দুই দিন বন্ধ থাকার পর সীমান্তের ওপারে মিয়ানমারে আবারও উত্তেজনা শুরু হয়েছে। মঙ্গলবার সকাল ৭টা থেকে থেমে থেমে ভারী অস্ত্রের বিকট শব্দ ভেসে আসছে বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম ইউনিয়নের তুমব্রু সীমান্তে।
স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আজিজ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
নিউজবাংলাকে তিনি বলেন, ‘সীমান্তের ওপারে দুই দিন ফায়ারিং বন্ধ ছিল। কিন্তু মঙ্গলবার সকাল থেকে আবারও থেমে থেমে গোলাগুলির শব্দ ভেসে আসছে। তবে সীমান্তের আকাশে কোনো হেলিকপ্টার বা যুদ্ধবিমান উড়তে দেখা যায়নি।’
গত প্রায় এক মাস ধরে মিয়ানমার সীমান্তে উত্তেজনা বিরাজ করছে। ওপারের সীমান্ত থেকে আসা মর্টার শেলসহ নানা ভারী অস্ত্রের আওয়াজে এপারের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম ইউনিয়নের তুমব্রু ও বাইশপারী এলাকার মানুষের ঘুম হারাম কয়েক দিন ধরে।
গত ২৮ আগস্ট পরপর দুইটি মর্টার শেল এসে পড়েছিল সীমান্তের তুমব্রু উত্তরপাড়া এলাকায়। পরে সেনাবাহিনীর লোকজন ভারী গোলাটি নিষ্ক্রিয় করে।
বৃহস্পতিবার সকালেও তুমব্রুর পশ্চিম, উত্তর ও মধ্যমপাড়ায় স্থানীয় মানুষের সঙ্গে কথা বলার সময় পরপর ১৫টি ভারী অস্ত্র নিক্ষেপের আওয়াজ শোনা যায়। তখন সেখানকার লোকজনের মধ্যেও চরম উৎকণ্ঠা বিরাজ করছিল।
সীমান্তে মর্টার শেল পড়ার ওই ঘটনায় কড়া জবাব দেয় ঢাকা। মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূত অং কিউ মোয়েকে ২৯ আগস্ট বিকেলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ডেকে এনে নোট ভারবালের মাধ্যমে এই প্রতিবাদ জানানো হয়।
এরপর ৩ সেপ্টেম্বর মিয়ানমারের দুটি যুদ্ধবিমান ও ফাইটিং হেলিকপ্টার থেকে ছোড়া অবিস্ফোরিত আরও দুটি মর্টার শেল পড়ে বাংলাদেশের বাইশপারি এলাকায়।
স্থানীয়দের বরাতে পুলিশ জানিয়েছিল, এদিন সকালে রেজু আমতলী বিজিবি বিওপির অধীন সীমান্ত পিলার ৪০-৪১-এর মাঝামাঝি মিয়ানমার সেনাবাহিনীর দুটি যুদ্ধবিমান এবং দুটি অ্যাটাক হেলিকপ্টার আসে। ওই সময় যুদ্ধবিমান থেকে আনুমানিক ৮ থেকে ১০টি গোলা ছোড়া হয়। হেলিকপ্টার থেকেও আনুমানিক ৩০ থেকে ৩৫টি গোলা ছুড়তে দেখা যায়।
মঙ্গলবার সকালে স্থানীয় সিএনজি অটোরিকশার লাইনম্যান নুরুল আবছার নিউজবাংলাকে বলেন, গত ৩ আগস্ট সবচেয়ে ভয়াবহ পরিস্থিতি দেখেছিলেন তারা। ওইদিন বাইশপারি সীমান্তে দুটি মর্টার শেলও পড়েছিল। এরপর দুই দিন বন্ধ থাকায় সীমান্তের মানুষ কিছুটা স্বস্তি ফিরে পেয়েছিল। এখন আবারও আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে তাদের মাঝে।
এ বিষয়ে জানতে বিজিবির পরিচালক (অপারেশন) লেফটেন্যান্ট কর্নেল ফয়জুর রহমানকে একাধিকবার ফোন দেয়া হলেও তার বক্তব্য জানা যায়নি।