বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

কী দুর্ভাগ্য, প্রধানমন্ত্রীর শিষ্টাচার নেই: ফখরুল

  •    
  • ৩১ আগস্ট, ২০২২ ১৫:১৯

‘তিনি (শেখ হাসিনা) গতকাল খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা নিয়ে যে ধরনের উক্তি করেছেন, আমরা ভাবতেও পারি না প্রধানমন্ত্রীর চেয়ারটা বৈধ হোক আর অবৈধ হোক এই ধরনের উক্তি কেউ করতে পারে। এর একটাই কারণ-প্রতি মুহূর্তে তিনি খালেদা জিয়াকে হিংসা করেন, তাকে সহ্য করতে পারেন না।’

বেগম খালেদা জিয়ার অসুস্থতা নিয়ে মন্তব্যের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সমালোচনা করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেছেন, সরকারপ্রধানের বক্তব্য রাজনৈতিক শিষ্টাচারবহির্ভূত।

খালেদা জিয়ার হাসপাতালে ভর্তি হওয়া নিয়ে নাটক সাজানো হচ্ছে বলে শেখ হাসিনা বক্তব্য রাখার পরদিন বুধবার নয়াপল্টনের দলীয় কার্যালয়ে এক অনুষ্ঠানে এর প্রতিক্রিয়া জানান বিএনপি নেতা।

বিএনপি নেত্রীর ‍সুস্থতা কামনায় যুবদলের দোয়া ও মিলাদের আয়োজনে যোগ দিয়েছিলেন তিনি।

ফখরুল বলেন, ‘কী দুর্ভাগ্য এই দেশ ও জাতির, যে দেশে একটি অনির্বাচিত সরকারের প্রধানমন্ত্রী ক্ষমতায় বসে আছেন যার ন্যূনতম রাজনৈতিক শিষ্টাচার নেই! তিনি গতকাল খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা নিয়ে যে ধরনের উক্তি করেছেন, আমরা ভাবতেও পারি না প্রধানমন্ত্রীর চেয়ারটা বৈধ হোক আর অবৈধ হোক এই ধরনের উক্তি কেউ করতে পারে। এর একটাই কারণ- প্রতিমুহূর্তে তিনি খালেদা জিয়াকে হিংসা করেন, তাকে সহ্য করতে পারেন না।’

খালেদা জিয়া তার ন্যূনতম চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন অভিযোগ করে বিএনপি নেতা আরও বলেন, ‘ডাক্তাররা বারবার বিদেশে বিশেষায়িত হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য বললেও সরকার রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে কর্ণপাত করছে না।’

দুর্নীতির দুই মামলায় ১৭ বছরের কারাদণ্ড হওয়া বিএনপি নেত্রী ২০২০ সালের ২৫ মার্চ সাময়িক মুক্তি পান প্রধানমন্ত্রীর নির্বাহী এক আদেশে। ওই আদেশে দণ্ড ছয় মাসের জন্য স্থগিত করা হয়, যার মেয়াদ এর পরও আরও চারবার ছয় মাস করে বাড়ানো হয়েছে।

এই মুক্তির সময় দুটি শর্ত দেয়া হয়, যার একটি ছিল বিএনপি নেত্রী দেশের বাইরে যেতে পারবেন না। যদিও মাঝে কয়েকবার বিএনপি নেত্রীকে হাসপাতালে ভর্তি করার পর দল এবং পরিবারের পক্ষ থেকে তাকে দেশের বাইরে যাওয়ার সুযোগ দেয়ার দাবি ওঠে। একবার বিএনপির পক্ষ থেকে এমনও বলা হয়, তাদের নেত্রীর জীবন সংকটে। এমনকি তার জন্য সারা দেশে দোয়ার আয়োজনও করা হয়।

সে সময় বিএনপি এবং খালেদা জিয়ার দলীয় চিকিৎসকদের পক্ষ থেকে বলা হয়, দেশে তাদের নেত্রীর রোগের চিকিৎসা নেই। বিদেশ যেতে না দিলে তিনি মারা যেতে পারেন।

আগামী ২৫ সেপ্টেম্বর বিএনপি নেত্রীর সাময়িক মুক্তির মেয়াদ শেষ হচ্ছে। এর মধ্যে তিনি আবার হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। আর বিএনপির পক্ষ থেকে আবার তাদের নেত্রীকে বাইরে যাওয়ার সুযোগ দেয়ার দাবি তোলা হচ্ছে।

প্রধানমন্ত্রী সেই বিষয়টি তুলে ধরেই বলেন, ‘গাড়িতে করে উনি (খালেদা জিয়া) হলুদ শাড়ি পরে হাসপাতালে গেলেন। এখন রিপোর্টের খুবই খারাপ অবস্থা। বিদেশে না পাঠালে নাকি চিকিৎসা হবে না। এভারকেয়ার তো চমৎকার চিকিৎসা করেছে। সব থেকে আধুনিক চিকিৎসা, সব থেকে এক্সপেনসিভ চিকিৎসা তাকে দেয়া হচ্ছে।’

খালেদা জিয়াকে যথেষ্ট ‘দয়া’ দেখানো হয়েছে বলেও মনে করেন সরকারপ্রধান। বলেন, ‘খালেদা জিয়া অসুস্থ, তাকে বিদেশে পাঠাও। আহ্লাদের আর শেষ নেই! পৃথিবীতে কোন দেশে আছে! এতিমের অর্থ আত্মসাৎ করে সাজাপ্রাপ্ত আসামি জেলে ছিল। অন্তত আমি এটুকু দয়া করেছি, ঠিক আছে বয়োবৃদ্ধ মানুষ বা অসুস্থ, হাঁটতে চলতে উঠতে বসতে অসুবিধা, শুলে একজন না ধরলে উঠতে পারে না, জেলখানায় যখন এ অবস্থা দেখেছি, ঠিক আছে যেটুকু আমার ক্ষমতা আছে, এক্সিকিউটিভ যে পাওয়ার আমার আছে তার মাধ্যমে তাকে আমি তার বাসায় থাকার সুযোগটা করে দিয়েছি।

‘এখন উনি (খালেদা জিয়া) সেজেগুজে মেকআপ নিয়ে, একেবারে ভ্রু-ট্রু এঁকে হাসপাতালে যান, আর এদিকে আবার তার ডাক্তাররা রিপোর্ট দেয় খুবই খারাপ অবস্থা, একেবারে নাকি যায়। তার লিভার নাকি পচে শেষ। লিভার সাধারণত পচলে মানুষ কী বলে, সেটা আমি মুখ দিয়ে বলতে চাই না। কী খেলে তাড়াতাড়ি লিভার পচে?’

ফখরুলের অভিযোগ, তাদের দলের নেত্রীকে যে সাজা দেয়া হয়েছে, তাতে ন্যায়বিচার হয়নি। তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে দেশে ন্যায়বিচার ভূলণ্ঠিত হয়েছে। তারা দেশের সব অর্জনকে ধ্বংস করে ফেলেছে। হত্যা-গুম-খুন করে দেশকে জিম্মি করে রেখেছে। তাই বিএনপির সামনে আন্দোলনের মাধ্যমে প্রতিরোধ গড়ে তোলা ছাড়া বিকল্প পথ খোলা নেই।

‘আসুন নিজেদের সংগঠিত করে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে দুর্বার গণ-আন্দোলনের মাধ্যমে সরকারকে পরাজিত করি। সরকারকে পদত্যাগ করে নিরপেক্ষ সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তরে বাধ্য করতে হবে।’

ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির সভাপতি আমানউল্লাহ আমান, দক্ষিণের সভাপতি আবদুস সালাম, যুবদলের সভাপতি সুলতান সালাহউদ্দিন টুকুও এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

এ বিভাগের আরো খবর