বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

‘সাম্প্রদায়িক পরিস্থিতি উসকে দিতে প্রীতম গ্রেপ্তার’

  •    
  • ১০ সেপ্টেম্বর, ২০২২ ১৫:০৯

রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের ভাষ্য, ‘শ্রীমঙ্গলের পরিস্থিতি যখন পুরোপুরি স্বাভাবিক হয়ে গেছে এবং কোনো সাম্প্রদায়িক হামলাও করা যায়নি, তখন আবারও সাম্প্রদায়িক উত্তেজনাকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ব্যবহার শুরু করেছে সরকার। আসন্ন দুর্গাপূজাকে সামনে রেখে দেশকে আবারও সংঘাতের দিকে ঠেলে দিতে চাচ্ছে এই ভোটারবিহীন মাফিয়া সরকার।’

ধর্ম অবমাননার অভিযোগে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় গ্রেপ্তার রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের নেতা প্রীতম দাশকে অবিলম্বে মুক্তির দাবি জানিয়েছে সংগঠনটি।

তাদের দাবি, দেশে সাম্প্রদায়িক পরিস্থিতি উসকে দিতে গ্রেপ্তার করা হয়েছে পাকিস্তানের দুর্দশা নিয়ে দেশটির লেখক সাদত হোসেন মান্টোর উক্তি ফেসবুকে পোস্ট করা প্রীতমকে।

রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে শনিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব দাবি করা হয়।

প্রীতমের বিরুদ্ধে ধর্ম অবমাননার অভিযোগ এনে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করেছিলেন স্থানীয় ছাত্রলীগ কর্মী মাহবুব আলম ভুঁইয়া। সে মামলায় শুক্রবার সন্ধ্যায় শ্রীমঙ্গল শহরের একটি বাড়ি থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

শ্রীমঙ্গল থানার ওসি (পরিদর্শক-তদন্ত) হুমায়ুন কবির নিউজবাংলাকে জানান, গত ৪ সেপ্টেম্বর মামলাটি করেছিলেন মাহবুব।

রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের জাতীয় নির্বাহী কমিটির মিডিয়া ও প্রচার সম্পাদক সৈয়দ হাসিবউদ্দীন হোসেন স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, প্রীতমের মুক্তির দাবিতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক হাসনাত কাইয়ূম, সাংগঠনিক সম্পাদক ইমরান ইমন, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক হাসিবউদ্দিন হোসাইন, সাংগঠনিক সম্পাদক রাখাল রাহাসহ অনেকে।

বিজ্ঞপ্তিতে সংবাদ সম্মেলনে দেয়া হাসনাত কাইয়ূমের বক্তব্য উদ্ধৃত করে বলা হয়, ‘সরকার এবং প্রশাসনের একটি অংশ পরিকল্পিতভাবে দেশে সাম্প্রদায়িক অস্থিরতা তৈরি করছে৷ প্রতিবেশী ভারতের সাম্প্রদায়িক শক্তির হাতে হাতিয়ার তুলে দিতে বাংলাদেশকে তারা সাম্প্রদায়িক দেশ হিসেবে চিহ্নিত করাতে চায়৷ প্রীতমকে সে জন্যই বিনা কারণে গ্রেপ্তার করা হয়েছে৷’এতে আরও বলা হয়, ‘পরিকল্পিতভাবে সাম্প্রদায়িক পরিস্থিতিকে উসকে দিতে প্রীতম দাশকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে ছাত্রলীগের একাংশের মদদে।’রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ২৭ আগস্ট চা শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধির দাবির সঙ্গে সংহতি জানিয়ে রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন শ্রীমঙ্গলে একটি ‘সংহতি সমাবেশের’ আয়োজন করেছিল৷ সেই সমাবেশে শ্রীমঙ্গল পুলিশের একাংশের মদদে স্থানীয় ছাত্রলীগের একটি অংশ হামলা চালায়৷ রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের জাতীয় সমন্বয় কমিটির দুই সদস্য প্রীতম দাশ-রিয়াজ খানসহ অন্তত ১০ জন সেই হামলায় গুরুতর আহত হন।

হামলার এক দিন পর গুরুতর আহত অবস্থাতেই হামলাকারীদের নাম প্রকাশ করে তাদের শাস্তির দাবিতে শ্রীমঙ্গল প্রেস ক্লাবে পরপর দুটি সংবাদ সম্মেলন করা হয়। সেখানে প্রীতম হামলাকারীদের নাম-পরিচয় প্রকাশ করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানান।সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, ‘এই সংবাদ সম্মেলনের (প্রীতম দাশের করা) পরিপ্রেক্ষিতে হামলাকারীদের বিরুদ্ধে শ্রীমঙ্গলে ব্যাপক জনমত ও সামাজিক ঐক্য তৈরি হয়। ফলে স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনের একাংশের প্রত্যক্ষ মদদে হামলাকারী ছাত্রলীগ নেতা আবেদ হোসেন প্রীতম দাশের ধর্মীয় পরিচয় ব্যবহার করে পরিকল্পিতভাবে সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা তৈরি করার ক্ষেত্রে নেতৃত্ব দেন। পরবর্তী সময়ে শ্রীমঙ্গলে আগে থেকেই সাম্প্রদায়িক পরিস্থিতি তৈরি করতে সক্রিয় একটি চক্র এই সাম্প্রদায়িক প্রচারণায় অংশ নেয় এবং শ্রীমঙ্গল শহরে একটি মিছিল বের করে৷

‘সেই মিছিলে প্রীতম দাশের ছবি ব্যবহার করে দাবি করা হয়েছিল, প্রীতম দাশ ধর্মানুভূতিতে আঘাত করেছেন এবং তিনি রাষ্ট্রদ্রোহী, তাকে যেন গ্রেপ্তার করা হয়। সেখান থেকে আলটিমেটাম দেয়া হয়েছিল তাকে গ্রেপ্তার করা না হলে তার পরের শুক্রবার (২ সেপ্টেম্বর) বাদ জুমা আরও বড় পরিসরে তারা মিছিল করবে। তাদের এই ঘোষণা ও কৃত্রিম সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা তৈরির অপচেষ্টা বাংলাদেশের বিভিন্ন পর্যায়ের মানুষের সহায়তায় ভেস্তে যায়।

‘সারা দেশ থেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লেখালেখি করা হয় এবং সবচেয়ে বড় ভূমিকা নেয় শ্রীমঙ্গলের স্থানীয় সামাজিক নেতৃত্ব। সেখানকার মুসলমান, হিন্দু, রাজনৈতিক, সামাজিক বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃত্ব এগিয়ে এসে সেই জুমার পরে ঘটতে যাওয়া সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা ঠেকিয়ে দেয়। দেশের সাম্প্রতিক সময়কালে প্রথমবারের মতো গণবিরোধী সাম্প্রদায়িক ফাঁদ কীভাবে ভেস্তে দিতে হয়, তার একটা নজির তৈরি করে শ্রীমঙ্গল।’

সরকার সাম্প্রদায়িক উত্তেজনাকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ব্যবহার করছে অভিযোগ করে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘সাম্প্রদায়িক হামলার ষড়যন্ত্র রুখে দেয়ার পরও থেমে থাকেনি ওই মহল। শ্রীমঙ্গলের পরিস্থিতি যখন পুরোপুরি স্বাভাবিক হয়ে গেছে এবং কোনো সাম্প্রদায়িক হামলাও করা যায়নি, তখন আবারও সাম্প্রদায়িক উত্তেজনাকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ব্যবহার শুরু করেছে সরকার। আসন্ন দুর্গাপূজাকে সামনে রেখে দেশকে আবারও সংঘাতের দিকে ঠেলে দিতে চাচ্ছে এই ভোটারবিহীন মাফিয়া সরকার।

‘সরকারের দুঃশাসন, ন্যায্য আন্দোলনে গুলি চালিয়ে মানুষ খুন, ভোটারবিহীনভাবে ক্ষমতা কুক্ষিগত করা, আসন্ন নির্বাচনে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দাবিতে দেশের মানুষের মধ্যে যে রকম গণ-অসন্তোষ তৈরি হয়েছে, সেগুলো থেকে মানুষের দৃষ্টি ভিন্ন দিকে সরিয়ে দিতে এই অপতৎপরতা শুরু করেছে সরকার।‘আমরা অবিলম্বে প্রীতম দাশের বিরুদ্ধে হওয়া এই মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করে তাকে সুস্থভাবে মুক্তি দেয়ার জোর দাবি জানাচ্ছি। আর বাংলাদেশের সব মানুষকে এই জুলুমের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।’

এ বিভাগের আরো খবর