা প্রবন্ধ উপস্থাপনকালে চুয়েট শিক্ষার্থী পিয়াল বড়ুয়া জানান, পলিথিন বর্জ্য পরিবেশে এসে ক্ষতিকারক প্যাথোজেনের মতো অনুজীবকে আকর্ষণ করে। পরে প্যাথেজেন ধারণকারী মাইক্রো প্লাস্টিক কণা আমাদের শরীরে প্রবেশ করে সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়ায়।

পিয়াল আরও জানান, ৩০ শতাংশ মানুষ প্লাস্টিক পলিথিনের পুনর্ব্যবহার করে, ৪৬ শতাংশ মানুষ যা কখনই করে না। এ ছাড়া ১১ শতাংশ মানুষ কখনও কখনও পলিথিন পুনর্ব্যবহার করেন।

পিয়াল বলেন, ‘সড়ক কার্পেটিংয়ে বিটুমিনের সঙ্গে ৫ থেকে ১০ শতাংশ প্লাস্টিক পলিথিন মেশানোর ফলে পরিবেশ দূষণ কমবে। প্রতি কিলোমিটার সড়ক কার্পেটিংয়ে ২ লাখ ৭৫ হাজার টাকা সাশ্রয় হবে। সেই সঙ্গে সড়কও দ্বিগুণ স্থায়ী হবে।’

প্রতিদিন ১৪০ টন প্লাস্টিক বর্জ্য চট্টগ্রাম মহানগরে জমা হচ্ছে উল্লেখ করে তিনি জানান, প্রতিদিন চট্টগ্রাম মহানগরীর ৮৭ লাখ মানুষ ৩০০ টন বর্জ্য সৃষ্টি করে। এর মধ্যে ২৪৯ টনই প্লাস্টিক বর্জ্য; যার ৫৬ শতাংশ (১৪০ টন) রিসাইক্লিংয়ের জন্য সংগ্রহ না করায় নগরীর খাল-নালা, পরিবেশ-প্রতিবেশের সঙ্গে মিশে পৃথিবীকে বসবাস অযোগ্য করে তুলছে।

এই বর্জ্য প্লাস্টিক ও পলিথিনের কারণে বাড়ছে জলাবদ্ধতা, পানিদূষণ, দুর্গন্ধযুক্ত আবহাওয়া, রাস্তায় পাশে ময়লা-আবর্জনা ও মানুষের স্বাস্থ্যগত সমস্যা। প্লাস্টিক পলিথিন নদী ও সাগরে মিশে ধ্বংস হচ্ছে মাছ। এই পলিথিন ও প্লাস্টিক এখন বৃহৎ জলজ প্রাণী তিমিরও মৃত্যুর কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।’

প্রকৌশলী পিয়াল বড়ুয়া আরও বলেন, ‘যত্রতত্র প্লাস্টিক ছুড়ে ফেলা, পর্যাপ্ত ডাস্টবিন না থাকা, প্রয়োজনীয় আইনি পদক্ষেপ না নেয়া, প্লাস্টিক পোড়ানো, প্লাস্টিকের দূষণ সম্পর্কে অজ্ঞতা, অপচনশীলতা ও জনসংখ্যা বৃদ্ধির কারণে প্লাস্টিক বর্জ্যে দূষণ দিন দিন বাড়ছে। প্লাস্টিক দূষণের কারণে খাবার, পানি পান, নিঃশ্বাসের সঙ্গে মাইক্রোপ্লাস্টিক আমাদের দেহে প্রবেশ করছে। প্লাস্টিক পলিথিনের সঙ্গে থাকা ক্যামিক্যাল এডিটিবস মানুষের শরীরে ঢুকে ক্যানসার, বন্ধ্যত্ব ও অটিজমের মতো রোগ সৃষ্টি করছে।’

প্রফেসর ড. স্বপন কুমার পালিতের তত্ত্বাবধানে চুয়েট ছাত্র প্রকৌশলী পিয়াল বড়ুয়া ও প্রকৌশলী আল আমিন এই গবেষণা পরিচালনা করেন। নগরীর বাকলিয়া, চান্দগাঁও, মুরাদপুর, চকবাজার, খাতুনগঞ্জ, আগ্রাবাদ, সিইপিজেডসহ ১৫টি ওয়ার্ড এই গবেষণার আওতায় ছিল। প্রায় এক বছর ধরে চলা এই গবেষণা সার্বিক সহযোগিতা করে বাংলাদেশ পরিবেশ ফোরাম।

পরিবেশকর্মী দিলরূবা খানমের সঞ্চালনায় বাংলাদেশ পরিবেশ ফোরামের সভাপতি ও চুয়েট ভিসি (প্রাক্তন) প্রফেসর ড. জাহাঙ্গীর আলমের সভাপতিত্বে আয়োজিত সাংবাদিক সম্মেলনে এই গবেষণা প্রবন্ধ উপস্থাপন করা হয়।

এ অবস্থায় ওই সাংবাদিক সম্মেলন থেকে সড়ক কার্পেটিংয়ে বিটুমিনের সঙ্গে প্লাস্টিক ব্যবহারের সম্ভাব্যতা যাচাইয়ে সিটি করপোরেশনকে অনুরোধ করেছেন বাংলাদেশ পরিবেশ ফোরামের সভাপতি ও চুয়েট ভিসি (প্রাক্তন) প্রফেসর ড. জাহাঙ্গীর আলম।

এ সময় বাংলাদেশ পরিবেশ ফোরামের সিনিয়র সহসভাপতি গবেষণা প্রবন্ধের মডারেটর চুয়েট প্রফেসর ড. স্বপন কুমার পালিত, সিনিয়র সহসভাপতি প্রফেসর ড. ইদ্রিস আলী, সহসভাপতি লোকমান দয়াল, সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক ও সিনিয়র সাংবাদিক আলীউর রহমান, যুগ্ম সম্পাদক অধ্যাপক প্রদীপ কুমার দাশ, অধ্যাপক মনোজ কুমার দেব, সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম পেয়ার আলী, সদস্য জসিম উদ্দিনসহ আরও অনেকেই উপস্থিত ছিলেন।

এ বিভাগের আরো খবর