শেরপুর পৌর শহরে ছেলের সামনে নিজের ঘরে ফ্যানের সঙ্গে ঝুলে এক নারীর আত্মহত্যার খবর পাওয়া গেছে। দুই বছর আগে তার স্বামী দুর্ঘটনায় মারা গিয়েছিলেন।
শনিবার বিকালে পৌরসভার গৃদানারায়নপুর মহল্লায় এ ঘটনা ঘটে। পরে সদর থানা পুলিশ এসে ঘরের দরজা ভেঙে নাসরিন আক্তার নামে ওই নারীর মরদেহ উদ্ধার করে মর্গে পাঠান।
নিহত ৩২ বছরের নাসরিন মৃত পরিবহন শ্রমিক বাবুর স্ত্রী ছিলেন। নাসরিনের শ্বশুরবাড়ি ঢাকার বিক্রমপুর এবং বাবার বাড়ি শেরপুরের শ্রীবরদী উপজেলার ভায়াডাঙ্গা গ্রামে।
স্বজনরা জানান, ২০২০ সালে নাসরিনের স্বামী বাবু ঢাকা-শেরপুর রোডে চলাচলরত একটি বাসে চাকুরিরত অবস্থায় সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যান। স্বামী মারা যাওয়ার পর শেরপুর শহরের গৃদানারায়নপুরের একটি বাসায় দুই বছর ধরে দুই সন্তানকে নিয়ে ভাড়া থাকতেন নাসরিন। তার ১২ বছরের বড় ছেলে নাফিজ ৫ম শ্রেণিতে পড়ে। আর ৮ বছরের ছোট ছেলে নাবিল পড়ে মাদরাসায়।
স্বজনদের দাবি, ছেলের সঙ্গে অভিসান করেই ঘরের দরজা বন্ধ করে ছেলেকে বাইরে রেখে ফ্যানে ঝুলে আত্মহত্যা করেন নাসরিন।
বড় ছেলে নাফিজ বলে, ‘প্রতিদিন আমি বাইরে খেলতে গেলে মা বকাবকি করতো। আজও তাই হয়েছে। পরে মা আমার সাথে রাগ করে ঘরের দরজা বন্ধ করে বলতে থাকে- আমি ফাঁসি দিয়ে মরে যাবো।
‘তখন আমি দরজায় ধাক্কা দিয়ে মায়ের কাছে মাফ চাই। বলি, আর কোনো দিন বাইরে যাবো না। কিন্তু দরজা না খোলায় জানালার পাশে গিয়ে দেখি মা গলায় ওড়না পেঁচিয়ে ফ্যানের সঙ্গে ফাঁস লাগার চেষ্টা করছে। এ সময় আমি চিৎকার করলে আশপাশের লোকজন এসে স্টিলের দরজা ভাঙ্গার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়। এর মধ্যে মা ফ্যানের সঙ্গে ঝুলে পড়ে।’
ঘটনার পর স্থানীয়রা শেরপুর সদর থানায় খবর দিলে পুলিশ এসে দরজা ভেঙে মরদেহ উদ্ধার করে নিয়ে যায়।
এ বিষয়ে সদর থানার ওসি বসির আহমেদ বাদল জানান, নাসরিনের মরদেহ ঘরের দরজা ভেতর থেকে লাগানো অবস্থায় ফ্যানের সঙ্গে ঝুলে ছিল। পরে পুলিশ দরজা ভেঙে তার মরদেহটি উদ্ধার করে।
এ ঘটনায় একটি অপমৃত্যু মামলা হয়েছে এবং মরদেহের ময়নাতদন্তের জন্য শেরপুর জেলা সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে বলেও জানান ওসি।