বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক কূটনীতির রোল মডেল: শেখ হাসিনা

  •    
  • ৭ সেপ্টেম্বর, ২০২২ ১৮:২৩

বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যকার সম্পর্ককে বিশ্ব কূটনীতিতে রোল মডেল হিসেবে দেখেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধের সময় দেশটির যে ভূমিকা, তা কখনও ভোলার নয়। আর তার সরকারের আমলে গত এক বছরে এই সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় পৌঁছেছে।

চার দিনের নয়াদিল্লি সফরে তৃতীয় দিন বুধবার বিকেলে শেখ হাসিনা ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদ এবং যুদ্ধাহত ভারতীয় সৈনিকদের পরিবারের মধ্যে ‘মুজিব স্কলারশিপ’ বিতরণ করেন।

অনুষ্ঠানে দশম শ্রেণি পর্যায়ে ১০০ জন এবং দ্বাদশ শ্রেণি পর্যায়ে আরও ১০০ জনকে বৃত্তি দেয়া হয়। একেকজনের হাতে তুলে দেয়া হয় এক হাজার ডলার।

এ সময় তিনি বাংলাদেশের মুক্তি সংগ্রাম থেকে শুরু করে বর্তমান সময় পর্যন্ত দুই দেশের সহযোগিতামূলক সম্পর্ক তুলে ধরেন।

তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক এখন বিশ্বব্যাপী প্রতিবেশী কূটনীতির রোল মডেল হিসেবে পরিচিত। গত ৫০ বছরে একটি শক্তিশালী অংশীদারত্ব তৈরি করে, উভয় দেশ ক্রমবর্ধমান বিস্তৃত খাতভিত্তিক সহযোগিতার জন্য কাজ করছে। সামুদ্রিক ও স্থল সীমানার সীমানা নির্ধারণ নিয়ে দীর্ঘস্থায়ী জটিলতার সমাধান তারই সাক্ষ্য বহন করে।’

নতুন প্রজন্মকে আগামী ৫০ বছর বা তারও বেশি সময় ধরে বন্ধুত্বের মশালকে এগিয়ে নিয়ে যাবে বলেও আশা করেন প্রধানমন্ত্রী।

অনুষ্ঠানে মুক্তিযুদ্ধের সময় ভারতের ভূমিকার স্মরণ করে কৃতজ্ঞতা জানান বাংলাদেশের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কন্যা।

মুক্তিযুদ্ধে শহীদ ভারতীয় নাগরিকদের শ্রদ্ধা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধে আমাদের যেসব ভারতীয় ভাই জীবন উৎসর্গ করেছেন, রক্ত দিয়েছেন, আমরা তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই। জীবন উৎসর্গকারী সেইসব সাহসী বীরদের স্মরণ করা আমাদের জন্য গর্বের। আমাদের সেসব সাহসী বীরগণকে অভিবাদন।’

বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে ভারতের ভূমিকা ছিল অনন্যসাধারণ। ২৫ মার্চ কালরাতে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী অপারেশন সার্চলাইট শুরু করার পর থেকে শরণার্থীর যে ঢল নামে, তাদের কখনও বাধা দেয়নি ভারত।

বাংলাদেশের প্রবাসী সরকারকে আশ্রয় দেয়া, মুক্তিযোদ্ধাদের প্রশিক্ষণ ও অস্ত্র সরবরাহ, আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশের স্বাধীনতার পক্ষে জনমত গঠন এবং শেষ বেলায় নিজেরাও সরাসরি যুদ্ধে যোগ দেয় ভারত। বাংলাদেশ ও ভারতের যৌথ কমান্ডের কাছে আত্মসমর্পণ করে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী।

শেখ হাসিনা পাঁচ দশক আগের সেই ভূমিকার স্মরণ করেন। বলেন, ‘১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে কেবল এক কোটি শরণার্থীকে আশ্রয় দেয়নি, এ দেশের সেনারা আমাদের মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে বুকের তাজা রক্ত ঢেলে দিয়েছিল। আমরা যেন এই অবদান কোনো দিন না ভুলি।’

বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর বাংলাদেশ ও ভারতের সম্পর্ক নানা চড়াই-উতরাইয়ের মধ্য দিয়ে যায়। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার পর পরিবর্তিত রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে অনেক তিক্ততা, সন্দেহ, অবিশ্বাসের মধ্য দিয়ে পথ চলছিল দুই দেশ। স্থলসীমানা চুক্তি বাস্তবায়নে বিলম্ব, জলসীমানা চিহ্নিত না হওয়া, আকাশচুম্বী বাণিজ্য ঘাটতি, সীমান্ত হত্যা, অভিন্ন নদীর পানি বণ্টনজনিত সমস্যার প্রভাব পড়ে দুই দেশের মানুষের সম্পর্কেও।

গত এক দশকে সীমান্ত চুক্তি বাস্তবায়নে বাংলাদেশ ১০ হাজার একর জমি বেশি পেয়েছে। জলসীমানা চিহ্নিত হয়েছে। সীমান্ত হত্যা অনেকটাই কমে এসেছে। এটিকে শূন্যে নামাতে দুই দেশ কাজ করার কথা জানিয়েছে। তবে অভিন্ন নদীর পানিবণ্টন ইস্যুর পাশাপাশি সীমান্তে বিএসএফের গুলির বিষয়টির সমাধান না হওয়া এখনও সম্পর্কের কাঁটা হয়ে রয়েছে।

এবারের সফরেও বাংলাদেশের বহুল কাঙ্ক্ষিত তিস্তা চুক্তি সই হয়নি। তবে কুশিয়ারার পানিবণ্টন নিয়ে একটি সমঝোতা হয়েছে। শেখ হাসিনা আশাবাদী তিস্তা চুক্তিও হয়ে যাবে।

সফরের দ্বিতীয় দিন ভারতীয় সরকারপ্রধান নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে সাতটি বিষয়ে সমঝোতা স্মারকে সই করার পর শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা বন্ধুত্ব ও সহযোগিতার মনোভাব নিয়ে অনেক অনিষ্পন্ন সমস্যার সমাধান ইতোমধ্যে করেছি। আমি আশা করি তিস্তার পানি বণ্টন চুক্তিসহ অন্যান্য অনিষ্পন্ন বিষয়গুলো শিগগির করতে পারব।’

তিনি বলেন, ‘আমি প্রধানমন্ত্রী মোদিকে ধন্যবাদ জানাই, আজকে আমরা কুশিয়ারা ইস্যু সমাধান করেছি এবং আমি আশাবাদী, মোট যে ৫৪টি নদী আছে, সেগুলো… আমি জানি, যতক্ষণ পর্যন্ত মোদি আছেন, বাংলাদেশ-ভারত আমরা সব সমস্যার সমাধান করে ফেলব।’

বৃত্তি প্রদান অনুষ্ঠানে দুই দেশের তরুণদের ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করার আহ্বান জানান শেখ হাসিনা। বলেন, বীর যোদ্ধাদের বংশধররা তাদের পূর্বপূরুষদের মতো বাংলাদেশ-ভারত বন্ধুত্বের দূত হিসেবে কাজ করছে। এটা দেখতে তিনি সত্যিই খুব পছন্দ করছেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা মনে করি অতীতের নেতাদের মতো উভয় দেশের তরুণদের আরও ঘনিষ্ঠভাবে যোগাযোগ করা প্রয়োজন। দুই দেশের মধ্যকার ইতিহাসের সঙ্গে সংযোগ স্থাপন করতে হবে। কারণ, তারাই ভবিষ্যতের নেতা। সীমান্তের দুই পারের নেতাদের মধ্যে অবশ্যই ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করতে হবে।

এ বিভাগের আরো খবর