ফরিদপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে বুধবার ভোর ৪টার দিকে এক ব্যক্তিকে অচেতন অবস্থায় নিয়ে আসে তিনজন। অসুস্থ বলে ভর্তি করে রেখে তারা লাপাত্তা হয়ে যায়। সে সময় হাসপাতালে ছিলেন ইন্টার্ন চিকিৎসকরা।
জ্ঞান ফিরলে ওই ব্যক্তি জানান, তার ওপর জমির বিরোধের জেরে হামলা হয়েছে। মৃত ভেবে তাকে হাসপাতালে ফেলে রেখে হামলাকারীরা পালিয়েছে।
এসব নিউজবাংলাকে জানিয়েছেন হাসপাতালের কর্তব্যরত ইন্টার্ন চিকিৎসক কামাল হোসেন।
তিনি বলেন, ‘আমরা তাকে মুমূর্ষু অবস্থায় পাই। তার হাতে ও পায়ের হাড় ভেঙে গেছে। এখন চিকিৎসা চলছে।’
তিনি জানান, ওই ব্যক্তির নাম বশির হাওলাদার। তার বাড়ি ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলার চান্দ্রা ইউনিয়নের মালিগ্রাম কলাতলা গ্রামে।
খবর পেয়ে ভাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জিয়ারুল ইসলাম জানিয়েছেন, আহতের পরিবারকে থানায় এসে অভিযোগ দিতে বলা হয়েছে।
হাসপাতালে গিয়ে কথা হয় বশিরের সঙ্গে। নিউজবাংলাকে তিনি জানান, মঙ্গলবার গভীর রাতে তাকে রড দিয়ে পেটানো হয়েছে।
বশিরের স্ত্রী রাশেদা বেগম নিউজবাংলাকে জানান, রাতে প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে ঘর থেকে বের হন তার স্বামী। এরপর আর ফেরেননি। বুধবার সকালে হাসপাতাল থেকে কল দিয়ে জানানো হয় যে বশির সেখানে ভর্তি।
বশির বলেন, ‘রাতে ঘর থেকে বের হলে রেজাউল মাতুব্বরের ছেলে শাহিন মাতুব্বর, সাদ্দামসহ ছয়-সাতজন আমার মুখ চেপে পাশের মাঠে নিয়ে যায়। শাহিন আমাকে রড দিয়ে পেটাতে থাকে। আমি ছুটে দৌড় দিই। তারা আবার আমাকে ধরে ফেলে ও পেটাতে থাকে।
‘এ সময় ওরা ফোন করে মজিদ শেখের ছেলে শাহাবুদ্দিনকে ডেকে আনে। শাহিন বলতে থাকে আমি নাকি মরে গেছি তাই পালাতে হবে। তখন শাহাবুদ্দিন আমাকে হাসপাতালে দিয়ে আসতে বলে। এরপর আমার আর জ্ঞান ছিল না। সকালে জ্ঞান ফিরলে আমি পাশের বেডের একজনকে আমার স্ত্রীর নাম্বার দিয়ে কল করতে বলি।’
কেন হামলা হয়েছে? জানতে চাইলে বশিরের ছেলে রাশেদ হাওলাদার বলেন, ‘আমার ভগ্নিপতি আনু মাতুব্বরের সঙ্গে প্রতিবেশী ছবেদ আলী ও রেজাউল মাতুব্বরের জমির সীমানা নির্ধারণ নিয়ে বিরোধ চলছিল। রেজাউল মাতুব্বর ও ছবেল আলী তাদের ওয়ারিশের কিছু মাঠের জমি বিক্রি করে, যা আমার ভগ্নিপতির জমি-লাগোয়া।
‘রেজাউল ও ছবেল আলীকে তাদের জমি বুঝিয়ে দেয়ার সময় আমার ভগ্নিপতি জমির সীমানা মেপে নির্ধারণ করে দিতে বলেন। কারণ তারা অতিরিক্ত জমি জোর করে দখল করতে চাচ্ছিলেন। গত রোববার এই নিয়ে কথা-কাটাকাটির একপর্যায়ে তাদের সঙ্গে আমাদের হাতাহাতিও হয়।
‘এর জের ধরে গত রাতে রেজাউল মাতুব্বরের ছেলে শাহিন, সাদ্দাম, শাহাবুদ্দিন ও ছবেদ আলী মিলে আমার বাবাকে তুলে নিয়ে হত্যার চেষ্টা করে।’