সংসদে উত্থাপিত ‘গণমাধ্যমকর্মী (চাকরির শর্তাবলি) বিল-২০২২’ পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য আরও ৬০ কার্যদিবস সময় পেয়েছে এ-সংক্রান্ত সংসদীয় কমিটি।
মঙ্গলবার জাতীয় সংসদের অধিবেশনে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি হাসানুল হক ইনু বিলটি পরীক্ষার জন্য দ্বিতীয়বারের মতো এই সময় চান।
পরে স্পিকার তার প্রস্তাবটি ভোটে দিলে সংসদ তাতে অনুমোদন দেয়।
গত ২৮ মার্চ খসড়া এই আইনটি সংসদে তোলেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী হাছান মাহমুদ। পরে বিলটি ৬০ দিনের মধ্যে পরীক্ষা করে সংসদে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য সংসদীয় কমিটিতে পাঠানো হয়। এরপর চলতি বছরের ৬ জুন প্রথমবারের মতো ৬০ দিন সময় নেন সংসদীয় কমিটির সভাপতি।
দ্য নিউজ পেপার এমপ্লয়িজ (চাকরির শর্তাবলি) আইনে সাংবাদিক, প্রেস শ্রমিক ও প্রেস কর্মচারীদের চাকরির শর্ত, আর্থিক বিষয় ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা নির্ধারণ করা ছিল। সরকার ওই আইনকে রহিত করে সব শ্রমিকের জন্য ২০০৬ সালে ‘শ্রম আইন’ প্রণয়ন করে, যাতে সংবাদপত্রের সাংবাদিক, প্রেস শ্রমিক ও প্রেস কর্মচারীদের বিষয়গুলোও অন্তর্ভুক্ত করা হয়।
বিলটি তৈরির সময় থেকেই এর বিভিন্ন ধারা নিয়ে আপত্তি ওঠে। সাংবাদিকদের বিভিন্ন সংগঠন এবং মালিকদের সংগঠনের অনেকগুলো ধারা নিয়ে বিরোধিতা করে। সাংবাদিকদের পক্ষ থেকেও কিছু ধারা সংশোধনের দাবি জানানো হয়। এর মধ্যে বিলটি মন্ত্রিসভায় অনুমোদন দেয়ার পর ওঠে সংসদে।
সংসদে উত্থাপিত বিলে বলা হয়, গণমাধ্যমকর্মীর বেতন পরবর্তী মাসের সাত কর্মদিনের মধ্যে পরিশোধ করতে হবে। প্রতি পাঁচ বছর পর ন্যূনতম ওয়েজবোর্ড গঠন হবে। ওয়েজবোর্ড সংবাদপত্র, সংবাদ সংস্থা, বেসরকারি টেলিভিশন, বেতার ও নিবন্ধিত অনলাইন মাধ্যমের জন্য প্রয়োজনে আলাদা বেতনকাঠামো নির্ধারণ করবে।
গণমাধ্যমকর্মীদের তিনটি বিভাগ করা হয়েছে এই বিলে। সেগুলো হলো: অস্থায়ী বা সাময়িক, শিক্ষানবিশ এবং স্থায়ী।
বিলে বলা হয়েছে, গণমাধ্যমকর্মীকে সপ্তাহে অন্যূন ৪৮ ঘণ্টা কাজ করতে হবে। এর বেশি কাজ করাতে চাইলে অধিকাল (ওভার টাইম) ভাতা দিতে হবে।
এই বিল পাস হলে গণমাধ্যমকর্মীরা আর শ্রমিক থাকবেন না, তাদের গণমাধ্যমকর্মী হিসেবে অভিহিত করা হবে।
আগে গণমাধ্যমকর্মীরা চলতেন ‘দ্য নিউজ পেপার এমপ্লয়িজ (চাকরির শর্তাবলি) আইন- ১৯৭৪’ এর আওতায়। এর সঙ্গে শ্রম আইনের কিছু বিষয় সাংঘর্ষিক হচ্ছিল। পরে সাংবাদিকদেরকে শ্রম আইনের আওতায় নিয়ে শ্রমিক হিসেবে সংজ্ঞায়িত করা হয়।