আওয়ামী লীগ সরকার ছয় বছর আগে ডিজেলের দর লিটারে ৩ টাকা করে কমানোর পর বাস ভাড়া কমেনি। এবার পাঁচ টাকা কমানোর পরও একই ঘটনা ঘটবে?- এমন প্রশ্ন এরই মধ্যে ঘুরপাক খাচ্ছে।
গত ৫ আগস্ট লিটারে ৩৪ টাকা বাড়ানোর প্রভাবে পরদিন বৈঠক করে বাস ভাড়া ঢাকায় কিলোমিটারে ৩৫ পয়সা আর দূরপাল্লায় ৪০ পয়সা বাড়ানো হয়।
এবার সড়ক পরিবহন নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিআরটিএ এখনও বৈঠক ডাকেনি। তবে ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক খন্দকার এনায়েত উল্লাহ জানিয়েছেন, তারা বাস ভাড়া কমাতে প্রস্তুত আছে।
সরকার তেলের দাম নিয়ে সিদ্ধান্ত জানানোর পরপর নিউজবাংলাকে দেয়া তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় তিনি এ কথা বলেন।
৫ আগস্ট মধ্যরাত থেকে ডিজেলের দর হয় লিটারে ১১৪ টাকা, যা পাঁচ টাকা কমানোর পর হবে ১০৯ টাকা। ৩৪ টাকা বাড়ানোর পর কিলোমিটারপ্রতি ৩৫ থেকে ৪০ পয়সা করে বেড়েছিল। এরই মধ্যে ফেসবুকে বলাবলি হচ্ছে, বাস ভাড়া কি কমবে?
২০১৬ সালের ২৪ এপ্রিল সরকার ডিজেলের দর কমায়। এরপর বিআরটিএ থেকে বাস ভাড়া কিলোমিটারে ৩ পয়সার মতো কমানোর সিদ্ধান্ত আসে, যেটি আসলে প্রভাব পড়ার মতোও নয়। প্রতি ১০০ কিলোমিটারে ৩ টাকা কমানোর কথা ছিল।
সে সময় আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দর ক্রমেই কমছিল। দেশে দাম কমানোর পর প্রভাব দেখে সরকার পরে আরও দর কমানোর বিষয়ে ঘোষণা দেয়। কিন্তু সে সময় তেলের দর কমার প্রভাব বাজারে না পড়ার পর সরকার তেলের দাম আর কমায়নি।
বিআরটিএ কী করতে যাচ্ছে-এই প্রশ্নের জবাব জানতে সংস্থাটির চেয়ারম্যান নুর মোহাম্মদ মজুমদারের মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করেও কানেক্ট করা যায়নি। ফোনটি বন্ধ ছিল।
পরে এ বিষয়ে কথা হয় বাসমালিকদের সমিতির নেতা খন্দকার এনায়েত উল্লাহর সঙ্গে।
নিউজবাংলাকে তিনি বলেন, ‘তেলের দাম কমেছে, আমরা ভাড়া কমিয়ে দেব। বিআরটিএ আমাদের ডেকে বললে আমরা বাস ভাড়া কমাব।
বিআরটিএকেও আবার নতুন করে ভাড়ার তালিকা তৈরি করতে হবে। তাড়া ছাড়া তো আমরা ভাড়া কমাতে পারব না।’
সেটি কীভাবে হবে- এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘ভাড়া কমানো বাড়ানোর তো একটা প্রসিডিওর আছে। এটা নিয়ে একটা মিটিং করতে হবে। ভাড়ার তালিকা করতে হবে। ভাড়া কমাতে আমাদের দ্বিমত নাই।’
বিআরটিএর চেয়ারম্যানের সঙ্গে কথা হয়েছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘না এ বিষয়ে এখনও কথা হয় নাই। আজকে তেলের দাম কমেছে, কালকে কথা হবে। তবে আমরা ভাড়া কমিয়ে দেব।’
বর্তমানে ঢাকা ও চট্টগ্রাম মহানগরে বাস ভাড়া কিলোমিটারপ্রতি আড়াই টাকা। আর দূরপাল্লায় ২ টাকা ২০ পয়সা।
দুই ক্ষেত্রেই নির্ধারিত হারের চেয়ে বেশি আদায়ের প্রমাণ মিললেও বিআরটিএ কোনো ব্যবস্থাই নেয়নি। চাপের মুখে বাসমালিকরা ওয়েবিল তুলে দিয়ে কিলোমিটার হিসাব করে ভাড়া আদায়ের ঘোষণা দিয়েও তা বাস্তবায়ন করেনি। ফলে যাত্রীদের ঠকানো থামছে না।
তবে দূরপাল্লায় ভাড়া বেশি আদায়ে দূরত্ব বাড়িয়ে দেখানোর অভিযোগ আছে। তবে সেখানে একটি বিভ্রান্তি তৈরি হয় অন্য কারণে। যে ভাড়া ঠিক করে দেয়া হয়েছে, সেটি ৫২ আসনের। যাত্রীর আরামের জন্য আসন কমালে আনুপাতিক হারে ভাড়াও বাড়বে।