নারায়ণগঞ্জে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে নিহত শাওনকে বিএনপি যুবদলের কর্মী দাবি করলেও তাতে দ্বিমত রয়েছে তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদের।
সচিবালয়ে বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী দাবি করেন, শাওন এক আওয়ামী লীগ নেতার ভাতিজা। তিনি পথচারী ছিলেন কি না সেটি তদন্তাধীন।
মন্ত্রী বলেন, ‘যে ছেলেটি মারা গেছে, সে একটি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের ভাতিজা। নিহত ব্যক্তি বিএনপির কর্মী, না পথচারী সেটি এখনও তদন্তাধীন। আমি পুলিশ প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলেছি।’
বিএনপির ৪৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে পূর্বঘোষিত কর্মসূচিতে যোগ দিতে সকাল থেকে বঙ্গবন্ধু সড়কের ২ নম্বর রেলগেট এলাকায় জড়ো হতে থাকেন বিএনপিসহ এর অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীরা। সকাল সাড়ে ১০টার দিকে মিছিল বের করতে গেলে বাধার মুখে পড়েন তারা।
বেলা পৌনে ১১টার দিকে পুলিশের সঙ্গে তাদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া শুরু হয়। পরে নেতা-কর্মীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করতে থাকেন। তাদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ টিয়ার শেল ও রাবার বুলেট ছোড়ে। এই সংঘর্ষের মধ্যই শাওন নিহত হন।
আরও পড়ুন: নারায়ণগঞ্জে পুলিশ-বিএনপি সংঘর্ষে নিহত ১
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘অবশ্যই মানুষ মারা গেছে। আপনারা জানেন বিএনপি তো মানুষ মারার রাজনীতিটাই করে। তারা ২০১৪ ও ২০১৫ সালে মানুষকে পুড়িয়ে মেরেছে।’
বিএনপি সারা দেশে ‘গণ্ডগোল করার পরিকল্পনা’ করে নানা কর্মসূচি সাজিয়েছে বলেও অভিযোগ করেন তথ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘বিএনপি সারা দেশে গণ্ডগোল করার পরিকল্পনা করে নানা কর্মসূচি সাজিয়েছে। সেই কারণে সারা দেশে তারা পুলিশের ওপর হামলা পরিচালনা করছে। পথচারীদের ওপর হামলা পরিচালনা করছে।
‘মানুষের সম্পত্তির ওপর হামলা পরিচালনা করছে। অর্থাৎ ২০১৩, ২০১৪, ২০১৫ সালে যে কাজগুলো করেছিল, সেটির নতুন সংস্করণ তারা শুরু করেছে দেশে একটি বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি তৈরি করার জন্য।’
তিনি বলেন, ‘আমি নারায়ণগঞ্জে পুলিশ প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলেছি। সেখানে পুলিশ, জেলা প্রশাসন কিংবা সিটি করপোরেশনের অনুমতি ছাড়া বিএনপি সেখানে রাস্তা বন্ধ করে সমাবেশ করছিল। পুলিশ তাদের রাস্তা বন্ধ করে সমাবেশ না করে দলীয় কার্যালয়ে সমাবেশ করার জন্য বলেছিল। সেটি তারা না শুনে রাস্তা বন্ধ করে দেয় এবং পুলিশের ওপর ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করতে থাকে।
‘পুলিশের ওপর হামলা পরিচালনা করে। পুলিশ বক্স ভাঙচুর করে। পুলিশ আত্মরক্ষার্থে সেখানে টিআর গ্যাস ছুড়েছে এবং লাঠিচার্জ করেছে। এভাবেই সেখানে ভেন্ডালিজম (ধ্বংসাত্মক কার্যক্রম) করা হয়েছে বিএনপির পক্ষ থেকে। তারা গণ্ডগোল করে সারা দেশে আরও লাশ সৃষ্টি করতে চায়। বিএনপি পরিকল্পিতভাবে দেশে অস্থিরতা তৈরি করার অপচেষ্টা হিসেবে এ ঘটনাগুলো ঘটাচ্ছে।’