নারায়ণগঞ্জে পুলিশের সঙ্গে বিএনপি নেতাকর্মীদের সংঘর্ষের ঘটনায় জেলা বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের ৭১ জন নেতাকর্মীর নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা আরও ৫ হাজার জনকে আসামি করে মামলা হয়েছে।
নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানায় শনিবার বিকেলে মামলাটি করেন থানার এসআই মো. কামরুজ্জামান।
ইতোপূর্বে আটক হওয়া বিএনপির ১০ নেতাকর্মীকে এই মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠানো হলে বিচারক তাদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন।
নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানার পুলিশ পরির্দশক সাইদুজ্জামান এসব তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি জানান- পুলিশের ওপর ইট পাটকেল নিক্ষেপ, বক্সে হামলা, অগ্নিসংযোগ, সরকারি কাজে বাধাসহ ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনায় দণ্ডবিধি ও বিস্ফোরক আইনে মামলাটি হয়েছে।
মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, নগরীর বঙ্গবন্ধু সড়কের ২ নং রেল গেইট এলাকায় দলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের সমাবেশে অংশ নেয়া প্রায় ৫ হাজার নেতা-কর্মী সড়ক ত্যাগ না করে পুলিশের ওপর ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে। তখন পুলিশ পিছু হটলে পুলিশ বক্সেও তারা হামলা চালায়।
এ ছাড়া হামলাকারীরা ককটেল ফুটিয়ে আতঙ্ক সৃষ্টি করে। এ সময় পুলিশের কয়েকটি গাড়ি ও মোটরসাইকেলও ভাংচুর করে তারা। এই হামলায় কয়েক পুলিশ সদস্যও আহত হন।
মামলায় বিএনপির সাবেক এমপি গিয়াস উদ্দিনসহ আসামি হয়েছেন, জেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক মনিরুল ইসলাম রবি, সদস্যসচিব অধ্যাপক মামুন মাহমুদ, মহানগর বিএনপির জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান, সহসভাপতি আতাউর রহমান মুকুল, সাধারণ সম্পাদক আব্দুর সবুর খান সেন্টু, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাসান আহম্মেদ, সাংগঠনিক সম্পাদক আবু আল ইউসুফ খান টিপু, সহপ্রচার সম্পাদক মাকিদ মোস্তাকিম শিপলু, পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক আমিনুল ইসলাম মিঠু, সোনারগাঁ থানা বিএনপির সভাপতি আজহারুল ইসলাম মান্নান, ফতুল্লা থানা বিএনপির আহ্বায়ক জাহিদ হাসান রোজেল, জেলা শ্রমিক দলের আহ্বায়ক মন্টু মেম্বার, ফতুল্লা থানা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক সুমন আকবর, মহানগর যুবদলের যুগ্ম আহবায়ক শাহেদ আহম্মেদ, জেলা যুবদলের সদস্যসচিব মশিউর রহমান রনি, সিদ্ধিরগঞ্জ থানা যুবদল নেতা জুয়েল রানা, মহানগর বিএনপির নেতা মাসুদ রানা, মহানগর ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি মাজহারুল ইসলাম জোসেফ, তোলারাম কলেজ শাখা ছাত্রদল নেতা সাইফুল ইসলাম বিপ্লব ও শরিফ হোসেন মানিক, নয়ন, রুবেল, সোহেল, জুয়েল আরমান, মুরাদ হাসান, স্বপন চৌধুরী, একরামুল কবির মামুন, আনিছ, জামাল কাজী মো. সালু, ইকবাল, রতন, সোহাগ জাহাঙ্গীর, আরিফ, ওমর আলী, রাজ্জাক, সালাহউদ্দিন, রাজু আহম্মেদ, রমজান, মোস্তফা কামাল, আবুল হোসেন, কামরুল হাসান সেন্টু, রফিকুল ইসলাম, জাকির রাসেল, মাহমুদ হোসেন কাজল, কানা আক্তার, আবুল সর্দ্দার, সাজু, লিংরাজ খান, লিংকন খান সনেট, জিয়া উদ্দিন জিয়া, রয়েল, ফয়জুল্লাহ সজল, মো. রশিদ, মুছা ফারুক, রুবেল, শফিকুল।
এ ছাড়া মামলায় বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের আরও ৫ হাজার নেতাকর্মীকে অজ্ঞাতনামা হিসেবে আসামি করা হয়েছে।
আদালত পুলিশের পরির্দশক আসাদুজ্জামান জানান, আসামিদের মধ্যে ১০ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। বিকেলে তাদেরকে নারায়ণগঞ্জের সিনিয়র জুডিশিয়াল মেজিস্ট্রেট নুর মহসিনের আদালতে হাজির করা হলে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেয়া হয়।
কারাগারে যাওয়া নেতাকর্মীরা হলেন- মো. আ. সাত্তার, মজিবুর রহমান, রঞ্জন কুমার দেবনাথ, রাজিব, জনি, বাদল, আবুল কালাম ভূইয়া, রিমন, ইমন ও সোবাহান।
জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) আমীর খসরু জানান, এর আগে বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৮টায় সংঘর্ষে নিহত শাওন প্রধানের বড় ভাই মিলন প্রধানও একটি হত্যা মামলা করেছেন। ওই মামলায় বিএনপির অজ্ঞাত ৫ হাজার নেতা-কর্মীকে আসামি করা হয়েছে। তাদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।